৬৫দিন পর সাগরে ভোলার উপকূলীয় জেলেরা

প্রচ্ছদ » অর্থনীতি » ৬৫দিন পর সাগরে ভোলার উপকূলীয় জেলেরা
শনিবার, ২৪ জুলাই ২০২১



ছোটন সাহা ॥
৬৫ দিন পর সাগরে নেমেছেন ভোলার উপকূলীয় এলাকার জেলেরা। শুক্রবার (২৩ জুলাই) দিনগত রাত থেকে কেউ আবার শনিবার (২৪ জুলাই) ভোর থেকে জাল, ফিশিং বোটসহ অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে সাগরে নেমে পড়েছেন। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে জেলার শতাধিক মাছঘাট থেকে বঙ্গোপসাগরে রওনা দেন জেলেরা। এদিকে, মাছ ধরাকে কেন্দ্রে করেই বেকার জেলেরা ফের কর্মব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। এতে সরগরম হয়ে উঠবে মাছের আড়তগুলো।
অন্যদিকে, বরফকলগুলো আরও সচল হয়ে উঠছে। সাগরে মাছ ইলিশ ধরা করে বিগত ২ মাসের ধার-দেনা পরিশোধের পাশাপাশি ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন বলেও আশাবাদী জেলেরা। পরিবার-পরিজন নিয়েও ভালোভাবে দিন কাটাবেন স্বপ্ন তাদের চোখ-মুখে।

---

লালমোহন উপজেলার বাতির খাল মৎস্য ঘাটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘাট থেকে সারি সারি ফিশিং বোট গভীর সাগরে নেমেছে। একেকটি বোটে গড়ে ১৫ থেকে ২০ বা তার বেশি জেলে। জাল, খাদ্যসামগ্রীসহ অন্যান্য উপকরণ নিয়ে অন্তত এক সপ্তাহের জন্য সাগরে যাত্রা করেছেন তারা। বিকেলেও বোটে করে সাগরে যাবেন অনেকে। অনেকে আবার বৈরী আবহাওয়া কেটে গেলে সাগরে যাবেন।
লালমোহনের বাতির খাল এলাকার জেলে ওসমান মাঝি বলেন, গত দুই মাস সাগরে মাছ ধরা বন্ধ ছিল। ফলে কেউ মাছ ধরতে যেতে পারিনি। ধার-দেনা করে পরিবার-পরিজন নিয়ে কস্টে দিন কাটিয়েছি। এখন নিষেধাজ্ঞা শেষ, তাই সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের ফিশিং বোটে ১৮ জন জেলে রয়েছেন। আগামী দু’দিনের মধ্যে আমরা সাগরে যাবো। তাই মাছ ধরতে যেতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।
মাকসুদ, সালাউদ্দিন ও হানিফসহ সহ অন্যরা জানান, তারা সবাই সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। ইলিশ ধরায় নিশেধাজ্ঞা থাকায় তাদের অনেকেই মাছ ধরতে যাননি গত ৬৫ দিন। এখন সাগরে গিয়ে বিগত দিনের ক্ষতি পুষিয়ে নেবেন তারা। অভাব-অনটন আর অনিশ্চয়তা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াবেন বলে আশাবাদী তারা।
সূত্র জানায়, সাগরে মাছ ধরেন জেলায় এমন নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৬৩ হাজার ৯৫৪ জন। এদের মধ্যে সদরে ৩ হাজার ৬৯৮ জন, বোরহানউদ্দিনে ৭ হাজার ৬৫০ জন, দৌলতখানে ১১ হাজার ৫৫০ জন, লালমোজনে ৮ হাজার ৮০৪ জন, তজুমদ্দিনে ৪ হাজার ৫০৬ জন, চরফ্যাশন উপজেলায় ১৭ হাজার ৫৬১ জন ও মনপুরা উপজেলায় ১০ হাজার ১৮৫ জন। এর বাইরেও অনেক জেলে রয়েছে তারাও মাছ ধরতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন।
জেলে ও মৎস্যজীবি সমিতির সভাপতি এরশাদ মাঝি বলেন, সাগরে মাছ ধরা শুরুর প্রথমদিনে জেলার ৮০ ভাগ জেলে মাছ ধরতে গেছেন। তারা এদিন জন্য অপেক্ষায় ছিলেন, এখন অপেক্ষার অবসান হলো। নদীতে ইলিশ ধরা পড়া শুরু হয়েছে, আশা রাখছি সাগরেও ঝাঁকে ঝাঁকে মিলবে।
জেলে মৎস্য কর্মকর্তা এসএম আজহারুল ইসলাম বলেন, সাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ, এখন আর জেলেদের মাছ ধরতে যেতে কোনো বাধা নেই। নিষেধাজ্ঞা সময়ে জেলেরা মাছ না ধরায় নদী ও সাগরে মাছের উৎপাদন বাড়বে। পাশাপাশি বেশি ইলিশ ধরা পড়বে বলে আশা রাখছি।
সাগরে মাছের প্রজনন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত ১৯ মে মধ্য রাত থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ইলিশসহ সব প্রজাতির মাছ ধরায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা ছিল।

বাংলাদেশ সময়: ২১:০৬:২১   ৪০৭ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

অর্থনীতি’র আরও খবর


ভোলায় ওমানিয়ান টুপি সেলাই প্রশিক্ষনের সার্টিফিকেট বিতরন
ভোলায় প্রাণীসম্পদ প্রদর্শনী ও উদ্যোক্তাদের মেলা অনুষ্ঠিত
ভোলায় অনুষ্ঠিত হলো প্রাণী প্রদর্শনী মেলা
চরফ্যাশনে দিনব্যাপী প্রাণীসম্পদ প্রদর্শনী
বোরহানউদ্দিনে ফুটপাতে ঈদের জমজমাট কেনাকাটা
পথে পথে চাঁদাবাজি, ভোলার তরমুজচাষি ও ব্যবসায়ীরা বিপাকে
ভোলায় ব্যবসায়িক অগ্রগতি পর্যালোচনা সম্মেলনে রূপালী ব্যাংক পিএলসিকে সর্ব শীর্ষে নিয়ে যাবার অঙ্গীকার
ভেজাল মসলা তৈরি: ভোলায় ২ কারখানাকে জরিমানা
ভোলায় বেড়েছে আলু ও কাঁচা মরিচের দাম
ভোলায় নারী উদ্যোক্তাদের তিনদিনের ঈদমেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ঢল



আর্কাইভ