আদিল হোসেন তপু / আল আমিন॥
ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৪’ উপলক্ষে জেলেসহ বিভিন্ন পর্যায়ে স্টেকহোল্ডাদের নিয়ে সচেতনতা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গলবার (২২ই অক্টোবর) সকালে ভোলা সদরের শিবপুর ইউনিয়নের বালুর মাঠে (চায়না ইপিজেড) ভোলা জেলা প্রশাসন ও ভোলা মৎস্য অধিদপ্তরের আয়োজনে এবং জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা মিজ্ ফরিদা আখতার।
এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশের মোট ইলিশের তিন ভাগের এক ভাগ ইলিশের জোগান আসে ভোলা থেকে এবং সেই মা ইলিশ সংরক্ষণে সহযোগিতা করছেন আমাদের জেলেরা এজন্য আমি আপনাদেরকে সালাম জানাই। এতদিন জানতাম ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর কিন্তু আমরা লক্ষ্য করেছি ভোলাতে ইলিশের উৎপাদন এবং মা ইলিশের অভয়াশ্রম হওয়ার কারণে অন্য জেলার তুলনায় ভোলাতে ইলিশের উৎপাদন বেশি হয় এজন্য মূলত ভোলা কে ইলিশের বাড়ি বলা উচিত। এছাড়াও নদীতে অভিযান চলাকালীন সময়ে যেসমস্ত অবৈধ জাল ব্যবহার করে যাঁরা ‘মা’ ইলিশ নিধন করছে এঁরা জেলে নয় আমি এদেরকে খুনি বলি এবং এঁরা লোভী এঁরা মা ইলিশ কে ডিম ছাড়তে সহায়তা না করে ইলিশের বিস্তার ধ্বংস করছে এঁরা দেশ এবং জাতির শত্রু। আপনারা জেনে খুশি হবেন যে ইলিশ আন্তর্জাতিক লেভেলের একটি সম্পদ,যেখানে চীনে ১ কেজি ইলিশের দাম বাংলাদেশী টাকায় ১২ হাজার টাকারও অধিক। এজন্য আমরা যদি ইলিশ সম্পদকে রক্ষা করতে পারলে ভোলার কোনো জেলে গরীব থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, অভিযান চলাকালীন সময়ে জেলেদের এবং তাদের সংসার পরিচালনা করতে যে কষ্ট হয় তা আমরা বুঝি এবং আমি আপনাদেরকে এতটুকু আশ্বস্ত করছি যে প্রণোদনা মূলক যে চাল দেওয়া হয়ে এর সাথে সামান্য হলেও আর্থিক সাপোর্ট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। এছাড়াও মহাজনের ধাদনের কারণে জেলেরা মাথা তুলে দাড়াতে পারছে না। এজন্য যাতে স্বল্প সুদে জেলেরা ঋণ পেতে পারে সেই ব্যবস্থা আমরা করবো ইনশাআল্লাহ। এছাড়াও আমরা লক্ষ্য করেছি এই নিষিদ্ধকালীন সময়ে মায়ানমার এবং ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের সীমানায় এসে মাছ আহরণ করে নিয়ে যায়, এটা করা তাদের কোনো অধিকার নেই তাই আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কে বলবো তাদেরকে বিতারিত করবেন।
উল্লেখ্য, গত ১৩ অক্টোবর থেকে ৩রা নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২২ দিন ইলিশ আহরণ, বাজারজাতকরন, মজুদ, পরিবহন এবং ক্রয়বিক্রয় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ তাই এবিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা রাখেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, নৌপুলিশ সুপার, কোস্টগার্ডের দক্ষিণ জোন কমান্ডার। এছাড়াও এসময় জেলেদের মধ্যে থেকেও ৩ জন জেলে তাদের অসুবিধার কথা মাননীয় মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ উপদেষ্টার নিকট তুলে ধরেন।
তালহা তালুকদার বাঁধনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয় সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হাওলাদার, মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয় যুগ্ম সচিব, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. জিল্লুর রহমান, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ভোলা কন্টিনজেন্ট কমান্ডার আবু বক্কর সিদ্দিক, (সি), পিএসসি, বিএন, ভোলা জেলা পুলিশ মোহাম্মদ শরীফুল হক, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোন ভোলা জোনাল কমান্ডার ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ শাহীন মজিদ, (জি), পিএসসি, বিএন, ভোলা জেলা নৌপুলিশ সুপার এইচ এম নাজমুল হোসেন, মৎস্য সম্পদ প্রকল্প পরিচালক (অভ্যন্তরীণ) এসসিএমপি মৎস্য অধিদপ্তর। বরিশাল বিভাগীয় উপপরিচালক মৎস্য অধিদপ্তর মোল্লা মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব, ভোলা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল চন্দ্র শীল, শিবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি একেএম নুর হোসেন হাওলাদার, শিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. রাজিব হাসান এবং ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী প্রমূখ।
বাংলাদেশ সময়: ২:৪১:৫৩ ১৬০ বার পঠিত