খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি পরিচালনার জন্য ডিলার নিয়োগের নামে আবেদনপ্রতি ২ হাজার টাকা নিয়েছেন চরফ্যাশন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু বকর সিদ্দিক। খাদ্যশস্য লাইসেন্স ও স্ট্যা¤প বাবদ ২ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। খাদ্যশস্য লাইসেন্সের নমুনা কপি দেখতে চাইলে তিনি দেখাতে পারেননি। তবে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি পরিচালনার জন্য ডিলার নিয়োগের আবেদন জমা থেকে শুরু করে যাচাই-বাচাই পর্যন্ত কোনো ধরনের সরকারি ফি নির্ধারণ করা হয়নি। এমনকি খাদ্যশস্য লাইসেন্সেরও প্রয়োজন নেই। এমনটাই জানিয়েছেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. এহসানুল হক।

চরফ্যাশন উপজেলার ২১টি ইউনিয়ন থেকে ৮ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টা পর্যন্ত ৩৫৩টি আবেদন জমা পড়েছে বলে জানিয়েছেন খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু বকর সিদ্দিক। তবে একাধিক অবেদনকারী বলেছেন, আট শতাধিক আবেদনপত্র জমা পড়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত হতে কার্যালয়ে গিয়ে ডিলার আবেদন রেজিস্টার দেখতে চাইলে দেখানো যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। নির্বাচিত ডিলার ছাড়া অন্য আবেদনকারীদের থেকে আদায়কৃত অর্থ ফেরত দেওয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নে তারা বলেন, তাদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। এদিকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ১৯ আগস্টের ১৫৫নং স্মারকের নির্দেশনা অনুযায়ী চরফ্যাশন উপজেলার ২১টি ইউনিয়ন ও বিক্রয় কেন্দ্রের অনুকূলে খদ্যবান্ধব কর্মসূচি পরিচালনার জন্য স¤পূর্ণ অস্থায়ীভাবে ডিলার নিয়োগ করা হবে মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আবেদনকারী জানান, গণহারে আবেদন জমা নিয়েছে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ। শতকরা ৯৫ শতাংশ আবেদনকারীর ট্রেড লাইসেন্স ভুয়া এবং আবেদনপত্রে দেওয়া তথ্য সঠিক নয়। অনেকের দোকান ও গুদামঘর নেই। এমনকি আর্থিক সচ্ছলতার সনদও জাল।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, আবেদনপ্রতি ২ হাজার টাকা নিয়েছি। এটা মূলত এক হাজার ৫০০ টাকা খাদ্যশস্য লাইসেন্স বাবদ এবং ৫০০ টাকা নন-জুডিশিয়াল স্ট্যা¤েপর জন্য নেওয়া হয়েছে। নির্বাচিত ডিলারদের উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় থেকে লাইসেন্স দেওয়া হবে। অনেক আবেদনকারীর আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত ট্রেড লাইসেন্স ও নাগরিকত্ব সনদ ৫ আগস্টের পরের তারিখে ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক সিলমোহরসহ সই করা। প্রাথমিকভাবে বোঝা যাচ্ছে, সিলমোহর ও সই কপি করা হয়েছে। এজন্য সেগুলো বাতিল করা হবে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু বকর সিদ্দিকের তথ্যমতে ৩৫৩টি আবেদন ২ হাজার টাকা করে হলে তাতে ৭ লাখ ৬ হাজার টাকা জমা হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. এহসানুল হক বলেন, খদ্যবান্ধব কর্মসূচি পরিচালনার জন্য ডিলার নিয়োগের আবেদন থেকে শুরু করে যাচাই-বাছাই পর্যন্ত কোনো ধরনের সরকারি ফি নির্ধারণ করা হয়নি। এমনকি খাদ্যশস্য লাইসেন্সের প্রয়োজন নেই। তবে কমিটি কর্তৃক নির্বাচিত ডিলারদের ২০ হাজার টাকা জামানত হিসাবে পে-অর্ডার আকারে ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যা¤েপ অঙ্গীকারনামা দিতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:০৩:০৯   ৯৩ বার পঠিত