
স্টাফ রিপোর্টার ॥
রাজাপুরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাজ করার অভিযোগ উঠেছে শাখাওয়াত হাওলাদার গংদের বিরুদ্ধে। সোমবার (২ই জুন) নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা জমিতে সারাদিন নতুন সুপারিশ গাছের চারা লাগাতে দেখা গেছে তাদের। শাখাওয়াত হাওলাদার ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের মেদুয়া গ্রামের মৌলভী সুলতান আহম্মদ হাওলাদারের ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সরকারের কাছ থেকে ৩৫ভোঃ/৬৭-৬৮ সূত্রে বন্ধোবস্ত মূলে ১৩৪ খতিয়ান মূলে ও ৪০৪নং দাগে ১ একার ৯৫ শতাং জমির মালিক হন আজিজুন নাহার। আজিজুন নাহার তার বড় মেয়ে জাহানারা বেগম শাহিনুরকে হেবা দলিল দিয়ে গত ১৮ই ডিসেম্বর ২০১৮ সালে নিঃশর্ত হন। বর্তমানে ওই জমিনের মালিক একই এলাকার আবু তাহের হাওলাদারের স্ত্রী জাহানারা বেগম শাহিনূর ভোগদখলে আছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ৪০৪ নং দাগে এসএ তিনটি খতিয়ান যথাক্রমে ৪৮, ১০১নং এ রেকর্ডিও মালিক হিসেবে ১ একর ৮৭ শতাংশ ও একই দাগে বাংলাদেশ সরকারের ১নং খতিয়ানে ১ একর ৯৫ শতাংশ অর্থাৎ মোট ৩ একর ৮২শতাংশ জমি তালিকাভুক্ত হয়। ওই দাগের ৪৮নং খতিয়ানের রেকর্ডিও মালিকগণের কাছ থেকে ক্রয়সূত্রে শাখাওয়াত গংরা ১ একর ২৪ শতাংশ জমির মালিক হয়ে ভোগদখল থেকে তিনটি জমাখারিজ খতিয়ান খুলে থাকেন।
যাহা ২৬৭ খতিয়াতে ৪০৪ দাগে ৪৭ শতাংশ, ২৬৮ খতিয়ানে ৪০৪ দাগে ৫৪ শতাংশ ও ২৬৯ খতিয়ানের ৪০৪ দাগে ৪৭ শতাংশ মোট ১ একর ৪৮ শতাংশ জমি খারিজ করে নেয়। উক্ত জমি বর্তমানে শাখাওয়াত গংরা বিক্রি করে নিঃশর্ত হন।
অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, উক্ত এসএ তিনটি খতিয়ানের মন্তব্য কলামে মেদুয়া মসজিদের নামে নোট দেখা যায়। কিন্তু ৪৮ ও ১০১নং খতিয়ানের রেকর্ডিও মালিকগণ ১ একর ৮৭ শতাংশ জমি ভোগদখল করে ৪০৪নং দাগের সমস্ত জমি বিক্রি করে ফেলেছেন। অথচ সরকারের ১নং খতিয়ানের বন্দোবস্তো দেওয়া ভোগদখলীয় জমি নিয়ে মসজদিনের নামে প্রচার করে শাখাওয়াত গংরা দখল চেষ্টা করে। গত ৫ই জুন ২০২২ সালে ভোলার সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে সরকারের বন্দোবস্তের বিরুদ্ধে শাখাওয়াত হাওলাদার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নাম্বার হচ্ছে ২৭২/২২। উক্ত মামলায় গত ২৫ শে মে ২০২৫ই তারিখে আদালত ওই জমিতে উভয় পক্ষের উপরে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। ওই নিষেধাজ্ঞার পর গত সোসবার (২ই জুন) সারাদিন ব্যপী সুপারি গাছের চারা লাগাতে দেখা গেছে। পরে বর্তমান ভোগদখলীয় মালিক আবু হাওলাদার ছেলে ইব্রাহীম জব্বার বিষয়টি ভোলা সদর থানায় অবহিত করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে শাখাওয়াত গংরা পালিয়ে যান। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ফেরার পর ফের কাজ করতে দেখা গেছে তাদের। এছাড়াও ওই জমিতে থাকা কলাগাছ ও রেইনট্রি গাছ কেটে ফেলারও অভিযোগ উঠেছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।
এবিষয়ে জানতে সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানান, এই জমিটি বহু বছর ধরে আবু হাওলাদার ভোগদখলে আছেন এবং তিনি এই জমির কিছু অংশ পানের বরজ মালিকদের কাছে নগদখাজনা দিয়ে বাৎসরিক টাকা নিতেন বাকী অংশ নিজেরাই চাষাবাদ করতেন। তবে মসজিদের নাম ব্যবহার করে নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় শাখাওয়াত গংরা জমি নিয়ে বিরোধ তৈরী করেছেন বলেও জানান স্থানীয় অনেকে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শাখাওয়াত হাওলাদার জানান, এসএ খতিয়ানে মসজিদের নামে উক্ত জমি নোটভুক্ত রয়েছে। অতএব মাসজিদের সভাপতি হিসেবে জমিগুলো উদ্ধারে কাজ করে থাকি। তবে নিজেদের নামে একই দাগের জমি মসজিদের নামে নোটভুক্ত থাকলেও কিভাবে আপনারা মালিক হয়ে বিক্রি করে দখল দিয়েছেন তা জানতে চাইলে তার সৎত্তোর দিতে পারেননি এছাড়াও আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা অবস্থায় কাজ করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষযটি এড়িয়ে যান।
বাংলাদেশ সময়: ১:০৭:১৭ ২১৮ বার পঠিত