
স্টাফ রিপোর্টার ॥
ভোলায় চাহিদা অনুযায়ী টাকা না দেওয়ায় ন্যাশনাল ব্যাংকের কর্মকর্তাদের উপর সংঘবদ্ধ হামলার চালিয়েছে গ্রাহকরা। এতে আহত হয়েছেন, ন্যাশনাল ব্যাংকের ভোলা শাখারে ম্যানেজার জামাল হোসেনসহ ৩ কর্মকর্তা। বুধবার সকালে ন্যাশনাল ব্যাংক ভোলা শাখায় এই ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ব্যাংকে গিয়ে একাউন্ট থেকে নিজেদের ফিক্সড ডিপোজিটের চাহিদা মতো টাকা তুলতে গেলে ব্যাংকের কর্মকর্তারা টাকা না দিয়ে সার্ভার জটিলতার কথা বলে রবিবার টাকা নেওয়ার জন্য বলেন। বিয়টি ক্ষুব্ধ হয়ে ন্যাশনাল ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাকবিত-া শুরু করেন গ্রাহকরা।
এ সময় গ্রাহক অমি চৌধুরী ও তার পরিবার সদস্যার মিলে ব্যাংকের মধ্যেই চড়াও হয়ে ব্যাংক ম্যানেজার জামাল হোসেন, ও আবুল কালাম আজাদের উপর মারধর করে। এক পর্যায়ে ব্যাংকের ভোল্ট ভেঙ্গে তাদের টাকা আনতে ছুটে গেলে ব্যাংকের অন্য গ্রাহকদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পরে।
ঘটনার আকস্মিকতায় প্রথমে হতবাক হলেও পরে উপস্থিত অন্য গ্রাহকেরা এগিয়ে আসেন এই মারামারি থামাতে। কিন্তু মারপিট থামা তো দূর, বরং কথা কাটাকাটিতে আরও বেড়ে চলে ঝামেলা। অবশেষে ব্যাংকের বাকি কর্মীদের সাহায্যে হাতাহাতি থামানো হয়।

ব্যাংকের ম্যানেজার জামাল হোসেন জানান, সকাল থেকেই ব্যাংকের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলছিলো। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অমি চৌধুরি নামের এক গ্রাহক ও তার স্ত্রীসহ ১০ লাখ টাকার চেক নিয়ে ব্যাংকে আসেন। কিন্তু সার্ভার জটিলতার কারনে ঝামেলা হওয়ায় টাকা দিতে দেরি হওয়ায় তারা আমাদের উপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে তাদের দলবল এসে সংঙ্গবদ্ধ ভাবে হামলা চালায় এবং ব্যাংকের বল্ট ভেঙ্গে টাকা নিতে ভাংচুর করে। এ সময় আমি ও আমার স্টাফদের উপর হামলা করলে ৩জন আহত হয়েছে। পরে পুলিশ এসে তাদের দুই জনে আটক করেন।
তবে অভিযুক্ত অমি চৌধুরীর স্ত্রী সামিয়া চৌধুরী বলেন, ন্যাশনাল ব্যাংক ভোলা শাখায় আমার বেশ কিছু টাকা রয়েছে দিঘ্যদিন ধরে। সম্প্রতি আমার ইসলামি ব্যাংকে কয়েক কোটি টাকা লোন থাকায় সেখানে কিস্তির টাকা পরিশোধের জন্য এখানে থাকা ১০ লাখ টাকা নিতে ৩ থেকে ৪ দিন আগে আসি। কিন্তু ব্যাংক কর্মকর্তারা নানা অজুহাতে আমাদের ফিরিয়ে দেয় এবং একটি প্রে ওয়ার্ডার দেন যা আমি দুটি ব্যাংকে সাবমিট করলেও টাকা পাইনি। বিষয়টি ব্যাংক ম্যানেজারের কাছে জানালে তিনি আজ আসতে বলেন টাকা নেওয়ার জন্য। কিন্তু আজ সকলে আমরা ব্যাংকে আসলে তিনি টাকা দিতে পারেনি এবং রবিবার আসতে বলে। একদিকে ইসলামি ব্যাংকের লোনের টাকা পরিশোধের চাপ অন্যদিকে এই ব্যাংকএর হয়রানিতে আমার স্বামী রাগ হয়ে কথা কাটাকাটি করেন। ব্যাংক কর্মকর্তারা বিষয়টি অন্যদিকে নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা আমাদের কষ্টের জমানো টাকা নিতে আসছি। এই টাকা দিতে কিসের এতো বাধা?
এদিকে ভোলা সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু শাহাদাত মো. হাচনাইন পারভেজ জানান, এই ঘটনায় ভোলা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। এরই মধ্যে ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
বাংলাদেশ সময়: ২:০৮:২৩ ১২৮ বার পঠিত