বুধবার, ২০ মার্চ ২০২৪

বোরহানউদ্দিনে দাবীকৃত চাঁদা না দেওয়ায় ব্যবসায়ীকে মারধর, প্রাণনাশের হুমকি

প্রচ্ছদ » অপরাধ » বোরহানউদ্দিনে দাবীকৃত চাঁদা না দেওয়ায় ব্যবসায়ীকে মারধর, প্রাণনাশের হুমকি
বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২২



স্টাফ রিপোর্টার ॥
ভোলার বোরহানউদ্দিনে দাবীকৃত চাঁদা না দেওয়ায় ঔষধ ব্যবসায়ীকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে স্থানীয় এক প্রভাবশালী চাঁদাবাজ মোঃ মামুন। ওই চাঁদাবাজারের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে ব্যবসায়ী মোঃ আমিনুল ইসলাম। মামুনকে চাঁদা না দেওয়ায় ব্যবসায়ী আমিনুলকে হুমকি-ধামকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এবং নারী দিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে। বর্তমানে ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম চাঁদাবাজ মামুনের ভয়ে আতঙ্কে ঘর ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছে। বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের উদয়পুর দৌলতখান রাস্তার মাথা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী নিরীহ ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ সুপারসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।

---

এক লিখিত অভিযোগে ব্যবসায়ী মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে বোরহানউদ্দিনের টবগী ইউনিয়নের উদয়পুর দৌলতখান রাস্তার মাথা এলাকায় ঔষুধের ফার্মেসী দিয়ে ব্যবসা করে আসছি। এছাড়াও আমি বিয়ে, জন্মদিনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভিডিও ক্যামেরা ভাড়া দিয়ে ব্যবসা করছি। স্থানীয় মোঃ আনু মিয়ার ছেলে মোঃ জসিম আমার কাছ থেকে স্ট্যাম্পে লিখিত করে ৫ লক্ষ টাকা ধার নেয়। কিছুদিন পর জসিমের কাছে ধার নেওয়া টাকা ফেরত চাইলে সে আমাকে টাকা ফেরত দিবে না বলে হুমকি দেয়। পরে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে জানিয়েও আমি কোন সমাধান না পেয়ে টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য আদালতে মামলা করি। যা বর্তমানে আদালতে চলমান ও সিআইডিতে তদন্তাধীন রয়েছেন। এদিকে হঠাৎ করে স্থানীয় ছিদ্দিকের ছেলে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ মোঃ মামুন ও আনু মিয়ার ছেলে মোঃ জসিম আমার কাছে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। তাদের দাবীকৃত টাকা দিতে আমি অস্বীকার করলে মামুন ও জসিম বিভিন্নভাবে আমাকে ভয়ভীতি ও হুমকি-ধামকি প্রদর্শন করে। তাদের হুমিকর ভয়ে অনেক সময় আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখি।
ভুক্তভোগী আমিনুল ইসলাম আরও বলেন, গত ০৪-০৭-২২ইং তারিখে চাঁদাবাজ মামুন ও জসিম আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ফার্মেসীর কাছে এসে দাবীকৃত ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা চায়। মামুন আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে তুই এখনই আমাদেরকে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দিবি। চাঁদা না দিলে তোর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিবো। এসময় আমি তাদের দাবীকৃত ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে মামুন ও জসিম আমাকে এলোপাথাড়ী মারধর করে এবং আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর চালায়। আমার আত্মচিৎকার শুনে আনোয়ারা বেগম, মোঃ ইউনুছ, মোঃ বিল্লাল, মোঃ আঃ হামিদ, মাইনুদ্দিন, মোঃ হেলাল এগিয়ে আসে। এসময় মামুন ও জসিম আমার বোন আনোয়ারা বেগমকেও মারধর করে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে। আমার পকেটে থাকা প্রায় ৭০ হাজার টাকা ও আমার বোন আনোয়ারা বেগমের সাথে থাকা স্বর্নের চেইনসহ দোকানে থাকা ঔষধ লুট করে নিয়ে যায় চাঁদাবাজ মামুন ও জসিম। পরে লোকজন এসে আমাদেরকে উদ্ধার করে বোরহানউদ্দিন স্বাস্থ্য কমপ্লেকসে নিয়ে যায়। সেখানে আমি প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় চলে আসি। এই ঘটনার পর থেকে মামুন ও জসিম বিভিন্ন সময় আমাকে প্রাণনাশসহ ঘুম করে ফেলবে বলে হুমকি-ধামকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এই ঘটনায় আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ মামুনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে এবং প্রায় ১০ ঘটনা আটকে রাখে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা থানায় গিয়ে মামুনকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে। আমি বাদী হয়ে এই ঘটনায় মামুন ও জসিমকে আসামী করে ভোলার আদালতে একটি চাঁদাবাজী মামলা দায়ের করি। যার মামলা নং-এমপি-২০৩/২২ইং।
তিনি আরও বলেন, এই ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য মামুন ও জসিম উল্টো মিথ্যা নাটক সাজিয়ে আমার বিরুদ্ধে একটি ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। এছাড়াও স্থানীয় কিছু খারাপ প্রকৃতির লোকজনকে নিয়ে আমরা বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে। মানববন্ধনে আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। তারা আমাকে সামাজিকভাবে হয়রানী করার জন্যই মামলা, হামলা, মানববন্ধন ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে। আমি যাতে এলাকায় শাস্তিপূর্ণভাবে বসবাস ও ব্যবসা পরিচালনা করতে পারি সে জন্য ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপারসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মামুন ও জসিমের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে কাউকে পাওয়া যায়নি।
বোরহানউদ্দিন থানার ওসি বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি। এ ব্যাপারে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। আমাদের কাছে মামলা আসলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:২৩:৩৯   ৪২৩ বার পঠিত