ভোলায় বারি বেগুন-১২ চাষ কৃষকদের মাঝে সাড়া

প্রচ্ছদ » অর্থনীতি » ভোলায় বারি বেগুন-১২ চাষ কৃষকদের মাঝে সাড়া
মঙ্গলবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২২



বিশেষ প্রতিনিধি ॥
জেলায় প্রথমবারের মতো বারি বেগুন-১২ চাষ কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। আকারে বেশ বড় ও খেতে সুস্বাদু এ বেগুন চাষে অনেকেই আগ্রহ দেখাচ্ছে। স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে ৩৬ জন কৃষককে বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে বেগুনের বীজ, সার ও প্রশিক্ষণ। ইতোমধ্যে অনেক গাছে ফলন এসেছে বেশ ভালো। অনান্য বেগুনের চেয়ে এ জাতের দামও বেশি। বাজারে বিক্রি করে ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা। একটি বেগুন প্রায় দেড় কেজি পর্যন্ত হয়। জেলায় প্রায় দেড়’শ কৃষক ৩৮ হেক্টর জমিতে এ বেগুনের চাষ করছেন। সরকারিভাবে এক বিঘা জমির অনুকূলে ৩৬ টি প্রদর্শর্নীর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

---

সদর উপজেলার চরসামইয়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের শান্তির হাট এলাকার কৃষক মো: সেলিম বারি বেগুন-১২ এর চাষ করছেন। তিনি কৃষি অফিস থেকে বীজ পেয়ে ৭০০ চারা রোপণ করেছেন। প্রত্যেকটি গাছেই ফলন এসেছে। ইতোমধ্যে ৫০ কেজি বেগুন তিনি বিক্রি করেছেন। তিনি জানান, এ বেগুনটা দেখতে সবুজ এবং এতটাই বড়, মনে হবে অনেকটা লাউয়ের মতো। যেখানে অন্য বেগুনের দাম কেজিতে ২৫ টাকা সেখানে বারি বেগুন-১২ এর পাইকারী দাম ৪০ টাকায় বিক্রি হয়। এখন পর্যন্ত গাছে কোন রোগ-বালাই বা পোকা-মাকড়ের আক্রমণ নেই বলে জানান তিনি।
একই এলাকার কৃষক রফিকুল ইসলাম ও সিদ্দিকউল্লাহ বলেন, এত বড় বেগুন আগে কখোনো দেখেনি তারা। সেলিমের বেগুন ক্ষেত এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে। বড় আকারের বেগুন দেখতে কৃষকরাও ভিড় করছেন। আগামীতে এখান থেকে বীজ সংগ্রহ করে এ জাত চাষের ইচ্ছার কথা জানান তারা। এমন আরো একাধিক কৃষক বারি-১২ জাত চাষে আগ্রহের কথা বলেন।
শিবপুর ইউনিয়নের মধ্য রতনপুর গ্রামের বেগুন চাষি মো: আজিজুল হক বলেন, তিনি বারি ১২ জাত চাষ করেছেন ৯ শতাংশ জমিতে। কৃষি অফিস থেকে পেয়েছেন বীজ ও সার। তার ক্ষেতে বেগুন গাছের গ্রথ বেশ ভালো, বেগুন আকারেও বড়। সব গাছেই ফলন এসেছে। আশা করছেন কাংখিত ফলন পাবেন। আশপাশের বহু কৃষক তার কাছ থেকে বীজ চেয়ে রেখেছেন চাষের জন্য।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী উদ্বিদ সংরক্ষণ অফিসার মো: হুমায়ুন কবির বলেন, জেলায় এবছর মোট ৬৮৫ হেক্টর জমিতে বেগুনের চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে বারি বেগুন-১২ এর চাষ হচ্ছে ৩৮ হেক্টর জমিতে। মোট বারি ১২ জাতের বেগুন সদর উপজেলায় হচ্ছে ৭ হেক্টর, দৌলতখানে ৩ হেক্টর, বোরহানউদ্দিনে ১২ হেক্টর, লালমোহনে ৪ হেক্টর ও চরফ্যাসন উপজেলায় ১২ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। এখন পর্যন্ত ফসলের মাঠের অবস্থা ভালো রয়েছে।
সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মো: রিয়াজ উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট এ বছরই জাতটা আবিস্কার করেছে। আমরা স্থানীয়ভাবে কৃষকদের মাঝে এর বীজ বিতরণ করেছি। বারি বেগুন-১২ মূলত শীতের সময়ে ভালো হয়। তাই এটাকে শীতকালীন বেগুন বলা হয়। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে চারা রোপণ করা হয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা স¤পন্ন এ জাতটার এ অঞ্চলে ব্যাপক আকারে চাষের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ভোলায় অনেক কৃষকই এ বেগুন চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে। এ বেগুন থেকেই বীজ নিয়ে সংরক্ষণের মাধ্যমে পরবর্তীতে চারা করা যাবে। তাই বলা যায় এ জাতটা ব্যাপক সম্প্রসারণ হবে। এটার ভেতরটা খুবই নরম তাই খেতে বেশ মজাদার। বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে মাঠ পর্যায়ের কৃষি অফিসাররা কৃষকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২২:১৯:০৩   ২৯৪ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

অর্থনীতি’র আরও খবর


ভোলায় প্রাণীসম্পদ প্রদর্শনী ও উদ্যোক্তাদের মেলা অনুষ্ঠিত
ভোলায় অনুষ্ঠিত হলো প্রাণী প্রদর্শনী মেলা
চরফ্যাশনে দিনব্যাপী প্রাণীসম্পদ প্রদর্শনী
বোরহানউদ্দিনে ফুটপাতে ঈদের জমজমাট কেনাকাটা
পথে পথে চাঁদাবাজি, ভোলার তরমুজচাষি ও ব্যবসায়ীরা বিপাকে
ভোলায় ব্যবসায়িক অগ্রগতি পর্যালোচনা সম্মেলনে রূপালী ব্যাংক পিএলসিকে সর্ব শীর্ষে নিয়ে যাবার অঙ্গীকার
ভেজাল মসলা তৈরি: ভোলায় ২ কারখানাকে জরিমানা
ভোলায় বেড়েছে আলু ও কাঁচা মরিচের দাম
ভোলায় নারী উদ্যোক্তাদের তিনদিনের ঈদমেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ঢল
ভোলায় যাত্রা শুরু করেছে দেশীয় ব্র্যান্ড ‘দর্জিবাড়ি’



আর্কাইভ