ভোলায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ

প্রচ্ছদ » অপরাধ » ভোলায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ
শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩



---

স্টাফ রিপোর্টার ॥

আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভোলা গজনবী স্টেডিয়ামের সীমানা প্রাচীর নির্মানের মাধ্যমে জমি দখল করার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে ভোলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ভোলা পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বজলুর রহমান বলেন, গজনবী স্টেডিয়ামের কর্তৃপক্ষ এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখা তার ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তি দাবি করে বলেন, ৬-৩-১৯৮৮ সালে আমি আমার শ্বশুর পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মৃত বসির আহমেদের কাছ থেকে এওয়াজনামার মাধ্যমে দলিল নেই। যাহা জে,এল নম্বর-৪২, মৌজা- বাপ্তা মধ্যে, এস.এ ২৭৩৩ নম্বর খতিয়ানে ৫২৪৭ দাগে অবস্থিত। জমির পাশ্বে ভোলা গৎনবী স্টেডিয়াম সীমানা রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ি জমি ভোগ দখল করে আসতেছি কিন্তু ২০১৩ সালে আমি এবং আমার পাশ্বর্বতী মোঃ লাল মিয়া জমিতে সীমানা প্রাচীরের কাজ করতে গেলে ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আমদের বাঁধা প্রদান করে। আবেদনের ফলে সরকারি সার্ভেয়ার সরজমিনে পরিমাপ করে দাগের সীমানা চিহ্নিত করে ২১-৪-২০১৩ তারিখে আমাদের বুঝিয়ে দেন।

আমরা আমাদের সীমানায় পুনরায় কাজ করতে গেলে ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আবারও বাধা প্রধান করে। এমতাবস্থায় আমরা মোঃ লাল মিয়া ১নং এবং আমি বজলুর রহমান ২নং বাদি হয়ে ২০১৯ সালে ১৪-০৭-২০১৯ তারিখে দেং নং-২২১/২০১৯ মোকাম ভোলা সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মোকদ্দমা রুজু করি। ভোলা গৎনবী স্টেডিয়ামের কর্তৃপক্ষ আদালতে কোন কাগজ দাখিল না করায় ০৩-১০-২০২১ তারিখে আমরা মোকাম ভোলা সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার ডিগ্রী দাবীতে আবেদন করি। বিজ্ঞ আদালত ০৩-১০-২০২১ তারিখে অন্তর্বতীকালীন স্থিতিবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ প্রদান করেন। বিগত ২৫-০৮-২৩ তারিখে ভোলা গৎনবী স্টেডিয়ামের কর্তৃপক্ষ ভোলা জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্দেশে প্রকল্প প্রকৌশলীদের সহোযগিতায় এবং প্রকল্প প্রকৌশলী নাজিমউদ্দিন এবং রফিকুল ইসলাম ঠিকদারী প্রতিষ্ঠান রানা-অর্ক (জেভি), বিজ্ঞ আদালতের স্থিতিবস্থা বজায় রাখার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আমাদের সীমানা ভেঙ্গে গজনবী স্টেডিয়ামের সীমানা প্রাচীর নির্মান শুরু করে। যাহা আদালত অবমাননার সামিল।

গত ২৭-০৮-২০২৩ তারিখ জেলা প্রশাসক বরাবর স্থিতিবস্থা বজায় রাখা প্রসঙ্গে আবেদন করলে কাজটি বন্ধ রাখে। ভোলা গজনবী স্টেডিয়ামের কর্তৃপক্ষ ভোলা জেলা ক্রীড়া সংস্থা তাদের জমির কোন কাগজের ছায়ালিপি দাখিল না করার কারণে ০৫-০৯-২০২৩ তারিখে একতরফা বিচারের তারিখ ছিলো। ভোলা গজনবী ষ্টেডিয়ামের কর্তৃপক্ষ ভোলা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও জেলা প্রশাসকের ব্যস্থতার কারণ উল্লেখ করে বিজ্ঞ আদালতে কাগজ জমা দিতে পারেন নাই বলে জনান।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে বিজ্ঞ আদালতে মোকদ্দমা রুজু করার পর থেকে আজ অবদি ২১টি তারিখ মোকদ্দমা পরিচালিত হয় এবং ৩জন জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এর পূর্বেও ২০১৭ সালে ভূমি অফিসে জমির কোন কাগজের ছায়ালিপি দাখিল করেন নাই। ভোলা গজনবী স্টেডিয়ামের কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসকের ব্যস্ত থাকার কারণ দেখিয়ে লিখিত জবাব দাখিলের জন্য বিজ্ঞ আদালতে সময় প্রার্থনা করে। বিজ্ঞ আদালত সময় প্রার্থনা মঞ্জুর করে। আমরাও চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার ডিগ্রী দাবীতে বিজ্ঞ আদালতে আবেদন করি। বিজ্ঞ আদালত আমাদের আবেদন মঞ্জুর করেন এবং একজন আইনজিবিকে নিয়োগ করেন। তিনি গত ১৪-৯-২০২৩ তারিখে সরজমিনে এসে তদন্ত করেন।

কিন্তু হটাৎ গত ১৭-৯-২০২৩ তারিখে তরিগড়ি করে আবারও বিজ্ঞ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সীমানা প্রাচীর নির্মান শুরু করে। পূর্বে আমরা বিজ্ঞ আদালতের স্থিতিবস্থা এর কথা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে জানাই তখন কাজ বন্ধ রাখে কিন্তু পূনরায় কাজ শুরু করতে গেলে আমাদেরকে বিভিন্ন হুমকি প্রদান করে। যেখানে ভোলা গজনবী ষ্টেডিয়ামের কর্তৃপক্ষ ভোলা জেলা ক্রীড়া সংস্থা একটি সরকারী প্রতিষ্ঠান এবং এর সভাপতি জেলা প্রশাসক। যিনি জেলার রক্ষাকারী প্রথম ব্যাক্তি সেখানে আমাদের দখলে থাকা জমি আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সীমানা প্রাচীর নির্মান করার মাধ্যমে বেদখল করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ক্রীড়া সংস্থা বা সরকারের যে কোন প্রতিষ্ঠানের জমির প্রয়োজন হলে সরকারী নিয়মতান্ত্রিক অনুযায়ী জমির ফয়সালা বা শুরাহ করার বিধান রয়েছে। কিন্তু ভোলা গজনবী ষ্টেডিয়ামে কর্তৃপক্ষ এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখা, বাংলাদেশের আইন এবং বিজ্ঞ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আমাদের সীমানা ভেঙ্গে তাদের সীমানা প্রাচীর নির্মান শুরু করে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি তাদের মালিকানা জমি পাওয়ার দাবি জানান।

তবে, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সেক্রেটারি ইয়ারুল আলম লিটন বলেন, গজনবী স্টেডিয়াম একটা সার্বজনীন প্রতিষ্ঠান। স্টেডিয়ামের সীমানায় কর্তৃপক্ষ এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কাজ চলছে আড়াই বছর ধরে। আর এখন সেই সীমানার জমি যদি কেউ দাবি করে সেটা অযৌক্তিক। আদালতের নিষেধাজ্ঞার কোন কাগজ পাননি বলেও দাবি করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২২:১২:১৯   ১৭৮ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

অপরাধ’র আরও খবর


ভেদুরিয়ায় ১৪ মাস ধরে জেলে নিখোঁজ, স্ত্রীর ধারণা গুম
ভোলার উত্তর দিঘলদি জমিজমা বিরোধের জেরধরে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম আহত-৪
ভোলায় হত্যাচেষ্টা মামলায় ৪ জনকে কারাদন্ড
ইলিশা লঞ্চঘাটে সাড়ে চার হাজার ইয়াবাসহ আটক-১
লালমোহনে বাসের চাপায় শিশুসহ নিহত ২
রাজাপুরে ছুরিকাঘাতে যুবককে হত্যা
আলীনগরে লাউগাছের সঙ্গে এ কেমন শত্রুতা!
বোরহানউদ্দিনে অবৈধভাবে নদীর পাড়ের মাটি কাটায় ৬জন আটক
লালমোহনে ছাত্রলীগ নেতার বাসায় ‘বোমা বানাতে গিয়ে’ বিস্ফোরণে ‘কারিগর’ নিহত
মনপুরায় এক রাতে কৃষকের ১৩ গরু চুরি

আর্কাইভ