হাজার হাজার মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে শেষ বিদায় নিলেন নুরে আলম

প্রচ্ছদ » জেলা » হাজার হাজার মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে শেষ বিদায় নিলেন নুরে আলম
শুক্রবার, ৫ আগস্ট ২০২২



আজকের ভোলা রিপের্ট ॥
শেষ বিদায়ে হাজার হাজার মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন ভোলা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মোঃ নুরে আলম। এই ছাত্রদল নেতাকে শেষ বিদায় জানাতে জানাজায় হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে।
মরহুম নুরে আলমকে শেষ বিদায় জানাতে ভোলার বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন থেকে নেতাকর্মী ও হাজার হাজার মানুষ এসে আলতাজুর রহমান কলেজ প্রাঙ্গণে ঝড় হয়। মানুষের উপস্থিতিতে কানায় কানায় ভরে যায় আলতাজুর রহমান কলেজ মাঠ ও আশপাশের এক কিলোমিটার রাস্তা। মানুষের অশ্রুসিক্ত ভালোবাসায় সিক্ত হন মরহুম নুরে আলম।

---

বৃহস্পতিবার (০৪ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টায় নুরে আলমের নিজ বাড়ি ভোলা পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের চরনোয়াবাদ খেয়াঘাট সড়ক এলাকায় আলতাজের রহমান কলেজ মাঠে হাজার হাজার নেতাকর্মী ও মুসুল্লিদের উপস্থিতিতে জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা নামাজ শেষে মরহুমের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। ভোলা দারুল হাদিস আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবুল বাশার আব্দুর রহিম জানাজা নামাজ পরিচালনা করেন।
এর আগে রাত সোয়া ৮টায় ঢাকা থেকে ভোলায় এসে পৌঁছে নূরে আলমের লাশ। নুরে আলমের মরদেহ বহনকারী এ্যাম্বুলেন্সটি ভোলা শহরের ইলিশা বাসস্ট্যান্ড পৌঁছলে সেখানে পূর্ব থেকে অপেক্ষারত নেতাকর্মীরা মিছিলসহ বিএনপির জেলা কার্যালয়ে নিয়ে আসে। পরে সেখানে দলীয় নেতৃবৃন্দ মরহুমের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এসময় বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের শতশত নেতাকর্মী এবং শোকাহত সাধরণ মানুষ নিহত নুরে আলমকে এক নজর দেখতে ও শেষ শ্রদ্ধা জানাতে দলীয় কার্যালয়ের ভীড় জমায়। পরে নুরে আলমের মরদেহ তার নিজ এলাকা চরনোয়াবাদ আলতাজুর রহমান কলেজ মাঠে নেওয়া হয়।
জানাজা নামাজে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট মেজর (অব) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, ভোলা জেলা বিএনপি সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম নবী আলমগীর, কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী সদস্য হায়দার আলী লেলিন, কেন্দ্রীয় যুবদল সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম নয়ন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি সাইফ মাহামুদ জুয়েল, বরিশাল বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ নান্নু, সম্পাদক হারুন অর রশিদ ট্রুম্যান, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুন কবির সোপান, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক, সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসিফ আলতাফ, সদস্য সচিব হেলাল উদ্দিন, জেলা যুবদল সভাপতি জামাল উদ্দিন লিটন, সাধারণ আবদুল কাদের সেলিম, জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জামির হোসেন ওয়াদুদ, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আল আমিন, জেলা ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক আল আমিন হাওলাদারসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
জানাজায় অংশ নিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর অব: হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলম ও সেচ্ছাসেবক দল নেতা আবদুর রহিমের রক্তে ভোলার রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে। শান্তিপ্রিয় ভোলায় অশান্তি সৃষ্টি করেছে। নুরে আলম দলের জন্য নয়, এই দেশের সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য, দ্রব্যমূল্য উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে আন্দোলন করতে গেলে পুলিশ বিনা উস্কানিতে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে নুরে আলম ও আঃ রহিমকে হত্যা করেছে। এই ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কেউ নিরাপদ নয়। সরকারের, অন্যায়, অবিচার ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন করতে যাবে তাকেই সরকারের পুলিশ বাহিনী গুলি করে নুরে আলম, রহিমের মত হত্যা করবে।
তিনি বলেন, এই অবৈধ ভোটারবিহীন শেখ হাসিনা সরকারের অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন, অবিচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন, সংগ্রাম করতে গেলে তাদেরকে পুলিশ দিয়ে দমন নিপিড়ন করে। নুরে আলম জনগনের অধিকার আদায়ের জন্য নিজের জীবন দিয়ে যে ত্যাগ শিকার করেছেন আমরা তা বৃথা যেতে দিবো না। নুরে আলম মানুষের অধিকার আদায়ে জীবন দিয়ে যে ত্যাগ শিকার করেছে আমরা তাকে কোনো দিনও ভুলবো না। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের শহীদ নুরে আলমকে আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবো। নুরে আলম ও আঃ রহিমের শোককে শক্তিতে পরিণত করে দুর্বার, গণআন্দোলনের মাধ্যমে এই স্বৈরাচারি শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়ে মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিবো। তিনি বলেন, নুরে আলমের ৫ বছরের কন্যা শিশু তার পিতাকে হারিয়েছে, স্ত্রী তার স্বামীকে হারিয়েছে, মাতা পিতা তার সন্তানকে হারিয়েছে, ভাই তার ভাইকে হারিয়েছে। আজ পুরো পরিবার শোকে শোকাহত। আমরা এই শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি তিনি নুরে আলমের শিশু কন্যাকে নিজ হাতে লালন পালন করুন। তার পরিবারকে ধৈর্য ধরার তৌফিক দান করুন। শহীদ নুরে আলমের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।
প্রসঙ্গত, লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ৩১ জুলাই বিক্ষোভ সমাবেশ করে ভোলা জেলা বিএনপি। সমাবেশ চলাকালে পুলিশ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় গুলিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আব্দুর রহিম নিহত হন। এ ঘটনায় বিএনপির আরও বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। আহতদের মধ্যে নুরে আলমও ছিলেন। বুধবার (৩ আগস্ট) বিকেলে তিনি মারা যান।

বাংলাদেশ সময়: ২:১৩:১৯   ৩৮১ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

জেলা’র আরও খবর


সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীরের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভোলায় সমাবেশ
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য কাচারি ঘর বিলুপ্তির পথে
ভোলায় ৬ দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর সরকারি চাকরিজীবী ফোরামের স্মারকলিপি
ভোলায় তীব্র তাপদাহে অস্থির জনজীবন
ছয় শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদানে অনিশ্চয়তা
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: ভোলায় তিন উপজেলার ৩৮ প্রার্থীর সকলের মনোনয়নপত্র বৈধ
ভোলায় কৈশোর বান্ধব স্বাস্থ্য সেবা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
ঘুষ ছাড়া কাজ হয়না ভোলার বিএমইটি অফিসে॥ প্রতিদিন ঘুষের আয় প্রায় অর্ধলক্ষ টাকা!!
আপনাদের আমানত ভাল পাত্রে জমা রাখবেন: চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউনুছ মিয়া
ভোলায় ফিল্মি স্টাইলা অপহরণ ॥ কতিপর উদ্ধার



আর্কাইভ