পপকর্ন বিক্রি করে চলে মফিজের সংসার

প্রচ্ছদ » অর্থনীতি » পপকর্ন বিক্রি করে চলে মফিজের সংসার
বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪



---

লালমোহন প্রতিনিধি ॥

৪০ বছর বয়সী মো. মফিজ। বাঁশের সঙ্গে রশি পেঁছিয়ে পায়ে হেঁটে বিভিন্ন হাট-বাজারে পপকর্ন বিক্রি করেন তিনি। ওই পপকর্ন বিক্রির আয়েই চলছে তার সংসার। ভোলার লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের করিমগঞ্জ এলাকার মাহমুদুল হক দালাল বাড়ির হজল হকের ছেলে মফিজ।

তিনি বলেন, আগে এলাকায় মানুষের বাড়িতে গিয়ে নারিকেল গাছ পরিষ্কার করে সংসার চালাতাম। এক বছর আগে অসাবধানতাবশত গাছ থেকে পড়ে আমার মেরুদ-ের হাঁড় ও বাম হাত ভেঙে যায়। পরে স্থানীয় মানুষজনের সহযোগিতায় চিকিৎসা করি। চিকিৎসায় হাড় ভালো হলেও তারপর থেকে আর কোনো ভারি কাজ করতে পারছি না। তাই সংসার ও পেটের তাগিদে এখন বিভিন্ন বাজারে গিয়ে পপকর্ন বিক্রি করি।

তিনি আরো বলেন, লালমোহন বাজার থেকে ভুট্টা কিনে বাড়িতে নিয়ে ভেজে পপকর্ন প্যাকেটে ভরে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করি। এই কাজে আমার স্ত্রী আমাকে সহায়তা করেন। ওই পপকর্ন নিয়ে প্রতিদিন সকালে বাড়ি থেকে উপজেলার বিভিন্ন বাজার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে গিয়ে বিক্রি করি। বৃষ্টি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের দিন বেচাকেনা কিছুটা কম হয়। বন্ধের দিনে ৫০ প্যাকেট পপকর্ন বিক্রি করতে পারি। যেদিন ভালো বেচাকেনা হয় সেদিন অন্তত একশ প্যাকেটের মতো বিক্রি করি। প্রতি প্যাকেট পপকর্ন ১০ টাকা করে বিক্রি করি। এই প্যাকেট প্রতি খরচ হয় ৬ টাকা। যার ফলে এক প্যাকেট বিক্রি করলে চার টাকার মতো লাভ হয়। এতে গড়ে প্রতিদিন তিনশ টাকার মতো লাভ হয়। যা দিয়ে নিজের প্রয়োজনীয় ওষুধ কেনাসহ সংসার চালাচ্ছি। আমার দুই ছেলে রয়েছে। অভাবের কারণে তাদের তেমন পড়াতে পাড়িনি। যার জন্য তারা ঢাকায় গিয়ে এখন কাজ শিখছে। কাজ শেখার কারণে তারা সংসার চালাতে আপাতত কোনো টাকা দিতে পারছে না।

মফিজ আরো বলেন, শুনেছি গরিবের জন্য সরকারি অনেক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত কোনো সুবিধা পাইনি। আমার ঘরের ভিটা ছাড়া অন্য কোনো জমি বা স¤পত্তি নেই। অসুস্থতার কারণে অনেক সময় শরীর যেন হাল ছেড়ে দেয়। তবুও পেটের তাগিদে এই অসুস্থ শরীর নিয়েই বিভিন্ন এলাকায় হেঁটে হেঁটে পপকর্ন বিক্রি করি। সরকারিভাবে বা সমাজের বিত্তবান মানুষ যদি আমাকে সহযোগিতা করে তাহলে আমার বাড়ির সামনে একটি মুদি দোকান করতে পারতাম। তাতে পরিশ্রমও অনেক কম হবে। আর ওই দোকানের আয় দিয়েই এখনকার চেয়ে আরেকটু সুন্দরভাবে সংসার চালাতে পারবো।

ধলীগৌরনগর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মাকসুদুর রহমান হাওলাদার বলেন, মফিজকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। এই মুহূর্তে ইউনিয়ন পরিষদে তেমন কোনো বরাদ্দ নেই। তবে সামনে ইউনিয়ন পরিষদে কোনো সুযোগ-সুবিধা আসলে মফিজকে তা প্রদানের চেষ্টা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০:২৯:৪৩   ৬৩ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

অর্থনীতি’র আরও খবর


ভোলায় সাড়ে ৬ লাখ কোটি টাকার গ্যাসের সন্ধান
লালমোহনে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের মাঝে অনুদান বিতরণ করলেন জেলা প্রশাসক
লালমোহনে অগ্নিকান্ডে ছয়টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে গেছে
চরফ্যাশনে ডিলার নিয়োগ ॥ আবেদন ফির নামে টাকা আদায়ের অভিযোগ
দৌলতখানে টিসিবির পণ্য সামগ্রী বিতরণ
কুঞ্জেরহাটে মধ্যরাতে ৯ দোকান পুড়ে ছাই, কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্ত
ভোলায় ইসলামি ব্যাংকের গ্রাহক সেবা-২০২৪ পালিত
ভোলা পৌর কিচেন মার্কেটে অত্যাধুনিক সুপার সপের উদ্বোধন
অনাবাদি জমিতে বস্তায় আদা চাষে স্বপ্ন বুনছেন কৃষকরা
ভোলায় জোয়ারে ক্ষতিগ্রস্ত ২০ হাজার হেক্টর জমির ফসল



আর্কাইভ