বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে কৃষকের চোখ ভরা স্বপ্ন

প্রচ্ছদ » অর্থনীতি » বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে কৃষকের চোখ ভরা স্বপ্ন
শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫



---

বিশেষ প্রতিনিধি ॥

ভোলার লালমোহন উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে ফুটছে সূর্যমুখী ফুল। এই সূর্যমুখীকে ঘিরে দু’চোখ ভরা স্বপ্ন চাষিদের। কম খরচে অধিক লাভবান হওয়ায় দিন দিন এই উপজেলার চাষিরা সূর্যমুখী চাষে তুমুল আগ্রহী হচ্ছেন। আবহাওয়াজনিত কারণে এই অঞ্চলে সূর্যমুখীর আবাদ কিছুটা দেরিতে শুরু হয়েছে। তবুও এরইমধ্যে চাষিদের ক্ষেতে ফুটতে শুরু করেছে সূর্যমুখী।

লালমোহন উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এই উপজেলায় গত বছরের চেয়েও চলতি বছর বেড়েছে সূর্যমুখীর আবাদ। গত বছর উপজেলায় ১৭৫ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ হলেও এ বছর ২০৫ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ হয়েছে। চলতি বছর এই উপজেলায় কাবেরী, হাইসান-৩৩, আরডিএস-২৭৫ এবং বারি সূর্যমুখী-২সহ বেশ কয়েকটি জাতের সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে। কৃষকদের আবাদকৃত জমিতে বিগত ১০ দিন ধরে ফোটা ফুলগুলো আগামী ৩৫ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে পরিপক্ব হবে। এরপর চাষিরা ক্ষেত থেকে তা সংগ্রহ শুরু করবেন। ইউনিয়নের দিক থেকে চলতি মৌসুমে সবচেয়ে বেশি সূর্যমুখীর আবাদ হয়েছে লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নে। এসব চাষিদের সূর্যমুখী চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে বীজ এবং সারসহ নানা ধরনের প্রয়োজনীয় উপকরণ দেওয়া হয়েছে।

উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের সৈনিক বাজার এলাকায় এ বছর প্রথমবারের মতো ৫০ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করেছেন আব্দুর রহিম নামে এক কৃষক। তিনি জানান, কৃষি অফিসের পরামর্শে এবং বীজ-সার প্রণোদনা পেয়ে এ বছরই সূর্যমুখীর চাষ করেছি। জমি চাষাবাদ, কীটনাশক এবং শ্রমিকসহ বিভিন্ন খরচ বাদে ক্ষেত থেকে ফসল সংগ্রহ করা পর্যন্ত ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকার মতো ব্যয় হবে। তবে ক্ষেত থেকে অন্তত ৩০ হাজার টাকার ফসল বিক্রির আশা করছি।

একই ইউনিয়নের পাঙাশিয়া এলাকার মো. হারুন নামে আরেক কৃষক বিগত কয়েক বছরের ন্যায় এবারও সূর্যমুখীর আবাদ করেছেন। গত বছর তিনি কেবল ১৬ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করে ভালো ফলন পাওয়ায় এ বছর বাড়িয়েছেন জমির পরিমাণ। চলতি মৌসুমে এবার কৃষক হারুন ৭২ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করেছেন। তার আশা, আবহাওয়া ঠিক থাকলে এবারও তিনি আশানূরূপ ফলন পাবেন। মৌসুম শেষে অন্তত অর্ধলাখ টাকার ফলন সংগ্রহ করতে পারবেন বলে আশা এই চাষির।

লালমোহন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আবু হাসনাইন বলেন, এক সময় এই উপজেলায় সূর্যমুখীর আবাদ অনেক কম হতো। তবে গত কয়েক বছর ধরে কৃষি অধিদপ্তরের নানামুখী পদক্ষেপের কারণে এবং তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা সূর্যমুখী চাষের দিকে ব্যাপকভাবে আগ্রহী হয়েছেন। আমাদের কর্মকর্তারা নিয়মিত মাঠ পর্যায়ে গিয়ে সূর্যমুখী চাষি কৃষকদের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন। আবহাওয়া ভালো থাকলে চাষিরা এ বছরও কাংখিত ফলন পাওয়ার পাশাপাশি তাদের ফসলের ন্যায্য মূল্য পেয়ে অধিক লাভবান হবেন বলে আশা করছি।

তিনি আরো বলেন, সূর্যমুখী তেলের পুষ্টিগুণ যেমন বেশি তেমনি অন্যান্য তেলের তুলনায় এটি অধিক স্বাস্থ্যসম্মত। অধিক হারে সূর্যমুখীর চাষ বৃদ্ধি করা গেলে পুষ্টি চাহিদা অনেকাংশে পূরণ হবে এবং ভোজ্য তেলের জন্য বিদেশ নির্ভরতা কমে যাবে। তাই আগামীতে নতুন করে যারা সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী হবে সেসব চাষিদেরও প্রয়োজনীয় উপকরণ ও পরামর্শ দিয়ে সব সময় পাশে থাকবে লালমোহন উপজেলা কৃষি অফিস।

বাংলাদেশ সময়: ১০:৫০:৫৬   ৯৯ বার পঠিত  







পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

অর্থনীতি’র আরও খবর


ভোলায় গ্যাসভর্তি আরও তিনটি গাড়ি আটকে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ, উত্তেজনা
মুগ ডাল চাষে সফলতার মুখ দেখলেন ছাদেক মিয়া
ভোলায় কৃষকদের মাঝে নববর্ষের উপহার হিসাবে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরন
ভোলায় জীবন দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণের উদ্বোধন
লালমোহনে সয়াবিন চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা
চরফ্যাশনের ১২ হাজার কৃষক পেলে বিনামূল্যে বীজ ও সার
ভোলার বাজারে শেষ সময়ে কেনাকাটার ধুম, দেশি পণ্যের চাহিদা বেশি
কৃষকের তরমুজের দাম নির্ধারণ করেন পাইকারি আড়তদার
ভোলায় বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সম্মানে জিজেইউএস’র দোয়া ও ইফতার মাহফিল
ভোলায় এক্সিম ব্যাংকের উদ্যোগে আর্থিক সাক্ষরতা সপ্তাহ উদযাপন



আর্কাইভ