চরফ্যাশনে মেঘনায় প্রভাবশালীদের অবৈধ বালু উত্তোলন, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

প্রচ্ছদ » অপরাধ » চরফ্যাশনে মেঘনায় প্রভাবশালীদের অবৈধ বালু উত্তোলন, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার
বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩



চরফ্যাশন প্রতিনিধি ॥
চরফ্যাশন উপজেলার বেতুয়ায় মেঘনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট  থেকে ১০-১২টি ড্রেজার দিয়ে চলছে অবাধে বালু উত্তোলন। আর সেই বালু নিতে মেঘনার বুকে নেমেছে অন্তত ২০টি বাল্কহেড। বাল্কহেডে করে এসব বালু বেতুয়াসহ চরফ্যাশন উপজেলার বেড়িবাঁধ সংলগ্ন বিভিন্ন পয়েন্টে পাহাড়ের মতো স্তুপ আকারে রেখে বিক্রি হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে। জানা গেছে, চরফ্যাশন উপকূলের আশপাশে কোনো বালু মহাল বা বালু ইজারা না থাকলেও ম্যানেজ প্রক্রিয়ায় অবৈধভাবে এই বালু উত্তোলন করছে একাধিক চক্র। অবৈধ এ বালু ড্রেজিং বন্ধে প্রশাসন কিংবা কোস্টগার্ডের কোনো তৎপরতা নেই বলেও অভিযোগ রয়েছে।

---

জানা গেছে, উপজেলার বেতুয়া লঞ্চঘাটের পশ্চিম পাশের অদূরে মেঘনার বুকে জেগে ওঠা মাঝের চরের ঢাল সংলগ্ন নদীর তলদেশ থেকে ১০-১২টি ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে বাল্কহেডে করে বেতুয়ায় নিয়ে আসছে বালুখেকো ব্যবসায়ীরা। অবৈধভাবে এসব বালু উত্তোলনে চরফ্যাশনের একাধিক প্রভাবশালীসহ স্থানীয়রা জড়িত বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। স্থানীয়রা জানান,প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যা স্থানীয় তাজুল ইসলাম, বেলায়েত হোসেন, আকতার হোসেন, নাসির, নোমান খা, মনির ও বেলালসহ একাধিক চক্রের সদস্য ড্রেজিং শেষে বালুর জাহাজ বা বাল্কহেড ভর্তি করে বালু নিয়ে আসে। পরবর্তিতে এসব বালু এলাকাবাসীদের কাছে অথবা বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে।
তবে ভোলা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে চরফ্যাশনে কোন বালু মহাল না থাকায় কোনো ড্রেজার বা প্রতিষ্ঠানকে বালু কাটার অনুমতি দেয়া হয়নি। অথচ অনুমতি না নিয়েই উপজেলা বালুর জাহাজ সমিতি ও বালু ব্যবসায়ী চক্র কর্তৃক প্রভাব বিস্তার করে মেঘনার বুকে এখন অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব পালন করছে।
স্থানীয়রা বলছেন, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অভিযান বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে স্বচ্ছতা না দেখানোয় মেঘনায় বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেটের সদস্যরা রয়েছে ধরা ছোয়ার বাহিরে। ড্রেজার ও বাল্কহেড শ্রমিকরা জানান, তারা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেই বালু উত্তোলন করছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ড্রেজার শ্রমিক জানান, ঘনফুট দরে বাল্কহেডগুলোর কাছে বালু বিক্রি করছেন তারা। আয়তন অনুযায়ী একেকটি বাল্কহেডে ৬ হাজার থেকে ৩০ হাজার ঘনফুট বালুর ধারণক্ষমতা রয়েছে। আর পাইকারি ব্যবসায়ীরা জাহাজ থেকে ৩টাকা ফুট হিসেবে ক্রয় করে অধিক লাভে বিক্রি করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক বাসিন্দারা প্রশ্ন রেখে বলেন, উপজেলা বা জেলা প্রশাসন থেকে মেঘনায় বালু উত্তোলনে কোনো বালুমহাল বা ইজারা না থাকলেও প্রতিদিন মেঘনার তলদেশের লাখ লাখ ফুট বালু লুটে নিচ্ছে প্রভাবশালী মহল। এতে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ।
উপজেলার বেতুয়া, শশিভূষণ, হাজারীগঞ্জ খেজুর গাছিয়া, আবদুল্লাহপুর মিনাবাজার, নীলকমল ঘোসেরহাট,নুরাবাদ গাছিরখালসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, একাধিক ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে বালু ব্যবসায়ীরা। যার ফলে উপজেলার বেড়িবাঁধে ব্লক নেই এমন একাধিক পয়েন্ট নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।
চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল নোমান রাহুল বলেন, চরফ্যাশন উপজেলার উপকূলে মেঘনায় কোনো বালু মহাল অথবা বালু ড্রেজিংয়ে কোনো ইজারা দেয়া হয়নি। জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ারও আশ্বাস দেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২১:২৭:০৫   ৩৪৭ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

অপরাধ’র আরও খবর


সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীরের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভোলায় সমাবেশ
ভোলায় পোস্ট অফিসে আইসক্রিমের ব্যবসা
লালমোহনে আবাসনের ঘর জবর দখলের অভিযোগ
ভোলায় যাত্রীবাহী লঞ্চ থেকে ৮৫ মণ মাছ জব্দ
ঘুষ ছাড়া কাজ হয়না ভোলার বিএমইটি অফিসে॥ প্রতিদিন ঘুষের আয় প্রায় অর্ধলক্ষ টাকা!!
ভোলায় ফিল্মি স্টাইলা অপহরণ ॥ কতিপর উদ্ধার
ফুঁক দিয়েই সব সমস্যার সমাধান করেন ফরিদ!
প্রেমিকের সঙ্গে ‘বিয়ে’ রফাদফায় এসে কিশোর গ্যাংয়ের হাতে ধরা তরুণী, অতঃপর…
ভোলায় যৌতুকের মামলা দেওয়ায় স্ত্রীকে তালাক দিলো স্বামী ॥ শিশু সন্তান নিয়ে দুশ্চিতায় হাফছা
ভোলায় যুবকের রহস্যজনক ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার



আর্কাইভ