লালমোহন প্রতিনিধি ॥
ভোলার লালমোহন উপজেলায় প্রাকৃতিক গাছ-গাছালির মিশ্রণে তৈরি ভেষজ শরবত প্রিয় হয়ে উঠেছে স্থানীয় মানুষজনের কাছে। এ শরবত পান করে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যায় উপকৃত হচ্ছেন বলে জানান তারা।
লালমোহন পৌরশহরের কাঁচাবাজার সংলগ্ন স্থানে গত ৬ মাস ধরে এ শরবত বানিয়ে বিক্রি করছেন আব্দুর রহমান নামে এক ব্যক্তি। সকাল ৮টা থেকে শুরু করে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে তার এ শরবত বেচাকেনা। এ ভেষজ শরবত বেচেই চলে আব্দুর রহমানের সংসার।
প্রাকৃতিক এই শরবতের কারণে এখন পৌরশহরের উত্তর বাজারে সুপরিচিত হয়ে উঠেছেন তিনি। প্রতিদিন শরবত পান করতে আব্দুর রহমানের কাছে ভিড় করছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অন্তত শ’খানেক লোক।
জানা যায়, আব্দুর রহমান লালমোহন উপজেলার চরভূতা ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের জনতা বাজার এলাকার মো. শাহজাহানের ছেলে। বর্তমানে পৌরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ডের ওয়েস্টার্ন পাড়া এলাকায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাস করছেন। পৌরশহরের কাঁচা বাজার এলাকায় শরবত বিক্রির আগে লালমোহনের দক্ষিণ বাজারে বিগত সাড়ে সাত বছর ধরে ঔষধি এ শরবত বিক্রি করেছেন আব্দুর রহমান।
তার এই শরবত মিশ্রণ রয়েছে- অ্যালোভেরা, আমলকি, বহেরা, হরতকি, তাল মাখনা, জংলা তিল, বেলের সুর, শিমুল দানা, অর্জুন গাছের বাকল, শতমূল, তোকমাই, চিরোতা ও আখের গুড়সহ নানা ধরনের প্রাকৃতিক উপকরণ। নিজ হাতে এসব উপকরণ দিয়ে শরবত বানান আব্দুর রহমান নিজেই। তিনি ১০ টাকা, ২০ টাকা ও ৫০ টাকা মূল্যে গ্লাসে করে এসব শরবত বিক্রি করেন।
আব্দুর রহমানের কাছ থেকে নিয়মিত শরবত পান করেন লালমোহনের একটি কলেজের প্রভাষক হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি এ শরবত শরীরের জন্য অনেকটা ভালো। এজন্য গত এক মাস ধরে এখানে এসে নিয়মিত এই শরবত পান করছি।
উত্তর বাজারের চা দোকানি মো. বেল্লাল জানান, প্রতিদিন সন্ধ্যায় আমি এক গ্লাস করে এই শরবত পান করি। দীর্ঘদিন ধরে এই শরবত পান করে এখন অভ্যাস হয়ে গেছে। খেয়ে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার উপকারও পাচ্ছি।
প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি করা ঔষধি শরবতের ব্যাপারে বিক্রেতা আব্দুর রহমান বলেন, এ শরবত বিভিন্ন প্রকার ভেষজ গাছ-গাছালি দিয়ে তৈরি করি, যা মানুষের দেহে কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না। বিশেষ করে এ শরবত; গ্যাস্ট্রিক, আমাশয়, পেট ফোলা, বদহজমসহ পেটের যাবতীয় সমস্যা এবং শারীরিক দুর্বলতাসহ বহু ধরনের সমস্যা নিরাময়ে কাজ করে।
তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন ৮০ থেকে ১০০ গ্লাস শরবত বিক্রি করতে পারি। টাকার হিসেবে দেড় থেকে দুই হাজার টাকার মতো বিক্রি হয়। যেখান থেকে খরচ বাদে প্রতিদিন গড়ে তিন থেকে চারশত টাকা লাভ হয়। লাভের এই টাকা দিয়েই সংসার পরিচালনা করছি। সংসারে স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। এই শরবত বিক্রির আয়ের টাকায় সবাইকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেকসের মেডিকেল অফিসার ডা. অতনু মজুমদার বলেন, যদি এ শরবতে প্রাকৃতিক ভেষজ উপাদান থেকে থাকে তাহলে তা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তবে এসব উপাদান সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৪০:৩৩ ১৮৯ বার পঠিত