এম মইনুল এহসান/ আরিফ পন্ডিত ॥
বিপ্লব যাতে ছিনতাই না হয় সে দিকে সর্তকভাবে পাহারা দিবে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। যারা প্রতিবিপ্লবের স্বপ্ন দেখছেন তাদেরকে কঠিনভাবে প্রতিহত করা হবে। খুনি স্বৈরাচারি হাসিনাকে পূর্নবাসন করা কেবলই দুঃস্বপ্ন। রক্ত পিপাসু খুনি শেখ হাসিনা ও তার দোসর আওয়ামী লীগের মন্ত্রি-এমপি, পুলিশ বাহিনীর সাবেক আইজিপি বেনজীর, ডিআইজি হারুনসহ পেটুয়া দালাল অফিসার, ঘাপটি মেরে থাকা আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বের করে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। ভোলার বোরহানউদ্দিনে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ বোরহানউদ্দিন শাখা কর্তৃক আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হেফজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আল্লামা মামুনুল হক এ কথা বলেন।
২০১৯ সালের ২০ অক্টোবর বোরহানউদ্দিনে শাতিমে রাসুল (সঃ) বিপ্লব চন্দ্র শুভর বিচারের দাবিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশে অজ্ঞাত উসকানিতে গুলি চালিয়ে ৪ জন মুসলিম যুবককে হত্যা ও কয়েক শতাধিক মুসল্লিদের আহত করে পুলিশ। সেই ঘটনার ৫ বছর পর হাসিনার পতনের পর সেদিনের ঘটনাস্থলের পাশেই শহিদের স্মরণ সভা ও সমাবেশের আয়োজন করে হেফাজতে ইসলাম বোরহানউদ্দিন শাখা।
হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও ভোলা জেলা সভাপতি মাওঃ মোঃ আনাসের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি মাওঃ মামুনুল হক বলেন, স্বৈরাচারি হাসিনার জুলুমের প্রতিবাদ করতে গিয়ে, হাসিনার পতন ঘটাতে রক্ত অনেকেই দিয়েছে, তবে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে এদেশের আলেম সমাজ। ২০১৩ সালে শাপলায়, ২০১৯ সালে ভোলায়, ২০২১ ঢাকায়-বি-বাড়িয়ায়, ২০২৪ সারাদেশেই অনেক আলেম ওলামা রক্ত ঝরিয়েছেন, জীবন দিয়েছেন। শেখ হাসিনা বলেছিল হেফাজত পালিয়ে গেছে, অথচ আজ শেখ হাসিনা চোরের মত দেশ থেকে পালিয়ে গেল। ৫ই মে ২০১৩ শেখ হাসিনার নির্দেশে তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার বেনজীরের নেতৃত্বে রাতের আধারে ঘুমন্ত হেফাজত কর্মীদের উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যা ও গুম করার পর শেখ হাসিনা সংসদে বলেছিল হেফাজত কর্মীরা গায়ে রং মেখে শাপলায় এসেছিল, সুবহানআল্লাহ বলে পালিয়ে গেছে। এ কথা বলে শেখ হাসিনা জাতির সাথে উপহাস ও মিথ্যাচার করেছিল। শেখ হাসিনা দেশকে হিন্দুত্ববাদিদের কাছে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিল। এই অপরাধেরও বিচার জরুরি। হাসিনা মনে করেছিল হত্যা নির্যাতনের মাধ্যমে হেফাজত বিলিন করে দেওয়া হবে। অথচ আজ আওয়ামী লীগ বিলিন হওয়ার পথে। যারা আল্লাহ, রাসুল (স), কুরআন-সুন্নাহে বিশ্বাস করে তারাই হেফাজতে ইসলাম। হেফাজতের বিরুদ্ধবাদিরা মুনাফেক।
এ সময় তিনি আরো বলেন, ইসলামের বিষয়ে কারো সাথে আপোস নয়। মুসলমানের সন্তানদের শিক্ষা নিয়ে কোন ছার নয়। বর্তমান সরকার যদি চায় হিন্দুত্ববাদ তারিয়ে নাস্তিক্যবাদ চালু করেবে, তাহলে হেফাজতে ইসমলাম তা প্রতিহত করবে। শিক্ষানীতি প্রণয়নে হেফাজতের সাথে আলোচনা করেই তা প্রণয়ন করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মুফতি আতাউল্লাহ আমিনী আওয়ামী লীগের সমর্থকদের তওবার আহ্বান জানান। এসময় তিনি শাপলাসহ সকল শহিদের হত্যার বিচারের দাবি জানান। তিনি বলেন, ২০১৯ সালে ৪ জন যুবককে শহিদ করার পর কতিপয় দালাল সাংবাদিকের সহায়তায় বোরহানউদ্দিন থানার সংলগ্ন ভাওয়াল বাড়িতে মন্দির ভাঙার নাটক সাজানো হয়। বিনা তদন্তে হাসিনা বিপ্লব চন্দ্র শুভর অপকর্মকে ফেসবুক আইডি হ্যাক করেছে বলে বক্তব্য দেয়। মিথ্যা মামলা দিয়ে তৌহিদি জনতাকে অযথা হয়রানি করা হয়। তিনি এই ঘটনারও বিচার দাবি করেন।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাও: জালালউদ্দিন, বাটামারার পীর মাওঃ মহিবুল্লাহ, বোরহানউদ্দিন আলিয়ার প্রভাষক মাও: হাবিবুর রহমান আল জাজিরিসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। সমাবেশে প্রায় লক্ষাধিক তৌহিদি জনতা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় ২০১৯ সালে ২০ অক্টোবরের ৪ শহিদের পিতার হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন হেফাজত নেতৃবৃন্দ।
বাংলাদেশ সময়: ২:৩৫:০৭ ১৪০ বার পঠিত