বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

১৯৭০-এর ভয়াল ১২ নভেম্বর এর ঘূর্ণিঝড়ে নিহতদের আত্মার মাগফেরতা কামনা করেন ভোলা জেলা বিএনপির সভাপতি আলমগীর

প্রচ্ছদ » জেলা » ১৯৭০-এর ভয়াল ১২ নভেম্বর এর ঘূর্ণিঝড়ে নিহতদের আত্মার মাগফেরতা কামনা করেন ভোলা জেলা বিএনপির সভাপতি আলমগীর
রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২২



প্রেস বিজ্ঞপ্তি ॥
১৯৭০-এর ভয়াল ১২ই নভেম্বর প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় গোর্কির (ভোলা সাইক্লোন) আঘাতে ভোলাসহ উপকূলীয় এলাকায় নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা ও স্বজন হারানোদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন ভোলা জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম নবী আলমগীর। শনিবার (১২ নভেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম নবী আলমগীর এই সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

---

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ভোলা জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম নবী আলমগীর বলেন, ৭০-এর ভয়াল ১২ই নভেম্বর প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় গোর্কির (ভোলা সাইক্লোন) ভোলাসহ উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানে। ১৯৭০ সালের এইদিনে প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস, তৎকালীন ভোলা মহকুমার ৭টি থানায় প্রবল বেগে আছড়ে পড়েছিল। পশ্চাৎপদ জনপদ এবং উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার না থাকায় মানুষ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস স¤পর্কে পূর্ব থেকে কোন সতর্কবার্তা পায়নি। যার জন্য বেড়িবাধ হীন এই ভোলা ও অদূরবর্তী দ্বীপসমূহের জনগণ নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারেনি। প্রায় ১৮০ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত ঘূর্ণিঝড় হেরিকেন ও ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস মূহুর্তে ভোলার নি¤œাঞ্চলকে গ্রাস করে। কোন কিছু বুঝে ওঠার পূর্বেই রাতের আঁধারে লক্ষ লক্ষ অসহায় মানুষের সলিল সমাধি হয়। লক্ষ লক্ষ নর-নারী, বৃদ্ধ ও শিশু এবং গবাদি পশু পানির তোড়ে সাগরে ভেসে যায়। বসতবাড়ী ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। মেঘনা পাড়ের অনেক জনপদ বিরান ভূমিতে পরিণত হয়। নদী ও খালে নর-নারীসহ জীব-যন্তুর মৃতদেহ ভাসতে দেখা যায়। সেই ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলীয় এলাকা লন্ডভন্ড হয়ে মৃত্যুপূরীতে পরিণত হয়েছে। কোন কোন পরিবারের সবাই এই ঝড়ে মারা যায়। আবার কোন কোন পরিবারের দু’একজন বেঁচেছিলো বাকীরা এই ঝড়ে ভেসে গেছে। এই দিনটি আসলেই আজও আঁতকে উঠেন উপকূলবাসী। এখনও অর্ধশত বছর পরও স্বজন হারানোর ব্যাথা ভুলতে পারেনি তারা। পৃথিবীর ইতিহাসে একদিনের ঝড়ে এক সাথে এতো লোক আর কোন ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে মারা যায়নি।
আলহাজ্ব গোলাম নবী আলমগীর আরও বলেন, পরদিন সকাল ১১টায় প্রাক্তন মন্ত্রী ও ভোলার গণমানুষের নেতা মোশারেফ হোসেন শাজাহান রতনপুরের দিকে যান এবং রাস্তার দুই পাশে অসংখ্য মৃতদেহ দেখতে পেয়ে তার মন বিষন্ন হয়ে যায়। তিনি রতনপুর বাজারের উঁচু দিঘির পাড়ে অসংখ্য মৃহদেহ দাফনের ব্যবস্থা করেন। প্রায় ৬দিন পর্যন্ত ভোলা বহির্বিশ্বের সাথে বিচ্ছিন্ন ছিল। তারপর স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের কল্যাণে এই ধ্বংসযজ্ঞের কথা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে এবং উদ্ধারকার্য শুরু হয়। অনেকের মতে এই ভয়াল রাত্রে সমগ্র ভোলায় ৫ লক্ষের অধিক আদম সন্তান মৃত্যু বরণ করেন। অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং সঠিক সময়ে সংবাদ না পাওয়ার কারণেই এত বিপুল সংখ্যক নর-নারী ও জীব-যন্তুর মৃত্যু ঘটেছিল।
ভোলা জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম নবী আলমগীর বলেন, সত্তরের সেই ভয়াল গোর্কির আঘাতে প্রাণ হারানো মানুষের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। এছাড়াও এই প্রলয়ংকারী ঝড়ে স্বজন হারানোরদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।

বাংলাদেশ সময়: ২:১৩:৪৭   ৩৫৩ বার পঠিত