বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

লালমোহনে এক গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে ধূ¤্রজাল ॥ হত্যা নাকি আত্মহত্যা

প্রচ্ছদ » অপরাধ » লালমোহনে এক গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে ধূ¤্রজাল ॥ হত্যা নাকি আত্মহত্যা
শুক্রবার, ১০ জুন ২০২২



লালমোহন প্রতিনিধি ॥
লালমোহনে এক গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। হত্যা নাকি আত্মহত্যা জানে না তার পরপরিবার। এ নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। নিহত গৃহবধূ সাথীর বাবা আঃ হাদি অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি এ ঘটনার তদন্ত করে আইনগত বিচার দাবি করেন।

---

জানা গেছে, ধলী গৌর নগর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের আঃ হাদি বাড়ির আঃ হাদির মেয়ে সাথী ও লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়ন নিবাসী ইউনিয়ন পরিষদের সামনের বাড়ির হাসিমের ছেলে নাজিম উদ্দিন সোহাগের সাথে উভয় পরিবারের সম্মতিক্রমে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই মেয়ের উপর বিভিন্নভাবে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে ছেলে ও তার পরিবারের লোকজন। যৌতুকের দাবিতে তারা মেয়ের উপর নির্যাতন করত বলে মেয়ের বাবা জানান। কয়েকবার বসাবসি ও বিচার সালিশি হয়েছে। আর নির্যাতন করবে না বলে নিয়ে যায় কিন্তু নেওয়ার পর যেই সেই। কথায় কথায় মেয়ের গায়ে হাত তুলত, বকাবকি করত। মেয়ের শ্বশুর হাসিম, শাশুড়ি ফরিদা, স্বামী নাজিম উদ্দিন সোহাগসহ পরিবারের সবাই মিলে নির্যাতন করত বলে জানান নিহত নববধূর পিতা আঃ হাদি ও তার পরিবার।
আঃ হাদি জানান, আমার মেয়েকে মারপিট করে মেরে ফেলার জন্য তাকে জোরপূর্বক বিষ খাইয়ে দিয়েছে। পরে তাকে তারা নামমাত্র চিকিৎসা করিয়েছে। ভালো চিকিৎসা আমার মেয়ে পায়নি। তারা আমার মেয়েকে হাসপাতালে না নিয়ে লর্ডহার্ডিঞ্জ বাজারে লোকাল ডাক্তার দিয়ে ওয়াশ করাইছে পরে তাকে চরফ্যাশন হাসপাতালে নিয়ে গেছে। অথচ নিকটের লালমোহন হাসপাতালে আনেনি। আমি খবর পেয়ে চরফ্যাশন হাসপাতালে গেলে তারা আমাকে কিছুই বুঝতে দেয়নি। চিকিৎসা শেষ না হতেই তাকে তাড়াহুড়া করে তারা হাসপাতাল থেকে নিয়ে এসেছে। পরে আমি তাদের বাড়িতে গিয়ে মেয়ের ভালো চিকিৎসা করানোর জন্য চাপাচাপি করি। তারা চিকিৎসার কাগজপত্র লুকিয়ে ফেলেছে। আমাকে কিছু দেয়নি। তারা ৩ জুন তারিখে চরফ্যাশন হাসপাতাল থেকে আমার মেয়েকে অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে আনে। মেয়ে আরও দুর্বল হয়ে পড়তে দেখে আমি বেয়াই বেয়াইন ও জামাইকে অনেক অনুনয় বিনয় করে বলে মেয়েকে ৬ জুন তারিখে তাদের বাড়ি থেকে এনে লালমোহন হাসপাতালে ভর্তি করাই। কর্তব্যরত ডাঃ তার অবস্থা খারাপ দেখে ভোলা রেফার্ড করে। পরে আমরা তাকে ভোলা নিয়ে যাই। ভোলা সদর হাসপাতালের ডাঃ তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। পরে পুলিশ এসে লাশ নিয়ে যায়। পোস্ট মর্টেম শেষে লাশ এনে আমার বাড়ি দাফন করেছি। আমি আমার মেয়েকে মেরে ফেলার বিচার দাবি করি।
এবিষয়ে ছেলের বাড়িতে গিয়ে কথা বললে  ছেলের বাবা হাসিম বলেন, আমার পুত্রবধূ সাথী বন মারার ওষুধ খেয়ে ফেললে আমরা দ্রুত চিকিৎসা করাই। পরে মেয়ের বাবা এসে তাকে নিয়ে যায়। এরপর জানতে পারি ভোলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে নাকি সে মারা গেছে। আমরা তখন সেখানে যাই। পুলিশ এসে লাশ নিয়ে গেছে। পোস্ট মর্টেম শেষে লাশ এনে তার বাপের বাড়ি দাফন করা হয়।
নতুন বউ কী কারণে বিষপান করলো আপনার বাড়িতে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে হাসিম, তার স্ত্রী, পুত্র ও পরিবারের অন্যান্যদের থেকে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনা প্রসঙ্গে আরও জানা যায়, মেয়েটি দাখিল পরীক্ষার দেওয়ার প্রস্তুতি নিতে চেয়েছিল। তখন স্বামী ও তার পরিবার বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এ বিয়ে ছেলের বাড়িতে পড়ানো হয়েছে। বয়স কম থাকায় কাবিন প্রকাশ করা হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ২০:০৩:৩১   ৩৮৬ বার পঠিত