তজুমদ্দিনের মেঘনায় অপহৃত ১৫ জেলের ৯জন মুক্তিপনের বিনিময়ে ছাড়া পেয়েছে

প্রচ্ছদ » অপরাধ » তজুমদ্দিনের মেঘনায় অপহৃত ১৫ জেলের ৯জন মুক্তিপনের বিনিময়ে ছাড়া পেয়েছে
মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২২



তজুমদ্দিন ব্যূরো প্রধান ॥
ভোলার তজুমদ্দিনের মেঘনা নদীতে জলদস্যূরা মাছ ধরারত ১৫ জেলেকে অপরহরনের ২দিন পর মুক্তিপণের বিনিময়ে ৯ জন ছাড়া পেয়েছে। শনিবার তজুমদ্দিন উপজেলার জেলে বাড়ি ফিরে এসেছে। অপহরণের এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত জেলেরা থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বৃহ¯পতিবার গভীর রাতে চরজহিরউদ্দিন ও চরমোজাম্মল এলাকার মেঘনা নদীতে মাছ ধরার সময় সশস্ত্র ডাকাতরা অন্তত ১৫টি জেলে-ট্রলারে হামলা চালায়। এসময় দস্যূরা ১৫ জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। বিকাশে মুক্তিপনের টাকা পেয়ে অপহৃত ১৫ জেলের মধ্যে তজুমদ্দিনের ৯ জেলেকে মুক্তি দিয়েছে ডাকাতদল। অপহরনের দুইদিন পর বাড়ি ফিরে আসা এসব জেলেরা হলো, উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের উত্তর চাপড়ী গ্রামের অলি আহমেদের ছেলে আলাউদ্দিন, মোতাহারের ছেলে হাসান, আলী মোস্তফার ছেলে সালাউদ্দিন ও শাহজাহানের ছেলে ইউছুফ, চাঁদপুর ইউনিয়নের মাওলানা কান্দি গ্রামের কাশেম মাজির ছেলে লোকমান, আব্দুল মান্নানের ছেলে হান্নান, মহাজনকান্দি গ্রামের আলমগীরের ছেলে আরিফ, বালিয়াকান্দি গ্রামের মোস্তফা মাঝির ছেলে হাসেম ও ভুলাই কান্দি গ্রামের মোস্তফার ছেলে মিরাজ।
বাড়ি ফিরে জেলেরা জানায়, শুক্রবার গভীর রাতে মুক্তিপন আদায় করে তাদের ইলিশা মাছ ঘাটের দক্ষিন পাশে মাঝির ঘাট নামের একটি নির্জন এলাকায় ডাকাতরা নৌকা হতে নামিয়ে দেয়। পরে তারা শনিবার বিভিন্ন সময়ে বাড়ি ফিরে আসলেও বাকীদের সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। ধারনা করা হচ্ছে এরা অন্য এলাকার হওয়ায় ডাকাতরা তাদের আলাদা স্থানে রাখে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলে জানায়, অপহরণের পর তজুমদ্দিনের নয় জেলেসহ ১৫ জনকে ভোলার তুলাতলির পূর্ব পাশে মেঘনার একটি চরে নৌকার মধ্যে বেঁধে রাখে। শুক্রবার সকালে ভোলার তুলাতলির মাছ ঘাটের শাহিন ও নিরবের মাছের আড়তে ডাকাতিকৃত মাছ ও জাল বিক্রি করা হয়। এ সময় ডাকাতরা শাহিন ও নিরবের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে কথা বলতে শুনেন অপহৃত জেলেরা। মাছ বিক্রির পরে ডাকাতরা আটককৃত জেলেদের ব্যাপক মারধর করে মৎস্য আড়তদার ও স্বজনদের সাথে মুঠো ফোনে কথা বলতে দেন। এ সময় ডাকাতরা জেলেদের জীবিত ফেরত নিতে এক লক্ষ টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করে স্বজনদের বলেন পুলিশকে কোন তথ্য জানালে কাউকে জীবিত ফেরত পাবে না।”
মৎস্য আড়তদার ও স্বজদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি জেলেকে মুক্তির জন্য ডাকাতরা ৩০ থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত মুক্তিপণ নিয়েছে। এসব টাকা পরিশোধের জন্য ডাকাতদল তাদের আটটি বিকাশ নম্বরে পাঠায়। এসব নম্বর গুলো হচ্ছে ০১৭৯১৪৭৬০০৮, ০১৭৯১৬৬৯৯৯৫, ০১৮৭৭২৪৪৬৮৮, ০১৭৫৮১১২৯৫৮, ০১৩১৫৩৯৪৬৫৯, ০১৭৮৮১৮৫৯৭২, ০১৭১৭৭৯২২৫৭, ০১৮১১১৪৪৪৩২. ডাকাতদের দেওয়া এসব নাম্বারে অপহৃতদের স্বজনরা মুক্তিপণের টাকা পরিশোধ করে বলে তারা জানায়।
স্বজনদের দাবী, অপহৃত জেলে পরিবারের কাছে জলদস্যূরা মোটা অংকের মুক্তিপন আদায় করছে। পুলিশি হয়রানীর ভয়ে তারা কাউকে না জানিয়ে অপহৃতদের উদ্ধারে মুক্তিপণ পরিশোধ করছেন। ঘটনার পর এখন পর্যন্ত অপহৃত জেলে পরিবারের পক্ষ হতে প্রশাসনকে অভিযোগ করা হয়নি বলেও জানা গেছে।
হাকিমুদ্দিন নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ওসি শরিফুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন নদীতে পুলিশে নিয়মিত টহল ডিউটি চলছে। আর, অপহৃদের কাছে খোঁজ নিয়ে ডাকাত দলের অবস্থান শনাক্ত করতে কাজ চলছে। আশা করছি, ধরা পড়বে।
তজুমদ্দিন থানার অফিসার ইনচার্জ মাকসুদুর রহমান মুরাদ জানান, অপহৃত ৯ জেলে বাড়ি ফেরার তথ্য পেয়েছি। তাদেরকে আইনগত সহায়তা নেয়ার জন্য বলা হলেও এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। তবে, ডাকাতদের কিছু বিকাশ নম্বর জেলেরা দিয়েছে, আমরা তা যাচাই করে দেখছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩:৫৪:৪৫   ১৫১ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

অপরাধ’র আরও খবর


ভোলায় যাত্রীবাহী লঞ্চ থেকে ১২০ মণ মাছ জব্দ
মনপুরায় গাঁজাসহ এক মুদি ব্যবসায়ীকে আটক
বোরহানউদ্দিনে ইলিশ মাছ রান্না না করায় মাকে কুপিয়ে হত্যা করল ছেলে
ভোলায় সাড়ে ৩ হাজার কেজি অবৈধ মাছ জব্দ করেছে কোস্টগার্ড
মুখে গামছা বেঁধে সিসিটিভি বন্ধ করেও রক্ষা পেল না চোর
মেঘনায় ১৫ হাজার তরমুজ নিয়ে ডুবে গেল ট্রলার, উদ্ধার-৬ নিখোঁজ-১
ভোলায় ইলিশ মাছ ধরার অপরাধে ৭ জেলের কারাদন্ড
ওয়েষ্টার্নপাড়ায় ব্যাংক কর্মকর্তা স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার ॥ স্বামী আটক
ভেজাল সেমাই তৈরি, লালমোহনে ৩ কারখানাকে জরিমানা
ভোলায় বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে ইয়ামিন নামের এক যুবক নিহত



আর্কাইভ