লালমোহন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রোগী বাড়ছে, সেবায় ঘাটতি

প্রচ্ছদ » জেলা » লালমোহন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রোগী বাড়ছে, সেবায় ঘাটতি
বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫



---

বিশেষ প্রতিনিধি ॥

রোগী আছে; কিন্তু প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও নার্স নেই। অপারেশন থিয়েটার (ওটি) আছে, অবেদনবিদ ও শল্যচিকিৎসক নেই। চিকিৎসাসেবায় এই নেই আর নেই ভোলার লালমোহন উপজেলায়। ২ লাখ ৮৩ হাজার ৮৮১ জনসংখ্যার এই উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন অসংখ্য রোগী এলেও চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসাসেবা পান না। ফিরে যেতে হয় অনেককে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নামেই ৫০ শয্যা হাসপাতাল। চিকিৎসক, নার্সসহ প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবেই মূলত রোগীরা চিকিৎসাসেবা পায় না। নাজুক অব্যবস্থাপনায় চলছে এর কার্যক্রম। কনসালট্যান্ট ও মেডিকেল অফিসারসহ চিকিৎসকের ৩০ পদের মধ্যে আটজন এবং নার্স ও মিডওয়াইফের ৩৬টি পদের মধ্যে ১৯ জন কর্মরত আছেন। তৃতীয় শ্রেণির ১১৫ পদ থাকলেও ৫০টি শূন্য। লোকবলের অভাবে অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার, এক্স-রে, ই-সিজি এবং আল্ট্রাসোনোগ্রামের সেবাও বন্ধ রয়েছে। এ কারণে বেসরকারি ক্লিনিক বা হাসপাতালে সেবা নিতে গিয়ে রোগীদের অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হচ্ছে। এতে সমস্যায় পড়ছেন দরিদ্র রোগীরা। তাদের চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে।

সংকটের মধ্যেও গত বছর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৫ হাজার ৪৫৩ জন। এর মধ্যে জরুরি বিভাগে ২১ হাজার ৪৪৮ জন এবং বহির্বিভাগে ৯৮ হাজার ৩৯৫ জন সেবা নিয়েছেন। ওই বছর ১ হাজার ৮৮ জন প্রসূতির স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা জানান, হাসপাতালে রোগীর চাপ বেশি, চিকিৎসক কম। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। অনেকেই সেবা না পেয়ে ফিরে যান। ভাগ্যে চিকিৎসকের নাগাল পাওয়া গেলেও তারা তড়িঘড়ি রোগী দেখেন। ভর্তি রোগীরাও জরুরি প্রয়োজনে চিকিৎসক পাচ্ছেন না। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব সংকট দূর করে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম স্বাভাবিক করার আবেদন জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।

নার্সিং সুপারভাইজার দীপালি রানী দে জানান, নার্স ও মিডওয়াইফ সংকটের কারণে রোগীদের যথাযথ সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবুও আমরা সাধ্যের মধ্যে রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।

মেডিকেল অফিসার ডা. মো. ইউসুফ হোসেন বলেন, এখানে ইমার্জেন্সি, আউটডোর এবং ইনডোর-এ তিন স্তরে রোগীর সেবা দেওয়া হয়। চিকিৎসক সংকটে রোগীরা প্রাপ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমরা সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানানো হয়েছে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মো. তৈয়বুর রহমান জানান, নানা সংকটের মধ্যেই হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিষ্ঠার সঙ্গে সেবা দিচ্ছেন। এ কারণে স্থানীয়দের আস্থা অর্জন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। শত শত রোগী সেবা নিতে ছুটে আসছেন। দিন দিন রোগীর চাপ বাড়ছে। অনেক সেবাই নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। সংকটের বিষয়টি নিয়মিত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ০:৫৫:২৭   ১৪১ বার পঠিত  







পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

জেলা’র আরও খবর


যেভাবে মনপুরার ৫০ টাকার ডাব ঢাকায় এসে হয় ১৫০ টাকা
ভোলায় ঝড়োবৃষ্টি ও বজ্রপাতে ফসলের ক্ষতি
ভোলায় ৪৬তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উদ্বোধন
শর্তারোপ প্রত্যাহারের দাবিতে সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও শিক্ষাবিদ ড. আজম ওবায়দুল্লাহর দাফন সম্পন্ন
বিচ্ছিন্ন দ্বীপ জেলায় আশার আলো দেখাচ্ছে ভোলা-বরিশাল সেতু
মনপুরায় বেড়েছে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা
মনপুরাবাসী ২১ ঘণ্টা থাকেন অন্ধকারে
লালমোহনে চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ অপসারণের দাবীতে মানববন্ধন
ভোলা-চরফ্যাশন রুটে কমলো বাস ভাড়া



আর্কাইভ