লালমোহন প্রতিনিধি ॥
ভোলার লালমোহনের চরভূতা ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের নমগ্রাম। এ গ্রামের অন্তত আড়াই শত নারী হোগলা পাতায় নিজেদের ভাগ্য বদলানোর চেষ্টা করছেন। বছরের পর বছর ধরে নমগ্রামের নারীরা হোগলা পাতা দিয়ে তৈরি করছেন বিছানা। এ গ্রামের কোনো নারী ১০ বছর, আবার কেউ ৩০ বছর ধরে হোগলা পাতা দিয়ে বিছানা তৈরির সাথে জড়িত। এসব নারী নিজেদের বাড়িতে বসেই এগুলো তৈরি করেন। এগুলো বিক্রির টাকা দিয়ে স্বামীকে সহযোগিতা করেন সংসার চালানোর জন্য।
নমগ্রামের ৩৫ বছর বয়সী বিশাখা রানী ও ৩০ বছর বয়সী চায়না রানী। তারা আপন দুই বোন। তাদের দু’জনের মধ্যে বড় বিশাখা রানী। তার স্বামী সেলুনে কাজ করেন। তাদের সংসারে আছে এক ছেলে ও এক মেয়ে। কেবল স্বামীর আয়ে সংসার চালাতে কষ্ট হয়, তাই হোগলা পাতার বিছানা বুনে বাড়তি আয়ের পথ খুঁজে নেন বিশাখা রানী। তার ছোট বোন চায়না রানী। তার বিয়ে হয়েছিল। তবে বিয়ের তিন বছরের মাথায় চায়নাকে ফেলে রেখে চলে যান স্বামী। এরপর থেকে বোনের সাথেই বাস করতে শুরু করেন চায়না রানী। তার এক সন্তান। বেঁচে থাকার তাগিদে চায়নাও জড়ান হোগলা পাতার বিছানা বুননের কাজে। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে তারা দুই বোন মিলে তৈরি করছেন বিছানা।
বিশাখা রানী ও চায়না রানী বলেন, প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে ১০টা এবং বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হোগলা দিয়ে বিছানা বোনার কাজ করি। দুই বোন মিলে দৈনিক আটটির মতো বিছানা তৈরি করতে পারি। যার প্রতিটি বিক্রি করি ৬০ টাকা করে। এসব বিছানা বাড়িতে এসে নিয়ে যান বেপারীরা। হোগলা পাতার তৈরি এসব বিছানা বিক্রির টাকায় কোনো রকমে চলছে আমাদের সংসার।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনামিকা নজরুল জানান, দেশের অসহায় জনগোষ্ঠীর জন্য সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা চালু রয়েছে। তাই ওইসব নারী আমার সাথে যোগাযোগ করলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেয়ার চেষ্টা করব।
বাংলাদেশ সময়: ২১:২০:১৬ ৩১০ বার পঠিত