বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

এলসি, দ্রব্যমূল্য, অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা ও উত্তরণ

প্রচ্ছদ » অর্থনীতি » এলসি, দ্রব্যমূল্য, অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা ও উত্তরণ
সোমবার, ১৩ মার্চ ২০২৩



 

---

এস,এম, রাজীব হোসাইন

২০২২ সাল ছিলো বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মহামারি উত্তর স্থবিরতা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা। ২০২৩ সাল শুরু কিন্তু সারা দুনিয়াতে তখন শুরু হয়ে গেছে মূল্যস্ফীতি, যা থেকে বাদ পড়েনি বাংলাদেশও। যার ফলে বাংলাদেশে ২০২৩ সাল শুরু হলো কিছুটা উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ হিসাবে চলতি অর্থবছরের মূল্যস্ফীতি ছিল আট দশমিক ৯১ শতাংশ। এই সংকটময় পরিস্থিতিতে ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়ায় ডলার ঘাটতি। আমদানি-রপ্তানির জন্য প্রয়োজনীয় ডলার ব্যাংকগুলো দিতে না পারায় এবং প্রয়োজনীয় আমদানির ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিধিনিষেধের কারণে এখন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) বা ঋণপত্র খুলতে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। দিনকে দিন এই সংকট তীব্রতর হচ্ছে।
বাংলাদেশের সাধারণ জনগনের কাছে যেখানে ‘এলসি’ শব্দটা অপরিচিত ছিল, আজ সেটা নিত্য বাক্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এলসি নিয়ে সাধারন মানুষকে কিছু সাধারণ ধারনা দেয়া যাক।
ইংরেজি: Letter of credit সংক্ষেপে এলসি হল আমদানিকারকের পক্ষে এবং রপ্তানিকারকের অনুকূলে আমদানিকৃত পণ্যের মূল্য পরিশোধের নিশ্চয়তা। অর্থাৎ, আমদানিকারকের পক্ষে এবং রপ্তানিকারকের অনুকূলে আমদানিকৃত পণ্যের মূল্য পরিশোধের নিশ্চয়তা প্রদান করে আমদানিকারকের ব্যাংক যে পত্র ইস্যু করে তাকে প্রত্যয়পত্র বা এলসি বলে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বরে ভোগ্যপণ্যের এলসি খোলার হার ১৪ শতাংশ কমেছে। আর নিষ্পত্তি কমেছে ৯ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সিমেন্ট শিল্পের মূল উপাদান ক্লিংকার ও চুনাপাথরের মতো মধ্যবর্তী পণ্যের জন্য এলসি খোলার পরিমাণ ৩৩ শতাংশ কমে ২ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। মধ্যবর্তী পণ্য আমদানির জন্য এলসির নিষ্পত্তিও কমেছে।
শিল্পের কাঁচামালের ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি একই। জুলাই-ডিসেম্বরে শিল্পের কাঁচামালের জন্য এলসি খোলার পরিমাণ ২৭ শতাংশ কমে ১২ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এই দিকে ডলার সংকটে পণ্য এবং বিদ্যুৎ আমদানিতে ও সংকট দেখা দেয়। যার ফলে সরকার পেট্রোলিয়াম, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করতে বাধ্য হয়। তাই আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির উপর উৎপাদন ব্যয় ও বেড়ে যায়। ফলে ব্যবসায়ীরাও বাধ্য হয়েই পণ্য ও সেবার দাম বাড়ায়।
সমাধান? আমি মনে করি, মূল্যস্ফীতি মোকাবিলা করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোকে কিছু নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া, সেই সাথে সুস্পষ্টভাবে তা সংশ্লিষ্টজনদের কাছে পৌঁছে দেয়া উচিত। একই সঙ্গে নীতিনির্ধারকদের এমন সব মধ্যমেয়াদি রাজস্ব পরিকল্পনা করা প্রয়োজন, যেগুলোর গ্রহণযোগ্যতা থাকবে এবং দরিদ্র ও দারিদ্র্যের ঝূঁকিতে আছে এমন পরিবার তা থেকে সর্ব্বোচ সহায়তা পাবে।
লেখকঃ মোঃ রাজিব হোসাইন

এম,এস,এস (মাস্টার্স) অর্থনীতি,

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বাংলাদেশ সময়: ২৩:১৩:৩৩   ৩৪৪ বার পঠিত