লালমোহনে বেপরোয়া ইঁদুরে দিশেহারা কৃষক

প্রচ্ছদ » অর্থনীতি » লালমোহনে বেপরোয়া ইঁদুরে দিশেহারা কৃষক
বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর ২০২৪



---

স্টাফ রিপোর্টার ॥

আমন ধানের ক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভোলার লালমোহন উপজেলার কৃষকরা। কীটনাশক এবং ফাঁদ ব্যবহার করেও ইঁদুরের আক্রমণ ঠেকাতে পারছেন না তারা। ক্ষেতের ধান গাছ কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে ইঁদুর। আমন ধানের ক্ষেতে ইঁদুরের এমন বেপরোয়া আক্রমণে এখন রীতিমতো কৃষকদের মাথায় হাত পড়েছে।

লালমোহন উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় এ বছর ২৩ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে, অতিবৃষ্টিতে ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। সবশেষ এবার লালমোহন উপজেলায় ২৩ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। হিসেবে অনুযায়ী লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও এ বছর ২০০ হেক্টর জমিতে কম আমন আবাদ হয়েছে।

তবে, এই উপজেলার কৃষকদের চাষ করা আমন ধানের মধ্যে রয়েছে উফশী জাতের; বিআর-১১, বিআর-২২, বিআর-২৩, ব্রি ধান-৪১, ব্রি ধান-৪৪, ব্রি ধান-৪৯, ব্রি ধান-৫২, ব্রি ধান-৭২, ব্রি ধান-৭৩, ব্রি ধান-৭৫, ব্রি ধান-৭৬, ব্রি ধান-৭৭, ব্রি ধান-৮৫, ব্রি ধান-৮৭, ব্রি ধান-৯৩ এবং ব্রি ধান-৯৫। এছাড়া স্বর্ণা জাতের- বিনা ধান-১৭ এবং বিনা ধান-২০। স্থানীয় জাতের মধ্যে রয়েছে কাজল শাইল, ঘিকজ, কালিজিরা, কালাকোরা, লোতর, টেপু এবং লেম্ভু ধান।

সরেজমিনে লালমোহন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠজুড়ে কেবল সবুজের সমারোহ। তবে সেই সবুজের বুকে কেউ যেন ক্ষত চিহ্ন এঁকে দিয়েছে, ইঁদুরের আক্রমণে দূর থেকে আমনের ক্ষেতে চোখ পড়লে এমনটাই মনে হচ্ছে। কৃষকরা ইঁদুর দমন করতে নানা ধরনের ওষুধ ও ফাঁদ ব্যবহার করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। ক্ষেতে ধান গাছের অবস্থা ভালো হলেও শেষ পর্যন্ত ইঁদুরের এমন বেপরোয়া আক্রমণে ফলনের ক্ষতির চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকরা।

উপজেলার কালমা ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক হানিফ বয়াতি এবং রেজাউল করিম সোহাগ বলেন, মৌসুমের শুরুতেই অতিবৃষ্টির কারণে আমন ধানের বীজতলা কয়েকবার নষ্ট হয়ে গেছে। তবুও বিভিন্নভাবে চারা সংগ্রহ করে নির্ধারিত জমিতে আমনের আবাদ করেছি। তবে সেই ধানে এখন ব্যাপকভাবে আক্রমণ চালাচ্ছে ইঁদুর। পোকার চেয়েও আমরা এখন বেশি ইঁদুর আতঙ্কে রয়েছি। ক্ষেতে ইঁদুর আক্রমণ করে ধান গাছ কেটে ফেলছে। নানা ধরনের ওষুধ আর ফাঁদ ব্যবহার করেও ইঁদুরের এই আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাচ্ছে না। এতে করে কাক্সিক্ষত ফলন না পাওয়ার সম্ভাবনাই অনেক বেশি।

একই ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের চরছকিনা এলাকার কৃষক সেলিম বলেন, বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই আমি ধানের চাষ করছি। এ বছর ১২০ শতাংশ জমিতে আমন ধানের চাষ করেছি। তবে যখনই ধান গাছগুলো বড় হয়ে উঠতে শুরু করেছে তখনই বেপরোয়াভাবে ওইসব ধান গাছে আক্রমণ চালাচ্ছে ইঁদুর। এসব ইঁদুর গাছ কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলে। আমার ১২০ শতাংশ জমির মধ্যে অন্তত ৩০ শতাংশ জমির ধান গাছই ইঁদুরে কেটে ফেলেছে। এ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছি। কৃষি অফিস থেকে পরামর্শ নিয়েও এই ইঁদুরের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবু হাচনাইন বলেন, ইঁদুর একটি জাতীয় সমস্যা। ইঁদুর সত্যিই অনেক ফসলের ক্ষতি করে। তবে বিভিন্ন সভার মাধ্যমে আমরা কৃষকদের নিয়ে সচেতনতামূলক আলোচনা করে থাকি। যাতে করে কৃষকরা ইঁদুরের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে পারেন।

বাংলাদেশ সময়: ১:৪৪:৩৮   ৮৯ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

অর্থনীতি’র আরও খবর


ভোলায় মাঁচা পদ্ধতিতে ছাগল পালন বিষয়ক প্রশিক্ষণ
ভোলায় এক্সিম ব্যাংকের গ্রাহক সমাবেশ অনুষ্ঠিত
ভোলায় প্রানিসম্পদ খাত সংশ্লিষ্ট খামারীদের দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক তিন দিনব্যাপি প্রশিক্ষনের উদ্বোধন
চরসামাইয়ায় দেশি মুরগি পালনের উপর দিনব্যাপি প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত
ভোলায় ন্যায্যমূল্যে দেশী ও লেয়ার মুরগির ডিম বিক্রি শুরু
ভোলায় উদ্বোধন হল বিনোদন কেন্দ্র ‘জিজেইউএস ল্যান্ডিং ষ্টেশন’
নতুন জাতের ধানের আবাদ, সফলতার আশা চাষিদের
ভোলায় দুগ্ধজাত পন্য খাওয়া বিষয়ক সচেতনতা সভা
বোরহানউদ্দিন পৌর বাজার ব্যাবসায়ী নবনির্বাচিত কমিটির পরিচিতি ও মতবিনিময় সভা
চরাঞ্চলের মানুষ মহিষ পালন করে জীবিকা নির্বাহ করছে



আর্কাইভ