ভোলায় নতুন জাতের আউশ ধান কাটা উপলক্ষে মাঠ দিবস পালন

প্রচ্ছদ » অর্থনীতি » ভোলায় নতুন জাতের আউশ ধান কাটা উপলক্ষে মাঠ দিবস পালন
বুধবার, ২৮ জুলাই ২০২১



স্টাফ রিপোর্টার ॥
ভোলা জেলায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত নতুন ব্রি হাইব্রিড ধান-৭ জাতের আউশ ধান কাটা উপলক্ষে মাঠ দিবস পালন করা হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ধান কাটা শুরু করেন ভোলার কৃষি বিভাগ। ধান কাটার পর পরিসংখ্যানে দেখা যায় প্রতি হেক্টরে সাত মেট্রিকটন ধান হয়েছে।
কৃষি বিভাগ জানায়, দিন দিন জনসংখ্যা বৃদ্ধিসহ নানা কারনে ফসলি জমির পরিমন কমে যাচ্ছে। তাই গত এপ্রিল মাসে ভোলা সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইয়ানুর রহমান বিপ্লব মোল্লার সবুজ বাংলা কৃষি খামারে পরীক্ষামূলক ৮ হেক্টর জমিতে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের নতুন উদ্ভাবিত ব্রি হাইব্রিড ধান-৭ জাতের আউশ ধান চাষ করা হয়। বিজ ফালানো থেকে শুরু করে মাত্র ১১০ দিনের মাথায় এ ধান কাটা হয়। পরে পরিসংখ্যান করে দেখা যায় প্রতি হেক্টরে সাত মেট্রিকটন করে ধান হয়েছে। এ ধান উৎপাদনে তেমন বেশী সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা লাগেনা বিধায় খরচও কম হয়। তাই এ ধান চাষ করে কম খরচে বেশী উৎপাদন করা সম্ভব।

---

ধান চাষকারী সবুজ বাংলা কৃষি খামারে সত্বাধিকারী চেয়ারম্যান ইয়ানুর রহমান বিপ্লব বলেন, এবছর আমার খমারের ১৫ একর জমিতে ব্রি হাইব্রিড ধান-৭ জাতের আউশ ধান রোপন করেছি। আলহামদুলিল্লাহ আমন ধানের মতো আউশ ধানেও ভালো ফলন হয়েছে। যদিও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অনাবৃষ্টির কারনে এ ধান উৎপাদনে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে। তারপরও লক্ষামাত্রার চেয়ে বেশী ফলন হওয়ায় আমি খুশি। তাই সকল কৃষকক এ উচ্চ ফলনশীল ধান আবাদের পাশাপাশি আধুনিক কৃষিতে এগিয়ে আসলে একদিকে নিজেও লাভবান হবে, অপরদিকে দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরনে সহায়ক হবে।
ভোলা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন জানান, এ বছরই নতুন ব্রি হাইব্রিড ধান-৭ জাতের আউশ ধান ভোলায় আবাদ করেছি। এ ধান রোপনের ১১০ দিনের মাথায় কর্তন করা হচ্ছে। আমাদের হিসেবে দেখা গেছে প্রতি হেক্টরে সাত মেট্রিকটন করে ধান হয়েছে। যা বাজারে কাঁচা অবস্থায়ই ৭৫০ টাকা মন হিসেবে বিক্রি করতে পারতেছি। এতে করে প্রতি হেক্টরে ধান বিক্রি করে আয় হচ্ছে এক লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। আর আউশ মৌসুমে প্রতি হেক্টরে ধান আবাদে খরচ হচ্ছে ৬৫ হাজার টাকা। আমাদের আগামী আউশ মৌসুমে এ ধানের জাতটি কৃষকদের মাঝে  ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু মো. এনায়েত উল্লাহ জনান, এবছর ভোলায় ৮৫ হাজার ১১ হেক্টর জমিতে আউশ ধান আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে সবুজ বাংলা কৃষি খামারের ১৫ একর জমিতে ব্রি হাইব্রিড ধান-৭ আবাদ করা হয়। ধান কর্তনের পর দেখা গেছে প্রতি হেক্টরে সাত মেট্রিকটন কোনো কোনো যায়গায় এর চেয়ে বেশী ফলনও হয়েছে। আমরা সাধারণত আউশ ধান হেক্টর প্রতি সারে চার থেকে পাঁচ মেট্রিকটন ফলন পাই। কিন্তু নতুন জাতের এ ধানে সাত মেট্রিকটনের উপরে ফলন হয়েছে। আমরা আশা আগামী বছরে ৮৫ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে ২০ শতাংশ জমিতে এ জাতের ধান আবাদ করবো। এতে করে আমাদের ভোলায় ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।
ধান কর্তন ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে টেলি কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে টেলি কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. শাহজাহান কবির।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলার শ্যামপুর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মোস্তফা কামাল, কৃষি পরিসংখ্যান কর্মকর্তাসহ স্থানীয় কৃষক।

বাংলাদেশ সময়: ২২:১৩:৪০   ২৭৯ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

অর্থনীতি’র আরও খবর


ক্যাপসিকাম চাষে ঝুঁকছেন ভোলার কৃষকরা
ভোলায় তরমুজের ক্রেতা নাই
তরমুজের বাম্পার ফলনে চাষিদের মুখে হাসি
ভোলার বাজারে সব ধরনের মাছের দাম আকাশ ছোয়া!
মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষে সফল ভোলার কৃষকেরা
ভোলায় SOYEE প্রোগ্রামের চাকুরি বিষয়ক মেলা অনুষ্ঠিত
লাল তীর সীড’র সাথে জিজেইউএস’র চুক্তি স্বাক্ষর
ভোলার বাজারে সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না বেশীরভাগ পন্য
ভোলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে গমের আবাদ
কাউন্সিলর থেকে উদ্যোক্তা লালমোহনের মনির



আর্কাইভ