শফিউল্লাহ শফি, চরফ্যাশন ॥
সবজিতে ভরা ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার কৃষকের মাঠ। কৃষক প্রতি কেজি সিম বিক্রি করছে ১৮টাকা, হাত ঘুরিয়ে ওই সিম বিক্রি হচ্ছে ৩৫/৪০টাকা। ১৮টাকা প্রতি কেজি সিম বিক্রি করেও মহাখুশি আসলামপুর ইউনিয়নের কৃষক ইউসুফ। সোমবার কৃষকের ফসলের মাঠ গিয়ে এমন তথ্য সংগ্রহ করেছেন আমাদের চরফ্যাশন প্রতিনিধি শফিউল্লাহ শফি। কৃষক ইউসুফের সবজির খামারের ছবি তুলতে সংবাদকর্মীদের উপর ক্ষেপে যান। না জানিয়ে ছবি তুলে একটু ভয় পেয়ে খেলাম। ভাবলাম ছবি তুলে ছড়ালে ফসল নষ্ট হয়ে যাবে, গ্রাম্য একটা ভাষা আছে (মুখ লাগবে, নজর লাগবে)। আমরা ক্যামেরা ছাড়াই তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করি। তিনি রেগে ক্ষেপে বলে উঠলেন, আমার সবজির বাগান মেন সড়কের সাথে থাকা বহু দপ্তরের লোকজন ছবি তুলে আমার মোবাইল নাম্বার নিয়ে আশ্বাস দিয়ে যায় আপনী সকল সুযোগ-সুবিধা পাবেন কিন্তু কাজে কাজ কিছুই এই পর্যন্ত পাইনি। এই ব্লোকের কৃষি কর্মকর্তা কে তাও জানি না। আমরাও আশ্বাস দিলাম আপনি কৃষির বিভিন্ন উপকরণ পাবেন। এবার মন খুলে বলেন, মাটি থেকে ফসল ফলানো বহু কষ্ট। আমি প্রায় ২একর জমিতে সিম, লাউ ও টমেটো চাষ করেছি। রৌদ্রে পুড়ে বৃষ্টি ভিজে শ্রমিক প্রতি দিতে হচ্ছে ৭/৮ শ’ টাকা। কিন্তু আমরা কোন সুযোগ-সুবিধা পাই না।
কৃষক ইউসুফ আরো বলেন, এক থেকে দেড় মাস আগে সিম পাইকারি দিয়েছি ৫০/৬০টাকা, এখন পাইকারি বিক্রি করছি ১৮/২০টাকা। এভাবে বিক্রি থাকলেও শ্রমিকের টাকা দিয়ে প্রায় দিগুন লাভ হবে।
কৃষক জসিম উদ্দিন জানান, সিম তুলতে এসেছি। সকাল ৭টায় থেকে সন্ধ্যা ৬টায় পর্যন্ত সিম তুলি। দু’বেলা খাবার খাওয়ায়ে ৫শ’ টাকা দেয় খামারি।
এছাড়াও পাইকারী বাজারে কদু’র (লাউ) ছোট থেকে বড় সাইজের প্রতি পিজ গড়ে ৭টাকা করে টাকা বিক্রি হলেও এই জেলার চাহিদা মিঠিয়ে ঢাকা রপ্তানি করা হচ্ছে। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৩০/৩৫টাকা,মূলার হালি বিক্রি হচ্ছে ২/৩টাকা,ধনিয়ার কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০/২৫টাকা। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৫০/৬০টাকা।
চরফ্যাশন কাঁচা বাজার আড়ৎদারেরা জানান, আমরা সরাসরি কৃষকের কাছে ১৮ টাকা কেজি ক্রয় করলে আমরা খুচরা কাচামাল ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করি ২০টাকা করে, তারা কত টাকা বিক্রি করে সেটা আমাদের জানার বিষয় নয়।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেছেন, আমরা ২/১কেজি করে কাস্টমারের কাছে বিক্রি করতে করতে বহু কেজি সবজি পচে যায়, তাই আমরা একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
চরফ্যাশন উপজেলা কৃষি অফিসার রোকনুজ্জামান জানান, প্রায় ৭হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষাবাদ হয়েছে।কৃষকের খেতে পর্যাপ্ত সবজি উৎপাদন হচ্ছে। জেলার চাহিদা মিঠিয়ে চরফ্যাশন উপজেলা সবজি ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা বিভাগে রপ্তানি হচ্ছে। কমদামে বিক্রি হলে এভার কৃষকের লোকসানের মুখে পড়তে হবে না বরং দিগুন লাভ হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৫০:১৫ ৮৮ বার পঠিত