
স্টাফ রিপোর্টার ॥
ভোলায় পল্লীবিদ্যুতের বিল পরিশোধের পরও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির স্টাফরা। এতে বাঁধা দিলে গ্রাহককে মারধর করে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির লাইনম্যান মামুনের নেতৃত্বে তার সঙ্গে থাকা অন্যান্য স্টাফরা। মারধরে গ্রাহক বিবি জুলেখার মাথায় প্রচন্ড আঘাত লাগলে এবং সে রক্তাক্ত আহত হয়। পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি পরানগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএম আশিকুল ইসলামের নির্দেশে ওই গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বুধবার (৮ নভেম্বর) সকালে ভোলা সদরের ৩নং পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডে রতন হাওলাদার বাড়ীতে এই ঘটনা ঘটে।
আহত বিবি জুলেখার স্বামী মোঃ হোসেন বলেন, আমি পল্লীবিদ্যুৎ এর একজন গ্রাহক। আমি সময় মতো বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করি। গত ৫ নভেম্বর আমি বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে দিয়েছি। বুধবার সকালে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির লাইনম্যান মামুনসহ ৫জন স্টাফ আমার বাড়িতে এসে কাউকে কিছু না বলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এসময় আমার স্ত্রী বিবি জুলেখা তাদেরকে বলে আমরা বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেছি। আপনারা কেনো বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করছেন। তারপর তাদেরকে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের কপি দেখায়। এসময় তাদেরকে বাঁধা দিলে লাইনম্যান মামুন ও তার সঙ্গে থাকা আরও ৫জন স্টাফ আমার স্ত্রীকে মারধর করে। তারা আমার স্ত্রীকে কাপরচোপড় টানাহেচরা করে। তাদের মারধরে আমার স্ত্রীর মাথায় প্রচন্ড আঘাত লাগে। এতে আমার স্ত্রী বিবি জুলেখা রক্তাক্ত জখম হয়। লোকজন আমার স্ত্রীকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। আমার বাসার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় ফ্রীজে থাকা মাছ, মাংসসহ আমার ব্যাপক আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
তিনি বলেন, পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি পরানগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএম আশিকুল ইসলাম আমার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে বলে জানতে পেরেছি। আমি তো সঠিক সময়ে বিল পরিশোধ করেছি। কিন্তু কি কারণে আমার বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা আমি জানি না। আমার স্ত্রীকে মারধর ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি। ভুক্তভোগী এই গ্রাহক এ ব্যাপারে সুষ্ঠু বিচার চেয়ে পল্লীবিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দিবেন বলে জানান।
ইতিপূর্বে কয়েকজন গ্রাহক বিল পরিশোধ করার পরও ডিজিএম আশিকুল ইসলামের নির্দেশে ওইসব গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এবিষয়টি মামলার শুনানীকালে বিজ্ঞ আদালতকে অবগত করা হয়। বিজ্ঞ আদালত ডিজিএম আশিকুল ইসলামকে সতর্ক করেন এবং দ্রুত ওইসব গ্রাহককে জরিমানা ছাড়াই পুনঃসংযোগ দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু ডিজিএম আশিকুল ইসলাম আদালতের নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নতুন করে অবৈধভাবে গ্রাহকদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে এহেন কার্যকলাপ করায় স্থানীয় গ্রাহকদের মধ্যে ক্ষোভে সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য অভিযুক্ত ডিজিএম আশিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২:১১:২৩ ৭০৪ বার পঠিত