ভোলায় চলতি বছর পানিতে ডুবে ৪০ শিশুর মৃত্যু

প্রচ্ছদ » জেলা » ভোলায় চলতি বছর পানিতে ডুবে ৪০ শিশুর মৃত্যু
রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪



---

মোঃ বেল্লাল নাফিজ ॥

ভোলায় পানিতে ডুবে গত জানুয়ারি থেকে ৩০শে নভেম্বর পযর্ন্ত ৪০ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। অভিভাবকদের সচেতনতার অভাব এবং অসাবধানতার কারণেই এমনটি ঘটেছে বলে মনে করেন চিকিৎসকরা। ভোলা স্বাস্থ্য বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করছেন।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শিশুদের পানিতে পড়া ও মৃত্যুর হার দিন দিন বাড়ছে। এক বছরে পানিতে পড়ার এ ৪০ সংখ্যাটি উদ্বেগজনক বলছেন চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এর মধ্যে ভোলা সদর উপজেলায় ৩ই জুলাই (বুধবার) পানিতে ডুবে মারা যাওয়া দুই বোনের মৃত্যুতে পুরো এলাকা জুড়ে বয়ে গেছে শোকের মাতম। নিহতরা হলেন, বাঘমারা গ্রামের শফিক মাতব্বরের মেয়ে হালিমা (৮) ও হাবিবা (৫)। শফিক মাতব্বর দুই সন্তান হারিয়ে নিঃসন্তান হয়ে তার স্ত্রীসহ মনোবল ভেঙে কোনভাবে জীবনযাপন করছেন।

এছাড়াও গত ২৮শে অক্টোবর ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার সোনারপুর ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ড ধনু হাওলাদার বাড়ীতে পুকুরে ডুবে দুই বোনের মৃত্যুতে জেলা জুড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোকবার্তাসহ ও সকলের হৃদয় নেড়েছে।

পানিতে পরে শিশু নিহতদের মধ্যে ১ থেকে ৫ বছর বয়সের বেশি। ভোলা সদর উপজেলাসহ জেলার মোট ৭টি উপজেলায় ৪০ শিশুর মৃত্যুর খবর বেশ উদ্বেগজনক। এসকল শিশু এক-চতুর্থাংশ বর্ষার তিন মাসেই মৃত্যু হয়েছে। এসময় বর্ষার পানি ঘরের চারিপাশে ও বাড়ির পুকুর পানিতে টইটম্বুর ভরা থাকায় চোখের পলকেই শিশুরা পানিতে ঝাপ দেয়। এসকল শিশু মৃত্যুর রোধে অভিবাবকদের সচেতনতার বিকল্প নেই।

সুজনের (সুশাসনের জন্য নাগরিক) ভোলা জেলা সভাপতি মোবাশ্বের উল্লাহ চৌধুরী বলেন, পানিতে পড়ে মৃত্যুকে নীরব দুর্যোগ বলা যায়। অভিভাবকদের দায়িত্বশীল ভূমিকা ও সচেতনতাই এ থেকে মুক্তির একমাত্র উপায়। অভিভাবকদের সচেতনতা ও সতর্কতার অভাবেই ফুটফুটে শিশুগুলোর করুণ মৃত্যু হচ্ছে। এ ধরনের মৃত্যু বেদনাদায়ক। সম্মিলিতভাবে সচেতনতা বাড়ানো গেলে এ অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যুর হার কমানো সম্ভব।

বাল্যবিয়ে ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি, দুদকের পিপি এ্যাড. সাহাদাত হোসেন শাহিন বলেন, অনেক অভিভাবকের উদাসীনতার কারণে শিশুরা পুকুরে ডুবে মারা যায়। শিশুমৃত্যু কমাতে বাড়িসংলগ্ন পুকুর ও ডোবায় নিরাপত্তা বেষ্টনী দেওয়ার পাশাপাশি সবাইকে সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই। সন্তানকে সাঁতার শেখাতে ব্যক্তি উদ্যোগ না বাড়ায় অনেক বড় ছেলে-মেয়েও পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছে।

ভোলার সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, পানিতে ডুবে মৃত্যুর সংখ্যাটি বেশ উদ্বেগজনক। অভিভাবকদের উচিত, শিশু বয়স থেকেই তাদের প্রতি বিশেষ যতœশীল হয়ে সাঁতার শেখানো, সতর্ক দৃষ্টি রাখা ও যথেষ্ট সচেতন থাকা। বাড়িসংলগ্ন ডোবা, পুকুর ও ড্রেনগুলোতেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো প্রয়োজন।

বাংলাদেশ সময়: ২:০৭:৫৩   ২০৮ বার পঠিত  







পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

জেলা’র আরও খবর


ভোলা-ঢাকাগামী কর্ণফুলী-৪ লঞ্চ থেকে নদীতে নারী ঝাঁপ: পরিচয় ও খোঁজ মিলেনি এখনো
আশায় ওদের মাস পেরিয়ে বছর হয়, তবুও পূরণ হয় না আশা!
তজুমদ্দিনে ঈদুল আযহার ছুটিতে ক্লিনিকি খোলা ৫টি নরমাল ডেলিভারী করায় স্বাস্থ্যকর্মীরা
বোরহানউদ্দিনে গাড়ীর চাকা ব্লাস্টে মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু
ক্ষমতায় যেতে ভারতের সঙ্গে চুক্তি করলে জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে: ফয়জুল করীম
নিষিদ্ধ জালে চিংড়ির রেণু শিকারের মহোৎসব, অসহায় মৎস্য বিভাগ
তেঁতুলিয়ার তীব্র ভাঙনে ভিটে হারিয়ে দিশাহারা মানুষ
১০০ কিলোমিটার সড়কে খানাখন্দ, দুর্ভোগ
ভোলায় সাংবাদিক জাকিরকে হত্যার হুমকি, ছাত্রদলের সকল সংবাদ বর্জনের সিদ্ধান্ত
ভোলার সংগঠক ও সমর্থকদের সাথে আপ বাংলাদেশ এর ঈদ পূর্ণমিলনী ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত



আর্কাইভ