মেঘনার ভাঙনে প্রতিদিনই বিলীন হচ্ছে বসতঘর-ফসলি জমি

প্রচ্ছদ » জেলা » মেঘনার ভাঙনে প্রতিদিনই বিলীন হচ্ছে বসতঘর-ফসলি জমি
বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪



---

বিশেষ প্রতিনিধি ॥

ভোলার বিচ্ছিন্ন মাঝের চরে মেঘনা নদীর তীব্র ভাঙনের দেখা দিয়েছে। এতে গত কয়েকদিন ধরেই বিলীন হচ্ছে বসতঘর ও ফসলি জমি। ভাঙনের কবলে পড়ে ফসলি জমি হারিয়ে দিশেহারা কৃষকরা। অপরদিকে ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় আতংকিত স্থানীয়রা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে মেঘনা নদীর তীব্র স্রোতে ভেঙে যাচ্ছে সদর উপজেলার কাচিয়ার ইউনিয়নের কৃষির রাজ্য নামে পরিচিত বিচ্ছিন্ন মাঝের চর। আর চরের রামদেবপুর, চর টবগী ও মধুপুরের পাঁচটি পয়েন্টে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের কবলে প্রতিদিনই কমবেশি ফসলি জমি ও বসতঘর মেঘনায় বিলীন হচ্ছে। নদী ভাঙনের কারণে কেউ কেউ ফসলি জমি হারিয়েছেন। আবার কেউ কেউ বসতঘর হারিয়ে হয়েছেন গৃহহীন।

মাঝের চরের বাসিন্দা মো. আলী হোসেন জানান, মেঘনার তীব্র ভাঙনে বসতঘর নদীতে বিলীন হয়েছে। বর্তমানে থাকার জায়গা নেই। বসতঘর হারিয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে উঠেছি।

বিলকিস বেগম, জাহানারা বেগম ও মো. বেলায়েত হোসেন জানান, বসতঘর অনেক বছর আগে মেঘনায় বিলীন হয়েছে। পরে মাঝের চরে এসে সরকারি ঘর পেয়ে শান্তিতে বসবাস শুরু করি। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে মেঘনায় তীব্র ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। এভাবে ভাঙন থাকলে হয়তো কয়েক দিনের মধ্যে আমাদের বসতঘরও নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।

কৃষক মো. লোকমান হোসেন হোসেন, মো. আল আমিন ও মো. শাজাহান জানান, প্রতি বছর ভোলার এই চরে ধান, গম, ভূট্টা, সরিষা, ক্যাপসিকাম, স্ট্রবেরি, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষাবাদ করি। কিন্তু বর্তমানে মেঘনায় ভাঙনের কারণে ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভাঙন দ্রুত বন্ধ করা না হলে মাঝের চরে চাষাবাদ থাকবে না।

মো. সাহাবুদ্দিন ফরাজী, মো. জহির ও মো. রাসেল জানান, মাঝের চরে প্রায় আট হাজার মানুষ বসবাস করছি। তাদের বেশিভাগই কৃষি কাজে যুক্ত। আর অল্প কিছু পরিবার মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে। গত প্রায় দুই বছর ধরে মাঝের চর ভাঙন শুরু হয়েছে। তখন খুবই কম ভাঙতো। কিন্তু এখন ভাঙনের তীব্রতা অনেক বেশি। মাঝের চরের নদীতে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের কারণে বর্তমানে বেশি ভাঙন বলে দাবি করেন তারা।

---

তারা আরও জানান, দ্রুত ভাঙনে রোধ না করলে ফসলি জমি, বসতঘরের পাশাপাশি আশ্রায়ণ প্রকল্প ঘর, সাইক্লোন শেল্টার, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বিলীন হয়ে যাবে।

ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো ডিভিশন-১) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান জানান, একটি প্রকল্প পাশের মাধ্যমে আমরা মাঝের চরকে মেঘনার ভাঙন থেকে রক্ষা করতে পারবো। এজন্য শিগগিরই কাজ শুরু হবে। এছাড়াও বালু মহল সীমানার বাহিরে এসে কেউ যাতে কেউ বালু উত্তোলন করতে না পারে সেজন্য মনিটরিং করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২:৩৩:১৫   ৩০৭ বার পঠিত  







পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

জেলা’র আরও খবর


ভোলা-ঢাকাগামী কর্ণফুলী-৪ লঞ্চ থেকে নদীতে নারী ঝাঁপ: পরিচয় ও খোঁজ মিলেনি এখনো
আশায় ওদের মাস পেরিয়ে বছর হয়, তবুও পূরণ হয় না আশা!
তজুমদ্দিনে ঈদুল আযহার ছুটিতে ক্লিনিকি খোলা ৫টি নরমাল ডেলিভারী করায় স্বাস্থ্যকর্মীরা
বোরহানউদ্দিনে গাড়ীর চাকা ব্লাস্টে মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু
ক্ষমতায় যেতে ভারতের সঙ্গে চুক্তি করলে জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে: ফয়জুল করীম
নিষিদ্ধ জালে চিংড়ির রেণু শিকারের মহোৎসব, অসহায় মৎস্য বিভাগ
তেঁতুলিয়ার তীব্র ভাঙনে ভিটে হারিয়ে দিশাহারা মানুষ
১০০ কিলোমিটার সড়কে খানাখন্দ, দুর্ভোগ
ভোলায় সাংবাদিক জাকিরকে হত্যার হুমকি, ছাত্রদলের সকল সংবাদ বর্জনের সিদ্ধান্ত
ভোলার সংগঠক ও সমর্থকদের সাথে আপ বাংলাদেশ এর ঈদ পূর্ণমিলনী ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত



আর্কাইভ