বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

চরফ্যাশনে খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির আওতায় আসছে না ৩৮ হাজার জেলে

প্রচ্ছদ » চরফ্যাশন » চরফ্যাশনে খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির আওতায় আসছে না ৩৮ হাজার জেলে
মঙ্গলবার, ৭ জুন ২০২২



চরফ্যাশন প্রতিনিধি ॥
দেশের সামুদ্রিক জলসীমায় ৬৫ দিন (২০ মে-২৩ জুলাই) মাছ ধরা নিষিদ্ধকালে জেলেদের জন্য ৯৮৩ দশমিক ৪১৬ মেট্রিক টন ভিজিএফ চাল বরাদ্দ করা হয়েছে চরফ্যাশন উপজেলায়। ২০২১-২২ অর্থবছরে সরকারের মানবিক খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির আওতায় উপকূলীয় চরফ্যাশন উপজেলা ২১টি ইউনিয়নের ১৭ হাজার ৫৬১ জন জেলের জন্য এ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর আওতায় নিবন্ধিত প্রতিটি জেলে পরিবারকে প্রথম ধাপে প্রতি মাসে ৫৬ কেজি করে ৪২ দিনের চাল দেওয়া হবে।

---

সরকারি হিসেব অনুযায়ী, বছরে ৪ বার সাগরে মাছ শিকার বন্ধ থাকার মধ্যে জেলেদেরকে ৭ বার চাল দেওয়া হয়। এই উপজেলায় যত সংখ্যক নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন তার মধ্যে কম সংখ্যাক জেলে ভিজিএফের আওতায় রয়েছে। বাকি জেলেরা ভিজিএফ চাল পাওয়া থেকে বঞ্চিত।
চলতি বছরের মে মাসের ২০ থেকে ২৩ জুলাই তারিখ পর্যন্ত ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধ। অনেক জেলে বেকার জীবন পার করছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগ নিবন্ধিত জেলে ভিজিএফ চাল পাচ্ছেন না। ফলে দুর্বিসহ জীবন পার করতে হয় জেলে পরিবারগুলোকে।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, চরফ্যাশন নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন ৫৭ হাজার ৩১১ জন। এদের মধ্যে ভিজিএফের আওতায় রয়েছেন ১৯ হাজার ৫২১ জেলে। ভিজিএফের আওতাধীন জেলেদেরকে বছরে ৭ বার চাল দেওয়া হয়। বছরে ৪ বার সাগরে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকে। মাছ ধরা থেকে বিরত থাকা জেলেদের জীবনযাত্রা নির্বাহের জন্য সরকারের মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় বেকার জেলে পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে এ চাল দেওয়া হয়।
উপজেলার নুরাবাদ ইউনিয়নের জেলে আবু তাহের জানান, তিনি ১৭ বছর ধরে সাগরে মাছ ধরেন। অন্য একজন মালিকের ট্রলারে থাকেন তিনি। পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৭ জন। ৬৫দিন মাছ ধরা বন্ধ। ২০ মে-২৩ জুলাই তারিখ পর্যন্ত চলবে এই নিষেধাজ্ঞা। এদিকে সামনে কোরবানির ঈদ। নিবন্ধীত জেলেদের তালিকায় নাম রয়েছে তবুও ভিজিএফের চাল পাচ্ছি না। খুব কষ্টে এক একটি দিন পার করছি। আমাদেরকে দেখার কেউ নেই।
আহাম্মদপুর ইউনিয়নের জেলে মঞ্জু জানান, এক যুগ ধরে সাগরে বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবেলা করে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছি। করোনার পর থেকে কয়েকবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়েছে। বছরে ৭ বার নিষোধাজ্ঞা থাকে এর মধ্যে আমরা জেলেরা বেকার হয়ে থাকি। অভাব-অনটনের মধ্যে চলে সংসারটি। ছোট ছোট চার ছেলে-মেয়ে নিয়ে পরিবারের সদস্য সংখ্য রয়েছে ৬ জন। দুই মাস সাগরে মাছ ধরা বন্ধ। আমি একজন নিবন্ধিত জেলে হয়েও সারকারের দেওয়া ভিজিএফ চাল পাচ্ছি না। সরকারের কাছে আবেদন, যাতে করে আমাদের মতো নিবন্ধিত জেলেদেরকে ভিজিএফের আওতায় নিয়ে আসে।
চরফ্যাশন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মারুফ হোসেন মিনার জানান, এই উপজেলায় ২১টি ইউনিয়নের মধ্যে নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন ৫৭ হাজার ৩১১ জন। এর মধ্যে ১৯ হাজার ৫২১জন জেলের জন্য ভিজিএফের চাল বরাদ্ধ রয়েছে। বাকি জেলেদেরকে ভিজিএফের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছি।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:০৮:২৮   ৪৫৯ বার পঠিত