লালমোহন মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে চিকিৎসক সংকট

প্রচ্ছদ » জেলা » লালমোহন মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে চিকিৎসক সংকট
রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫



---

বিশেষ প্রতিনিধি ॥

ভোলার লালমোহন উপজেলার অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা সেবার স্থান ‘মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র’। তবে এখানে চিকিৎসক ও অ্যানেসথেসিস্ট না থাকায় প্রাপ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। এই মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটিতে একজন মেডিকেল অফিসারের পদ থাকলেও তা শূন্য গত ৯ মাসেরও অধিক সময় ধরে।

এছাড়া অ্যানেসথেসিস্ট না থাকায় সিজারিয়ানের মতো গুরুত্বপূর্ণ সেবা বন্ধ ১০ বছরেরও বেশি সময়। যার জন্য অকেজো হয়ে পড়ে আছে অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটারটি। বর্তমানে ৩ জন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা (এফডব্লিউভি) এবং ২ জন দাই নার্সের ওপর ভরসা করেই চলছে এই মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের সেবা। তারা সাধ্যের মধ্যে রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

লালমোহন মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে সেবার জন্য যাওয়া রোগীর স্বজন মো. ইব্রাহিম জানান, প্রসূতি মায়েদের সন্তান প্রসবের জন্য এই মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি অনেক আগ থেকেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষের কাছে সুপরিচিত। আমার অনেক নারী আত্মীয়-স্বজনদেরও এখানে প্রসব হয়েছে। তবে এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে দীর্ঘদিন ধরে কোনো চিকিৎসক নেই। এ জন্য দায়িত্বরত এফডব্লিউভি ও নার্সরা প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র লিখে দেন। তারা নিজেদের স্থান থেকে সেবা নিশ্চিতের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। সত্যি বলতে চিকিৎসক না থাকায় প্রাপ্যসেবা পাওয়া যাচ্ছে না। তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে চিকিৎসক পদায়ণের দাবি জানাচ্ছি।

উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. শরিফ বলেন, আমার স্ত্রীর প্রসব বেদনা ওঠার পর তাকে নিয়ে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে যাই। তবে সেখানে যাওয়ার পর জানানো হয় আমার স্ত্রীকে সিজার করাতে হবে। যার জন্য তাকে ভোলায় রেফার্ড করা হয়। অথচ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটিতেই সিজারের জন্য একটি অপারেশন থিয়েটার রয়েছে। তবে সেখানে লোকবল না থাকায় বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে ওই অপারেশন থিয়েটারটি নাকি বন্ধ রয়েছে। এই অপারেশন থিয়েটারটি চালু থাকলে আমার মতো অনেক সেবাপ্রত্যাশী ও তাদের স্বজনদের দুর্ভোগে পড়তে হতো না। তাই আমি দাবি করছি অতিদ্রুত যেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখানে লোকবল পদায়ণ করে অপারেশন থিয়েটারটি চালুর উদ্যোগ নেন।

লালমোহন মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা (এফডব্লিউভি) এবং ইনচার্জ মিরা রাণী দাস জানান, এখানে চিকিৎসক নেই। যার জন্য কর্তব্যরত অন্যান্য এফডব্লিউভি এবং দাই নার্সরা মিলে রোগীদের যথাসাধ্য সেবা দেওয়ার চেষ্টা করি। এছাড়া একজন অ্যানেসথেসিস্টের কারণে ১০ বছরেরও অধিক সময় ধরে অপারেশন থিয়েটারটি বন্ধ রয়েছে। তাই জরুরি প্রয়োজনে এখানে কোনো প্রসূতি মায়েদের সিজার করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আমাদের সবার প্রচেষ্টায় এই মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটিতে প্রতিমাসে দেড়শতাধিক স্বাভাবিক প্রসব হয়। মায়েদের সন্তান প্রসবের পর আমাদের যতটুকু সামর্থ্য রয়েছে তার ভেতর থেকে মা ও নবজাতককে সেবা দেই। তবে কখনো মা বা নবজাতকের অবস্থা খারাপ হলে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা ভোলা সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। তবে একজন চিকিৎসক এবং অ্যানেসথেসিস্ট থাকলে আরো ভালো সেবা প্রদানের পাশাপাশি এই মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটিতেই সিজার করা যেতো।

ভোলা জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে জেলার অনেকগুলো কেন্দ্রেই লোকবলের সংকট রয়েছে। এই সংকট দূর করতে এরইমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে কয়েকবার চিঠি পাঠিয়েছি। কর্তৃপক্ষ লোকবল পদায়ণের উদ্যোগ নিলেই মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রগুলোর সংকট কেটে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:৩৮:২৩   ১১২ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

জেলা’র আরও খবর


লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ॥ সেল কাউন্টারের অভাবে চরম দুর্ভোগ
মনপুরায় বিএনপি, জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের ত্রিমুখী সংঘর্ষে আহত-১৫
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চালসহ জনতার হাতে ৩ জন আটক
ভোলায় মসজিদ ভিত্তিক গণশিক্ষা কার্যক্রম আউটসোসিং বাতিল করে রাজস্বকরণের দাবিতে শিক্ষকদের বিক্ষোভ
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (কামরুজ্জামান) ভোলা সদর উপজেলার ইফতার মাহফিল
ভোলায় বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সম্মানে জিজেইউএস’র দোয়া ও ইফতার মাহফিল
চরফ্যাশনে বাল্কহেডের ধাক্কায় মাছ ধরা নৌকা ডুবি, নিখোঁজ ১
ভোলায় মানবতার দুয়ারে ইফতার সামগ্রী বিতরণ
ভোলায় তরমুজের বাম্পার ফলনে ব্যাপক লাভের আশা কৃষকের
ভোলার সাংবাদিকদের সম্মানে নিজাম হাসিনা ফাউন্ডেশনের ইফতার মাহফিল



আর্কাইভ