
আল আমিন ॥
ভোলা সদরের নদীর নিকটবর্তী শিবপুর ইউনিয়নে প্রতিবছর নদীভাঙনে প্রচুর ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ধ্বংস হয়। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় অনেক জমি।জমির পরিমাণ কমে যায় এবং সর্বস্ব হারিয়ে পথে নামতে বাধ্য হয় নদীতীরবর্তী মানুষ। করুন দুরবস্থা পোহাতে হয় শিবপুরের নদীর তীরবর্তী মানুষদের। এখানকার অধিকাংশ মানুষ বারবার নদী ভাঙ্গা পরিবার, সয়সম্বল হাড়িয়ে সবাই এখন দিশেহারা।
সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় শিবপুর ইউনিয়নের নদীর পাড়ে নদী ভাঙন এলাকায় প্রায় সহস্রাধিক স্থানীয় এলাকাবসি ব্যানারে মানববন্ধন করেন। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এখানকার মানুষের অনেকের বাড়ি ঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। তারা অন্যত্র বাড়ি ঘর সরিয়ে নিয়ে রাস্তার পাশে কোনো রকমে বসবাস ও রান্না করতে দেখা যায়। শিবপুর গ্রামের অনেকেই বাড়ি ঘর বিলীন হওয়ার পর খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছে। আবার কেউ অন্য স্থানে ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস করছে। নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধের মাধেমে ভাঙন রোধ করে এলাকার অসহায় মানুষের বসত ভিটা, মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান, সরকারি স্কুলসহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রক্ষা করার দাবি করেন এলাকাবাসী।

মানববন্ধনে এলাকাবাসীর পক্ষে বক্তব্য রাখেন,শিবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এ কে এম নুর হাওলাদার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ শিবপুর ইউনিয়ন জয়েন্ট সেক্রেটারি আবু জাফর, মানববন্ধন বাস্তবায়নের অন্যতম সদস্য মো.আল আমিন, মো. সেলিম, মো. ইব্রাহিম, মো. যুবরাজসহ আরও অনেকে।
এলাকার গ্রামবাসী নদী ভাঙন মানুষেরা খুব বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে জীবন যাপন করছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি পরিবারের বাড়ি ঘর ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে যে কারণে শত শত পরিবারের বসত ভিটে বাড়ি নদীর সাথে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
এলাকার মানুষ দুশ্চিন্তা ও হতাশায় মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছে। ইতিমধ্যে শিবপুর এলাকায় কয়েকশত পরিবারের বসতভিটা নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বলে জানান এলাকাবাসী।
শিবপুর এলাকার জাহানারা বেগম বলেন, নদী তীব্র স্রোতের কারণে ভেঙ্গে গেছে তার বসত ভিটার ঘর। এখন ত্রিপল দিয়ে আকাশে নিচে বসবাস করতে হয়। অনেক কষ্টে দিন কাটাতে হয়, আমার মতো যে আর কারও বসত ভিটা বিলীন না হয়।
আবদুস সোবহান বলেন, নদী ভাঙ্গনের মুখে, ভয়ে রাতে ঘুমাতে পাড়ি না, প্রতিনিয়ত ভাঙ্গনের আতংকে দিন রাত কাটাতে হয়।
ভাঙ্গনের শিকার আরেক এলাকার বাপ্পি সিকদার বলেন, গত দুই বছর যাবৎ বর্ষাকাল এলেই আতংকে কাটে আমাদের দিন রাত।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, ইউনিয়ন বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হাদিস, মো. কামাল মেম্বার, আবদুল হক রাঢ়ী, যুবদল নেতা আবু জাফর পন্ডিত, মো. ফিরোজ পন্ডিত, মো. জিন্নাহসহ প্রমূখ।
এই নদী এলাকায় মানুষ অধিকাংশই দিন মুজুর, কৃষিজীবি খেটে খাওয়া মানুষ। ইতিমধ্যে নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়েছেন স্থানীয় কয়েক হাজার মানুষ। এলাকাবাসীর দাবি এখানে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে ভাঙ্গন রোধ করা, এ বিষয়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।
ভোলা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী মোঃ জিয়া উদ্দীন আরিফ বলেন, ইতিমধ্যে শিবপুর ইউনিয়ন সহ আরও পাচটি কাজের টেন্ডারকাজ সম্পন্ন হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০:৩৩:২১ ৯২ বার পঠিত