
স্টাফ রিপোর্টার ॥
ভোলার গণমানুষের নেতা প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ, জাতীয় সংসদের সাবেক সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মোশারেফ হোসেন শাজাহান-এর ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে পালিত হয়েছে। জেলা বিএনপির আয়োজনে সোমবার (৫ মে) সকাল ১১টায় মরহুম মোশারেফ হোসেন শাজাহান মিয়ার বাসভবন চত্বরে এক স্মরণসভা ও দোয় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা বিএনপির আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য আলহাজ্ব গোলাম নবী আলমগীর সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় মরহুম মোশারেফ হোসেন শাজাহানের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন, সদস্য সচিব রাইসুল আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম খান, জেলা বিজেপির সভাপতি আমিরুল ইসলাম রতন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক হারুন অর রশীদ ট্রুম্যান, মফিজুল ইসলাম মিলন, এনামুল হক, পিযুস কান্তি হালদার, ভোলা জেলা ইসলামি আন্দোলনের (উত্তর) সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোঃ তরিকুল ইসলাম, থানা বিএনপির আহবায়ক আসিফ আলতাফ, তজুমদ্দিন উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মাকসুদুর রহমান, পৌর বিএনপির সভাপতি আবদুর রব আকন, চরফ্যাশন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন, লালমোহন উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব বাবুল পঞ্চায়েত, বোরহানউদ্দিন উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট কাজী আজম, জেলা যুবদলের সভাপতি জামাল উদ্দিন লিটন, জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি শহীদ আলম মানিক, জেলা কৃষক দলের সভাপতি আবদুর রহমান সেন্টু, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ স¤পাদক আল-আমীন হাওলাদার প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক হুমায়ুন কবির সোপান।
স্মরণসভায় বক্তারা বলেন, মোশারেফ হোসেন শাজাহান ছিলেন একজন ত্যাগী, নির্লোভ ও দূরদর্শী রাজনীতিবিদ ভোলার মানুষের একজন প্রকৃত বন্ধু। তিনি শুধু দলের নয়, সাধারণ মানুষের জন্যও নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন।
তিনি সারাজীবন সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। তাঁরা মরহুমের জীবন ও রাজনৈতিক আদর্শ নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান। এছাড়াও বক্তারা তাঁর আদর্শ ও কর্মকান্ড থেকে শিক্ষা নিয়ে ভোলাকে এগিয়ে নিতে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
স্মরণ সভা শেষে মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ দোয়ার আয়োজনও করা হয়। অনুষ্ঠানে দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন ভোলা দারুল হাদিস কামিল মাদরাসার প্রধান ফকীহ মুফতি মো. আহমদ উল্লাহ।
এ সময় জেলা বিএপির যুগ্ম আহবায়ক ইয়ারুল আলম লিটন, জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মোতাসিন বিল্লাহ, থানা বিএনপির সদস্য সচিব হেলাল উদ্দিন, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের সেলিম (ভিপি), জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আল-আমীন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মিজানুর রহমান মাসুদ, সদস্য সচিব মুনতাসীর আলম রবিন চৌধুরীসহ ভোলা জেলা ও উপজেলা বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্নস্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, মরহুম মোশারেফ হোসেন শাজাহান ছিলেন বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী। তিনি ভোলা থেকে মোট ৬ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকারের পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী, ২০০১ সালে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। মোশারেফ হোসেন শাজাহান ১৯৩৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ভোলার ঐতিহ্যবাহী মিয়াঁ পরিবারের আলতাজের রহমান তালুকদার ও মাসুমা খাতুনের ঘরে জন্মগ্রহন করেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন সকলের বড়। প্রথম জীবনে তিনি নাটক, আবৃতিসহ সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন। ১৯৬৫ সালে মাত্র ২৬ বছর বয়সে সর্বপ্রথম সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (এমপিএ) নির্বাচিত হয়ে সম্পৃক্ত হন রাজনীতির সাথে। ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমানের দল প্রতিষ্ঠার পর পরই মোশারফ হোসেন শাজাহান বিএনপিতে যোগ দেন। ১৯৭৯ সালে তিনি বিএনপি থেকে এমপি নির্বাচিত হন। জিয়াউর রহমান তাঁকে উপমন্ত্রীর মর্যাদায় বৃহত্তর বরিশালের জেলা উন্নয়ন সমন্বয়কারী মনোনীত করেন। ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়ার প্রথম মন্ত্রিসভায় তাকে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী করা হয় এবং ২০০১ সালে খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় মন্ত্রিসভায় তিনি ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন। তিনি ছিলেন একজন সফল ব্যবসায়ী। রাজনীতির ক্ষেত্রেও তিনি ছিলন সফল। বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী মোশারফ হোসেন শাজাহান ফুসফুস ও শ্বাসকষ্টসহ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ২০১২ সালের ০৫ মে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। তিনি স্ত্রী, তিন মেয়ে, এক ছেলে, ২ ভাইসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২:৩২:২৪ ১৪৫ বার পঠিত