চরফ্যাশন প্রতিনিধি ॥
সাগরে ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ চরফ্যাশনের ২১ ও লালমোহনের ৪ জেলের খোঁজ মেলেনি আজও। দীর্ঘদিন তাদের খোঁজ না মেলায় তাদের জীবিত থাকার আশা ছেড়ে দিয়েছেন স্বজনেরা। অশ্রু ভেজা নয়নে আর কত অপেক্ষার প্রহর গুনবেন তারা।
২৫ জেলে বেঁচে আছেন নাকি সলিল সমাধি ঘটেছে, তাও জানে না পরিবারের কেউ। স্বজনদের হারিয়ে শোকে স্তব্ধ পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের উপার্জনক্ষম একমাত্র ব্যক্তিকে হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন তারা। তবে নিখোঁজদের উদ্ধারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
নিখোঁজ জেলের স্বজনরা জানান, গত ২০ অক্টোবর চরফ্যাশনের নুরাবাদ গ্রামের সৈয়দ মাঝির ট্রলার নিয়ে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যান তারা। ওই ট্রলারে ছিলেন ২১ জেলে। ২৪ অক্টোবর বেলা ১১টার দিকে ঝড়ের কবলে পড়ে তাদের মাছ ধরার ট্রলারটি ডুবে যায়। এ ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন তারা। এরপর থেকে তাদের আর সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এদিকে লালমোহনের ৪ জেলের খোঁজ মেলেনি আজও। লালমোহনের পাঙ্গাশিয়া গ্রামের নিখোঁজ জেলে বাবুলের মা শাহিনুর বেগম (৭০) কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ছেলে আর ফিরে এলো না, তার কোনো খোঁজ পাইনি, শুনেছি ট্রলার ডুবে গেছে। সে কোথায় আছে। তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে কে দেখবে।
একই গ্রামের নিখোঁজ ইব্রাহিমের স্ত্রী ইয়াসমিন বেগম স্বামীর চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন, কাঠমিস্ত্রির কাজ করতেন তিনি (ইব্রাহিম)। কাজ না থাকায় প্রথমবারের মতো সাগরে মাছ ধরতে যান, কিন্তু ঝড়ের দিন তাদের ট্রলার ডুবে যায়। ট্রলারডুবির পর থেকে তাকে ফোনে পাচ্ছি না। স্বামী সেই যে গেল আর ফিরে এলো না, এখন এই দুই ছেলে ও এক মেয়েকে কে দেখবে। কে সংসার চালাবে।
তিনি বলেন, ধার-দেনা করে নতুন ঘর তুলেছি, এখন কে দেখবে আমাদের। পরিবারে তিনি উপার্জন করতেন। এখন আমাদের দেখার কেউ নেই। নিখোঁজদের উদ্ধারের দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে চরফ্যাশন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আল নোমান বলেন, ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ জেলেদের তথ্য পেয়ে আমরা তাদের সন্ধান পেতে মৎস্য বিভাগসহ বিভিন্ন স্পটে যোগাযোগ রাখছি। জেলেদের উদ্ধারের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তাদের সন্ধান পাওয়া গেলে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।