হারিয়ে যাওয়ার ২০ বছর পর ফিরে এলেন দৌলতখানের মুক্তা

প্রচ্ছদ » জেলা » হারিয়ে যাওয়ার ২০ বছর পর ফিরে এলেন দৌলতখানের মুক্তা
মঙ্গলবার, ৯ মে ২০২৩



দৌলতখান প্রতিনিধি ॥

ভোলার দৌলতখানে হারিয়ে যাওয়ার ২০ বছর পর স্বামী সন্তানসহ নিজ বাড়িতে ফিরে এসেছেন মুক্তা নামের এক তরুণী। উপজেলার চরশুভী গ্রামের আবদুল লতিফ পেশকার বাড়ির মৃত তাজুল ইসলামের মেয়ে মুক্তা। দেশের বিভিন্ন স্থানে বছরের পর বছর অনেক খোঁজ করেও না পাওয়ার কষ্ট নিয়েই সাত বছর আগে তার বাবা মারা যান। বড় ভাই গিয়াস উদ্দিনও অনেক আগেই অন্ধ ও মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন।

হারানো মেয়েকে কাছে পেয়ে মুক্তার মা মনোয়ারা বেগম আনন্দের অশ্রুতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। মুক্তাকে এক নজর দেখার জন্য এলাকার নারী পুরুষরা পেশকার বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন।

৯ বছর বয়সে মুক্তা তার খালার সঙ্গে ঢাকার সায়েদাবাদ এলাকায় বেড়াতে যায়। একদিন বাসা থেকে বের হলে সে হারিয়ে যায়। সে তার নিজ বাড়ির নাম, ইউনিয়ন ও উপজেলার নাম কিছুই জানে না। খালার সঙ্গে যে বাসায় বেড়াতে গিয়েছে সে বাসার ঠিকানাও কাউকে বলতে পারেনি। সে শুধু বলতে পারত গুপ্তগঞ্জ ঘোষের হাটের কাছে তার বাড়ি।

---

সায়দাবাদের রাস্তায় ঘুরতে দেখে সালাউদ্দিন নামে এক ব্যক্তি মুক্তাকে তার বাসায় নিয়ে যান। কোনো ঠিকানা না পাওয়ায় সালাউদ্দিন মুক্তাকে আদর যতেœ লালন পালন করতে থাকেন। দেখতে সুদর্শনা মুক্তাকে সালাউদ্দিনের ছোট ভাই পারভেজের সঙ্গে বিয়ে দেন। পারভেজ ঢাকার নওয়াবপুর এলাকায় একটি ওয়ার্কশপে চাকরি করেন। ওই এলাকায়ই তিনি স্ত্রী মুক্তা ও তাদের দুই কন্যাসন্তান আকসারা (১৩) ও ফাবিহাকে (১২) নিয়ে সুখের সংসার পেতেছেন।

যেভাবে সন্ধান মিলল মুক্তারঃ

সোমবার সরেজমিন দেখা যায়, মুক্তাকে দেখার জন্য স্বজন ও এলাকাবাসীর ভিড় লেগেই আছে। স্বজন ও এলাকাবাসী জানান, গত ৫ মে মুক্তার স্বামী পারভেজের বন্ধু আসাদ নামে এক ব্যক্তি ভোলায় একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে দাওয়াতে আসেন। অনুষ্ঠানে মুক্তার ছবি দেখিয়ে গুপ্তগঞ্জ ঘোষের হাটের সন্ধান চান। ওই দিনই গ্রামীণ ব্যাংকের এক স্টাফ তাকে ঘোষের হাটে নিয়ে আসেন।

অনেক খোঁজার পর চরশুভীর পেশকার বাড়ির (মুক্তার বাপের বাড়ি) সন্ধান পেয়ে যান। এরপর মুক্তার ভাই সোহাগ গত শনিবার মুক্তাকে তার দুই মেয়েসহ ঢাকা থেকে নিয়ে আসেন। এখন বাড়ির সবাই ও এলাকাবাসী উন্মুখ হয়ে আছে মুক্তার স্বামী পারভেজ এলেই তাকে ব্যাপক আয়োজনে বরণ করে ভোজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।

হারানো মেয়েকে কাছে পেয়ে মুক্তার মা মনোয়ারা বেগম আনন্দে বারবার চোখের পানি মুছছিলেন। তিনি বলেন, ২০ বছর ধরে মেয়েকে ফিরে পাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছিলাম।

ভোলা ওবায়েদুল হক কলেজের সহকারী অধ্যাপক ওই বাড়ির কামরুল আহসান হিরন ও তার ভাই প্রাথমিক শিক্ষক মামুন আবদুস সালাম বলেন, মেয়েটি ২০ বছর পর ফিরে আসায় এলাকায় আনন্দের আমেজ বইছে। তার স্বামী এলে আমরা তাকে উৎসবমুখর পরিবেশে বরণ করব।

 

বাংলাদেশ সময়: ২২:৪৪:০৬   ১৬৩ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

জেলা’র আরও খবর


অচিরেই ভারতের তাঁবেদার শেখ হাসিনার দুঃশাসন দূর হবে: তারেক রহমান
ক্যাপসিকাম চাষে ঝুঁকছেন ভোলার কৃষকরা
ভোলায় তরমুজের ক্রেতা নাই
ভোলায় তিনদিন ব্যাপী সাংবাদিকদের বেসিক জার্নালিজম ট্রেনিং এর উদ্বোধন
ভোলায় নানান আয়োজনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত
মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভোলায় বিএনপির আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
ভোলায় রাসূল (সাঃ)কে নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল
ভোলা ইসলামী আন্দোলনের আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত
বোরহানউদ্দিনে ইলিশ মাছ রান্না না করায় মাকে কুপিয়ে হত্যা করল ছেলে
ভোলায় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত



আর্কাইভ