ভোলার নদীতে ভরা মৌসুমেও মিলছে না কাঙ্খিত ইলিশ

প্রচ্ছদ » অর্থনীতি » ভোলার নদীতে ভরা মৌসুমেও মিলছে না কাঙ্খিত ইলিশ
শুক্রবার, ৩০ জুলাই ২০২১



---

ইমতিয়াজুর রহমান ॥
ইলিশেগুড়ি বৃষ্টি আছে সঙ্গে আছে পূবালী বাতাস নদীতেও পর্যাপ্ত পানি গভীর সাগরে ৬৫ দিনের অভিযান শেষ হবার পর জেলেরা আশায় বুক বেঁধেছিলেন ভেবেছিলে নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশের দেখা মিলবে। কিন্তু ভরা মৌসুমেও সাগর মোহনার উপকূলীয় এলাকা দ্বীপজেলা ভোলার মেঘনা ও তেতুঁলিয়া নদীতে মিলছে না কাংখিত ইলিশ। ফলে হাসি নেই ভোলার জেলেদের মুখে। অনেকটা হতাশার মধ্যদিয়েই দিন কাটছেন ভোলার জেলেরা।
একদিকে নদীতে নেই কাঙ্খিত ইলিশ তেমনি করোনার কারনে ডাঙ্গায়ও তেমন কাজ না থাকায় পরিবার নিয়ে চরম বিপাকে রয়েছে তারা।
দেশের ইলিশ আহরনের অন্যতম জেলা হিসাবে খ্যাত দ্বীপ জেলা ভোলায় ২ লাক্ষাধিক জেলে নদীতে মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।  মৎস্য বিভাগের মতে দেশের ইলিশের চাহিদার প্রায় ২৫ ভাগ ভোলা থেকেই মিটানো হয়। বিশেষ করে ইলিশ আহরনের উপর তারা বেশী নির্ভরশীল। আর তাই জেলেরা অপেক্ষায় থাকে ইলিশের  ভরা মৌসুমের আশায়। জেলেদের হিসেব মতে বৈশাখ জৈষ্ঠ থেকে ইলিশের ভরা মৌসুম শুরু। আর শ্রাবন ভাদ্র মাসে মৌসুম শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু শ্রাবন প্রায় শেষ হতে চললেও নদীতে এখনো মিলছে না ইলিশ।
ভোলার মেঘনা পাড়ের ইলিশা, তুলাতুলি, নাছির মাঝি, ভোলার খালসহ প্রায় অর্ধশতাধিক ছোট বড় ঘাটে এই সময় থাকার কথা ছিলো জেলে আড়ৎদারদের উৎসবের আমেজ। কিন্তু তার দেখা মিলছে না তেমন কোন ঘাটে। দু’এক ঝুড়ি মাছ ঘাটে আনা হলেও আগের মতো নেই হাকডাক। কারন, এ সময়ে যে পরিমান মাছ পাওয়ার কথা তার তিন ভাগের এক ভাগও ইলিশ কেনা-বেঁচা নেই। মাঝে মাঝে ২/৪ জন জেলে নদীতে ৪/৫ দিন জাল ফেলে গুটি কয়েক মাছ পেলেও তাদের খরচের টাকাও উঠছে না।
কথা হয় ভোলার ধনিয়া তুলাতুলি এলাকার বশির মাঝির সাথে তিনি বলেন, আমার সাবারে আমরা ৬ জন ভাগিার মিলে কালকে সন্ধ্যায় নদীতে গিয়েছিলাম বৃহ¯পতিবার (২৯ জুলাই) ভোরে উইঠা আসি এতে আমরা ৭/৮ গ্রামের ৩ ডা এবং গোডা ১৩ টা জাটকা ইলিশ পাইছি। ঘাটে বড় গুলান ২হাজার টাকা ও ঝাটকার হালি ১৮০ টাকা বেচাগেছে। নদীত যাইতে বরফ আর তেলে ২ হাজার টাকার মতো খরচ গেছে। এহন এই কয়টা টাকা ৬ জনে নিলে কি দিয়া কি হইবো। এখন আমাগো ঈদের আনন্দ থাকার কতা কিন্তু তার কিছুই দেখতাছি না।
মৎস্য আড়ৎদাররাও বহু টাকা বিনিয়োগ করে এখন লোকসান গুনতে হচ্ছে। জেলেদেরকে বহু টাকা ঋন দিয়ে নদীতে মাছ না পাওয়ায় মহাজনরা রয়েছে বিপাকে। কথা হয় তুলাতুলি ঘাটের তেমনই এক আড়ৎদার নোয়াব মিয়ার সাথে তিনি বলেন, এই সময়টা ঘাট থাকে জমজমাট। আমরা ঢাকা, চাদপুর সহ বিভিন্ন জেলায় ইলিশ পাঠাতে মহা ব্যস্ত হয়ে পরি। কিন্তু এবছর তা স¤পন্ন উল্টো। জেলেদের বিগত সময় যেই দাদনের টাকা দিয়েছি তাই তুলতে পারছি না। এখন আবার তাদের ঋন দেওয়া লাগতেছে। এদিকে আমরাও অনেক লোকসানে আছি। একই অবস্থা জেলার অন্য সব মাছ ঘাসগুলোতে।
এদিকে সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জামাল হোসেন জানান, সরকারি হিসাবে ভোলা জেলায় নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ১ লাখ ৩২ হাজার ২৬০ জন।তবে নিববন্ধনের বাইরে আরো জেলে রয়েছে দুই লাখের অধিক। গত ৫ বছর দেখা গেছে জুন জুলাই মাসে ইলিশের পরিমান কম থাকে। তবে ডুবো চর ইলিশের মাইগ্রেশন, বৃষ্টি কম হওয়ায় সহ নানা কারনে সমস্যার কারনে নদীতে ইলিশ কম।
আর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম আজহারুল ইসলাম জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি কম বৃষ্টি হওয়ায় নদীতে নোনা পানির পরিমাণ বেড়ে গিয়ে ইলিশের সংখ্যা কমছে।
তিনি আরও জানান, নদীতে এখন জেলে ও জালের সংখ্যা অনেক বেশি। প্রত্যেকে একটি বা দুইটি করে পেলেও মাছের সংখ্যাটা কম নয়। তবে সব সময়ই জুন-জুলাইতে মাছ কম থাকে। আগস্ট, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর মাসে জেলেরা নদীতে আশানুরূপ মাছ পাবেন বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২২:১৩:০২   ৪৩৬ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

অর্থনীতি’র আরও খবর


ক্যাপসিকাম চাষে ঝুঁকছেন ভোলার কৃষকরা
ভোলায় তরমুজের ক্রেতা নাই
তরমুজের বাম্পার ফলনে চাষিদের মুখে হাসি
ভোলার বাজারে সব ধরনের মাছের দাম আকাশ ছোয়া!
মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষে সফল ভোলার কৃষকেরা
ভোলায় SOYEE প্রোগ্রামের চাকুরি বিষয়ক মেলা অনুষ্ঠিত
লাল তীর সীড’র সাথে জিজেইউএস’র চুক্তি স্বাক্ষর
ভোলার বাজারে সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না বেশীরভাগ পন্য
ভোলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে গমের আবাদ
কাউন্সিলর থেকে উদ্যোক্তা লালমোহনের মনির



আর্কাইভ