বিশেষ প্রতিনিধি ॥
ভোলায় আবিষ্কৃত গ্যাস পাইপলাইনের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সরবরাহ এবং শিল্পায়নের লক্ষ্যে ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন করে সম্ভাব্যতা যাচাই (ফিজিবিলিটি) করা হয়েছে। মঙ্গলবার মাঠ পর্যায়ের যাচাই শেষ হয়। এটি প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সেতু মন্ত্রণালয়ে সমীক্ষা প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এক মাস ২৫ দিনের জরিপে সেতুর সম্ভাব্যতার সব দিক বিবেচনায় আনা হয়েছে। ভারতীয় কোম্পানি টিপসা ও দেশিও কো¤পানি নলেজ ম্যানেজমেন্ট কনসাল্টিং (কেএমসি) লিমিটেড যাচাই কাজ করছে। সমীক্ষা প্রতিবেদনে সেতুর স্থান আগের নকশা থেকে দেড় কিলোমিটার সরে যাওয়ার পাশাপাশি দূরত্ব এক কিলোমিটার কমছে। সমীক্ষার প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সুখেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী জানান, সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীন কেএমসি লিমিটেড ৫ এপ্রিল থেকে ভোলা ও বরিশালের তেঁতুলিয়া নদীতে সমীক্ষা চালায়। মাঠের সমীক্ষা শেষ হয়েছে। এর আগে ২০২০ সালে প্রথম সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়। ২০১৮ সালে বরিশাল সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন। সেতু বিভাগ সূত্র জানায়, ২০২০ সালে তিন দফা সমীক্ষার পর প্রতিবেদন দেওয়া হয়। ২০২১ সালের ৫ ডিসেম্বর সেতু মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের টিম সরেজমিন সেতু নির্মাণের সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শন করে। কিন্তু চার বছর পার হলেও এ সেতু নির্মাণের কোনো অগ্রগতি নেই।
এদিকে ভোলায় আবিষ্কৃত গ্যাস রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহের ব্যাপারে সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ক্ষেত্রে তিনটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর অন্যতম ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণ। এজন্য তিন বছর আগে একনেকে ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। বর্তমান সমীক্ষা কার্যক্রমের টিম লিডার জানান, আগের সমীক্ষার সঙ্গে তাদের কোনো স¤পর্ক নেই। তারা নতুন সমীক্ষা করছেন। নদীর গতিপথ কিছুটা পরিবর্তন হওয়ায় ভোলার ভেদুরয়িা ফেরিঘাট দিয়ে সেতু না করে দেড় কিলোমিটার দক্ষিণে চন্দ্র মোহন মৌজায় সেতু নির্মাণ করলে ব্যয় কমে আসবে।
এ ছাড়া ১৬ দশমিক ৩ কিলোমিটার পথের জমি ৩ হাজার ৩৫৭ দশমিক ৮ একর জমি অধিগ্রহণ করা প্রয়োজন হবে। একই সঙ্গে এ সেতু নির্মাণকালে ২৩১টি বাড়ি ও দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ইতোমধ্যে সেতু নির্মাণের সাইড নকশা তৈরি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরী জানান, এ সেতু হলে এ অঞ্চলের মানুষ পদ্মা সেতুর সুফল পাবে। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খুলনা পর্যন্ত সহজ যোগাযোগ স্থাপিত হবে।
ভোলায় গ্যাসের মজুত বিষয়ে বাপেকসের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের মহাব্যবস্থাপক আলমগীর হোসেন জানান, গ্যাস অলস পড়ে আছে। এর ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ৯টি কূপেই গ্যাসের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। এ ছাড়া তারা আরও পাঁচটি কূপ খনন করতে যাচ্ছেন। সুত্র: দৈনিক যুগান্তর
বাংলাদেশ সময়: ০:২৫:১৩ ১৬৬৫ বার পঠিত