ভোলার মেঘনায় জাহাজডুবি ও বিআইডব্লিউটিএ’র সক্ষমতা

প্রচ্ছদ » সম্পাদকীয় » ভোলার মেঘনায় জাহাজডুবি ও বিআইডব্লিউটিএ’র সক্ষমতা
শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২২



দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা ভোলার মেঘনা নদীতে জ্বালানি তেলসহ ডুবে যাওয়ার ৪ দিন পরও জাহাজটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। কোস্ট গার্ড জানিয়েছে, বুধবার বিকেলে উদ্ধারকারী জাহাজ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। বৃহ¯পতিবার সকাল থেকে জাহাজটি টেনে তোলার জন্য প্রস্তুতিমূলক কাজ চলছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডবিব্লউটিএ) সূত্রে জানা গেছে, সেখানে নদীতে প্রচন্ড স্রোত, তাই বিশেষ কিছু সময়ে কাজ করতে হয়। তারা দ্রুতগতিতে কাজটি করার চেষ্টা করছে।
ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জাহাজ ডুবে যাওয়া অঞ্চলটি ইলিশের অভয়াশ্রমের মধ্যে পড়েছে। জাহাজটি দ্রুত উদ্ধার কিংবা জাহাজে থাকা জ্বালানি তেল অপসারণ না করার কারণে ইলিশের অভয়ারণ্যের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
যদিও কোস্ট গার্ডের একটি দল নদীতে ছড়িয়ে পড়া তেল অপসারণে গত দুদিন ধরে কাজ করে আসছে। তবে জাহাজটির অক্ষত ট্যাংকারগুলোতে থাকা তেল কোনভাবে বেরিয়ে এলে নদীর জীববৈচিত্র্যেরও ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। আবার জাহাজটি ওপরে না ওঠানোর কারণে ঠিক কী পরিমাণ তেল নদীতে ছড়িয়ে পড়েছে, সে সম্পর্কেও কার্যত কোন ধারণা করতে পারছে না সংশ্লিষ্টরা।
এছাড়া জোয়ার-ভাটার কারণে জাহাজ থেকে বেরিয়ে পড়া তেল দ্রুতই সমুদ্রের দিকে চলে যাচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা গেছে, সাগরের মোহনাটি সামুদ্রিক আইনের অধীন। এ আইন অনুযায়ী, কুয়াশা দেখা দিলে জাহাজ চালানোর কোন সুযোগ নেই। এ কারণে জাহাজটি আইন লঙ্ঘন করেছে বলা যায়। প্রশ্ন রয়েছে চালকের দক্ষতা ও জাহাজের ফিটনেস নিয়েও। ডুবে যাওয়া জাহাজটি পদ্মা অয়েল কো¤পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ এসএইচআর নেভিগেশন কো¤পানি লিমিটেডের। আমাদের প্রত্যাশা, নেভিগেশন কো¤পানিটি তাদের চুক্তি কতটা মেনে চলেছে, তদন্তে সেটি খতিয়ে দেখা হবে।
যে কোন কারণেই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। দুর্ঘটনা কবলিত যানটি দ্রুত উদ্ধার করতে পারলে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা কম থাকে। কিন্তু এখানে উদ্ধার কাজের দীর্ঘসূত্রতা দেখা যাচ্ছে। আর এ দীর্ঘসূত্রতার কারণ হলো, ডুবে যাওয়া ৩২০ টন ওজনের জাহাজটি উদ্ধারে বিআইডব্লিউটিএ’র সক্ষমতা নেই। বেসরকারি উদ্ধারকারী জাহাজের সহযোগিতা নিতে হচ্ছে।
দেশে দেড় হাজার টনের বেশি সক্ষমতার নৌযানের চলাচল আছে বলে জানা যাচ্ছে। কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো, বিআইডব্লিউটিএ’র উদ্ধারকারী জাহাজের সর্বোচ্চ উত্তোলনক্ষমতাই হচ্ছে ২৫০ টন। নৌযানের আকার এবং নৌপথের অবস্থা বিবেচনায় উদ্ধারকারী জাহাজ থাকা জরুরি। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএ নতুন জাহাজ কেনার ব্যাপারে কার্যকর কোন সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নেয়নি।
আমরা বলতে চাই, বিআইডব্লিউটিএ’র সক্ষমতা বাড়াতে হবে। তাদের দ্রুত নতুন উদ্ধারকারী জাহাজ কেনার পদক্ষেপ নিতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭:০২:১৫   ২৪৪ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

সম্পাদকীয়’র আরও খবর


ডলার বাজারে অব্যাহত অস্থিরতা
ইন্টারনেট প্যাকেজ নিয়ে প্রতারণা
রাজনৈতিক সংলাপের তাগিদ : সমঝোতার বিকল্প নেই
বাজারে কারসাজি
নৌ দুর্ঘটনা রোধে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করুন
চিকিৎসক ধর্মঘট: রোগীদের জিম্মি করে কর্মসূচি অনৈতিক
নৌযানে অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে পদক্ষেপ নিন
ফিটনেসহীন নৌযান: ভোলা নৌপথে দ্রুত ব্যবস্থা নিন
চরফ্যাশনের ঢালচর বনের ঢাল কারা?
বাজারে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস : সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্তিত্ব দৃশ্যমান হচ্ছে না



আর্কাইভ