
স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাকা ধার না দেওয়ায় ইউপি সদস্য ও ব্যবসায়ীর ভাইকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে সন্ত্রাসীরা। হামলায় গুরুতর আহত ভাসানীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়েছে। গত সোমবার (১৩ নভেম্বর) ভোলা পৌরসভার মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
মামলা ও আহত সুত্রে জানা গেছে, গত সোমবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে ভোলা সদরের ধনিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ব্যবসায়ী মোঃ মনিরুল ইসলাম ও ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে কাজ শেষে নতুন বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তারা দুজন কালিবাড়ী রোডের গালর্স স্কুল মোড়ে আসলে মাসুম, নুশান আহম্মেদ রিয়াজ, ফাইয়াজ ও ওমি, মাহিসহ ৭/৮জন ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলামের কাছে কাজ বাজ করার জন্য টাকা ধার চায়। মনিরুল ইসলাম টাকা ধার দিতে অস্বীকার করলে মাসুম গংরা তার সাথে খারাপ আচরণ করে। এক পর্যায়ে মনিরুল ইসলাম সেখান থেকে ভোলা পৌরসভার মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের মায়ের দোয়া টেলিকমের সামনে চলে আসেন। মাসুম, নুশান আহম্মেদ রিয়াজ, ফাইয়াজ ও ওমি, মাহি গংরা মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের সামনে এসে টাকা ধার না দেওয়ায় মনিরুল ইসলামকে গালিগালজ করে। এসময় মনিরুল ইসলামের ভাই মোঃ ভাসানী এগিয়ে আসে। পরে মনিরুল ইসলাম ভাসানীকে সেখানে রেখে কাউন্সিলর সালাহউদ্দিন লিংকনকে বিষয়টি জানানোর জন্য পৌরসভায় যান। এই সুযোগে মাসুম, নুশান আহম্মেদ রিয়াজ, ফাইয়াজ, ওমি, মোঃ মাহিসহ ৭/৮জন দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র, রড, হাতুড়ি, লাঠিসোটা দিয়ে মনিরুল ইসলামের ভাই মোঃ ভাসানীকে এলোপাথাড়ি মারধর ও রড দিয়ে মাথায় প্রচন্ড আঘাত করে। মাসুম বাহিনীর হামলায় ভাসানী রক্তাক্ত জখম হয়। মাথায় প্রচন্ড আঘাত লাগলে নিথর হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ভাসানী। এসময় হামলাকারীরা ভাসানীর সাথে থাকা নগদ ৪০৫০০/- টাকা ও দামী মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা হুমকি-ধামকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চলে যায়। পরে মনিরুল ইসলাম এসে ভাসানীকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। ভাসানীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করেন। প্রথম ভাসানীকে ঢাকার ইবনেসিনা হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সে মুমুর্ষ অবস্থায় নিউরোসাইন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ব্যাপারে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ভোলা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ধনিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ব্যবসায়ী মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, মাসুম, নুশান আহম্মেদ রিয়াজ, ফাইয়াজ ও ওমি, মোঃ মাহি গংরা আমার কাছ থেকে টাকা ধার চেয়েছে। আমি টাকা না দেওয়ায় তারা আমাকে গালিগালজ ও অশোভন আচরণ করেছে। আমি কাউন্সিলর লিংকন ভাইকে বিষয়টি জানানোর জন্য পৌরসভায় গেলে মাসুম বাহিনী আমার ভাই ভাসানীকে রড, ধাড়ালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা দিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করে রক্তাক্ত জখম করেছে। আমার ভাইয়ের মাথা প্রচন্ড আঘাত লেগেছে। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন অংশ থেতলে গেছে। আমার ভাইয়ের সাথে থাকা টাকা ও মোবাইল হামলাকারীরা নিয়ে গেছে। আমার ভাইকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফাত করা হয়েছে। সে এখন মুমুর্ষ অবস্থায় নিউরোসাইন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার অবস্থা খুবই খারাপ। আমি এই ঘটনার সাথে জড়িত হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।
এ ব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য অভিযুক্ত মাসুম গংদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে কাউকে পাওয়া যায়নি।
ভোলা সদর মডেল থানার ওসি শাহীন ফকির বলেন, ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলামের ভাই ভাসানীর উপর হামলার ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা দ্রুত অপরাধীদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। সবাইকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০:০৪:৫১ ৫৭৪ বার পঠিত