আল আমিন ॥
ফ্যাসিস্ট, দুর্নীতিবাজ ও গণহত্যায় জড়িতদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা এবং সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও প্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচন ব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষে কাজ করতে হবে। ধর্ম বর্ণ ভিন্নমত সবার জন্য খেলাফত, খেলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণআন্দোলন গড়ে তুলুন, এ স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয় সম্মেলন চত্ত্বর।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে ভোলা জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ভোলা জেলার উদ্যোগে জনশক্তি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ভোলা জেলা উত্তর শাখার আহ্বায়ক মাওলানা মাকসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে জনশক্তি সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব শায়খুল হাদীস আল্লামা মামুনুল হক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি দ্বীমুখি বক্তব্য জাতির সাথে শঠতার শামিল। রাষ্ট্রপতি তার বক্তব্যে বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করায় প্রধান বিচারপতির মতামতের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হল এবং তিনি উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দকে শপথ বাক্য পাঠ করান। প্রায় আড়াই মাস পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নেই এমন মন্তব্য জাতির সাথে শঠতার শামিল এবং উদ্দেশ্যে প্রণোদিত। এ বক্তব্যে মাধ্যমে তিনি অসত্য বলেছেন এবং গোপনীয়তার শপথ ভঙ্গ করেছেন। গণঅভ্যূত্থানে গঠিত নতুন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পদে থাকার তিনি নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন।
এসময় কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আজ আমরা দীর্ঘ ১৬ বছর পর জালিমের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছি। এই জনশক্তি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ায় প্রমাণ করেছে মানুষ স্বৈরাচারের কারাগার থেকে বের হয়ে মুক্ত বাতাসে নিজেদের মত প্রকাশ করতে সক্ষম হচ্ছে।
পতিত সরকারের দোসররা বিভিন্ন জায়গায় সংগঠিত হয়ে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করছে। বিভিন্ন প্রশাসনে বসে তারা দেশবিরোধী চক্রান্তে লিপ্ত। বিভিন্নবাজার সিন্ডিকেটে জড়িত থেকে বাজারে বিশৃঙ্খলা করে উত্তপ্ত করছে। তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের সাথে পুরো দেশের ১৮ কোটি মানুষের ম্যান্ডেট রয়েছে। আপনারা দুর্বল নন। আপনারা আরও কঠোর হোন। ফ্যাসিবাদ নির্মূলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন। দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার নাগালে রাখুন। সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করুন। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নিন।
বিশেষ অতিথি বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমেদ, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবুল হাসানাত জালালি, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় অফিস ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা রাকিবুল ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা ফয়সাল আহমেদ, মাওলানা সাঈদুজ্জামান, বাংলাদেশ ছাত্র মজলিস কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা কামাল উদ্দিন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ভোলা জেলা দক্ষিণ শাখার আহ্বায়ক মাওলানা মইনুল ইসলাম, হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ ভোলা জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মিজানুর রহমান আজাদী, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস ভোলা জেলা উত্তর সভাপতি মাওলানা সাখাওয়াতুল্লাহ আমিন, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা আসাদুল্লাহ প্রমূখ।
এসময় বক্তারা আরও বলেন, নিশ্চয়ই জানেন যে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচাইতে সোনালি ইতিহাস হল মুসলমানদের। রাসূল (সঃ) পর থেকে পরবর্তী চার খলিফার খেলাফত ব্যবস্থা ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে সবচাইতে সর্বোত্তম শাসন ব্যবস্থা। সেই দীর্ঘ ২৪ বছরের ইতিহাস এখনো মুসলিম জাতিকে মনে করিয়ে দেয় যে পৃথিবীতে একমাত্র শান্তির শাসনব্যবস্থা হল ইসলামী শাসন ব্যবস্থা। আর এই বাংলাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে একমাত্র সমাধান হলো ইসলামী শাসন ব্যবস্থা। সে শাসন ব্যবস্থা কায়েমের লক্ষ্যে আমাদের সকলের কাছে ইসলামী আন্দোলনের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে। আগামীতে ইসলামকে ক্ষমতায় আনতে হবে তার ফলেই আমরা একটি ইসলামী সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব।
বাংলাদেশ সময়: ২:৫৫:৩৯ ১১৯ বার পঠিত