বুধবার, ২০ মার্চ ২০২৪

আফগানিস্তানে বিমান হামলায় বেসামরিক নাগরিকসহ নিহত ৪৫

প্রচ্ছদ » আন্তর্জাতিক » আফগানিস্তানে বিমান হামলায় বেসামরিক নাগরিকসহ নিহত ৪৫
বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই ২০২০



আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

আফগানিস্তানে নিরাপত্তা বাহিনীর বিমান হামলায় ৪৫ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত আট জন রয়েছে বেসামরিক সাধারণ মানুষ। আহতও হয়েছে অনেক মানুষ। এই ঘটনার পর লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করেছে তালেবান।
গণমাধ্যম বলছে, এই বিমান হামলার লক্ষ্য ছিল তালেবান যোদ্ধাদের হত্যা করা। কিন্তু আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর বিমান হামলায় নিহত হয় অন্তত আট জন সাধারণ গ্রামবাসী। যা নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে আফগানিস্তানে। এ বিষয়ে লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করেছে তালেবান। অবশ্য আফগান সরকার এই ঘটনা তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, তালেবানদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর যে শান্তিপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল কয়েক মাস আগে, এই ঘটনার ফলে তা অনেকটাই ধাক্কা খেল।
ঘটনার সূত্রপাত বুধবার রাতে। আফগানিস্তানের পূর্ব প্রান্তে হেরাত প্রদেশ। সেখানে আদ্রাসকান জেলা তালেবান অধ্যুষিত। জেলার গভর্নর আলি আহমেদ ফকির ইয়ার জানিয়েছেন, বুধবার রাতে পর পর দুইটি এয়ার রেড (বিমান হামলা) হয়। বিমান থেকে একের পর এক বোমা ফেলা হয়। নিমেষের মধ্যে গোটা এলাকা কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। তালেবান অধ্যুষিত ওই এলাকা ঘনবসতিপূর্ণ বলে জানা গেছে। ফলে বিমান হামলায় বহু সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী অন্তত ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত আট জন নিরীহ গ্রামবাসী। কয়েকজন তালেবান সেনা এবং কম্যান্ডারের মৃত্যুরও খবর পাওয়া গেছে।

---

তবে প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, বিমান হামলায় কেবল আট জন নয়, তার চেয়েও অনেক বেশি সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে ঘটনার পরে একটি লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করেছে তালেবান। তাতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি যে সমস্ত তালেবান জেল থেকে মুক্তি পেয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবছিলেন, এই ঘটনার পর তারা আবার হাতে অস্ত্র তুলে নেবে। তালেবানের বিবৃতি অনুযায়ী এই ঘটনায় তাদের ১২ জন সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন।
আফগান সরকারের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বুধবারের বিমান হামলায় শুধুমাত্র আফগান সেনাই যুক্ত ছিল। মার্কিন বাহিনী এতে অংশ নেয়নি। বস্তুত, আফগানিস্তানে অবস্থিত মার্কিন সেনা সূত্রও জানিয়েছে, বুধবারের ঘটনায় তারা যুক্ত নয়।
এ দিকে আফগান সরকার জানিয়েছে, কী ভাবে সাধারণ মানুষের প্রাণ গেল, কতজন নিহত হয়েছেন, এই সমস্ত তথ্য তদন্ত করে দেখা হবে। দ্রুত সেই রিপোর্ট সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা হবে।
আফগান নিরাপত্তা বাহিনী অবশ্য দাবি করেছে, বিমান হামলায় নয়, সাধারণ গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়েছে ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণে। যা তালেবানরা পেতে রেখেছিল।
উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারি মাসে তালেবান নেতৃত্বের সঙ্গে অ্যামেরিকার শান্তি চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী প্রায় পাঁচ হাজার তালেবান বন্দিকে মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দেয় অ্যামেরিকা। বদলে এক হাজার নিরপত্তা বাহিনীর কর্মী এবং অফিসারকে মুক্তির প্রতিশ্রুতি দেয় তালেবান। এখনও সেই প্রক্রিয়া চলছে। অ্যামেরিকা এবং আফগান নিরাপত্তা বাহিনী এখনও পর্যন্ত চার হাজার তালেবানকে মুক্তি দিয়েছে। তালেবান মুক্তি দিয়েছে ৫০০ বন্দিকে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বুধবারের ঘটনায় সেই প্রক্রিয়ায় ছন্দ পতন করলো।
আফগানিস্তানে স্বাধীন ভাবে কাজ করা মানবাধিকার সংগঠনের দাবি, ফেব্রুয়ারি মাসে শান্তি চুক্তির পরে দেশে মোট ৮৮০টি হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে। যাতে নিহত হয়েছেন এক হাজার ২১৩ জন সাধারণ মানুষ। আহত হয়েছেন এক হাজার ৭৪৪ জন। তবে বুধবারের ঘটনা এই সমস্ত কিছু ছাপিয়ে গিয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর বিমান হামলা চলতি রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করা হচ্ছে। সূত্র : ডয়চে ভেলে

বাংলাদেশ সময়: ১১:৪৬:০৬   ১৩৫৯ বার পঠিত