লকডাউন শাটডাউনের বিরতি চলছে: করোনার মাত্রাতিরিক্ত বিস্তার রোধে প্রয়োজন কঠিনভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা

প্রচ্ছদ » সম্পাদকীয় » লকডাউন শাটডাউনের বিরতি চলছে: করোনার মাত্রাতিরিক্ত বিস্তার রোধে প্রয়োজন কঠিনভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা
শুক্রবার, ১৬ জুলাই ২০২১



সরকার পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ৮ দিনের জন্য লকডাউন শাটডাউন তুলে নিয়েছে। ফলে দেশব্যাপী আবার গণপরিবহন সহ দোকানপাট সব কিছু আগের মতো চালু হয়েছে। অন্যদিকে করোনার ভয়াবহ বিস্তৃতি ও ব্যাপকতায় সারাদেশে কঠিন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় যাবত প্রতিদিনই সরকারি হিসাব মতে মৃত্যুর সংখ্যা দুই শ’র উপরে। এবং আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনিই ১২ হাজারের বেশি থাকে। কিন্তু বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা নিঃসন্দেহে আরো অনেক বেশি। কারণ গ্রামগঞ্জ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রতিদিনই অসংখ্য মৃত্যু সংবাদ শুনি। এদের মধ্যে বেশিরভাগেরই করোনা পরীক্ষা কিংবা হাসপাতালে নেয়ার সুযোগ অথবা সামর্থ্য হয় না। দিন দিন মৃত্যুসংখ্যা যেরকম  বেড়ে যাচ্ছে করোনা রোগীর সংখ্যা তার চেয়েও বহু গুণ বেশি বেড়ে যাচ্ছে। ভোলার মত নদী সাগর পরিবেষ্টিত জেলায় করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুতে যথেষ্ট কম ছিল। কিন্তু বর্তমানে তা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। ভোলা সদর হাসপাতালে একদিনে করণা পরীক্ষায় এখন ৪০ জনের বেশি পাওয়া যায় পজেটিভ রোগী। এই সংখ্যা আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ করোনা ক্লিষ্ট বিভিন্ন এলাকা থেকে ঈদ উপলক্ষে প্রচুর মানুষ বাড়ি ফিরে এসেছে। এর ফলশ্রুতি কি হবে সেটা একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামীন জানে।
অন্যদিকে গতকাল লকডাউন শাটডাউন উঠিয়ে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ পঙ্গপালের রাস্তায় নেমে এসেছে। মনে হয় দীর্ঘদিন জেলখানায় বন্দি ছিল সবাই যেন এখন রাস্তায় নেমে মুক্তির আনন্দ পাচ্ছে! সারাদেশেরও এই একই অবস্থা। ভোলা শহরেও তার কোন ব্যতিক্রম নেই। মানুষের চাপে বৃহ¯পতিবার ভোলার সদররোডসহ বিভিন্ন রাস্তায় ট্রাফিক জ্যামে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। ভোলার বাজারের আনাচে-কানাচে মানুষের প্রচন্ড ভিড় লক্ষ করা গেছে। সবচেয়ে যেটা আশঙ্কাজনক এবং উদ্বেগের বিষয় তা হচ্ছে এইসব মানুষের অধিকাংশেরই মুখে মাস্ক পরা নেই। যেটা খুবই চিন্তার বিষয়।
আমরা মনে করি শাটডাউন লকডাউন শিথিল হলেও করোনাকাল শেষ হয়ে যায়নি। বরং করোনার ভয়াবহ আক্রমণ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। এমন অবস্থায় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন প্রত্যেকটা মানুষের মধ্যে করণা স¤পর্কে সচেতনতা। আর সেই সচেতনতার বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে শত ভাগ মানুষের মাস্ক পড়ে বাহিরে চলাফেরা, যতটা সম্ভব সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করে চলা। যাতে মানুষের ভিড় না হয় সেটা সংশ্লিষ্ট সকল মহলের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা প্রয়োজন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মাধ্যমে বর্তমান ভয়াবহ করোনা র বিস্তার রোধের মাধ্যমে জনগণের স্বাস্থ্য ও জীবন রক্ষা হতে পারে।
এ ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কিছু ভূমিকা রয়েছে। যেহেতু আমাদের দেশে অসচেতন মানুষের সংখ্যাই বেশি। কাজেই আইন প্রয়োগের মাধ্যমেই তাদেরকে বিভিন্ন বিষয়ে মানিয়ে নিতে হয়। আমরা মনে করি মাস্ক পড়াসহ  স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহলসহ তাদের তৎপরতা স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে আরো বহু গুণ বাড়ানো প্রয়োজন। সর্বোপরি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে এই ভয়াবহ গজব থেকে মুক্তির জন্য আমাদের সকলের প্রচেষ্টা চালাতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮:৫৫:৫০   ৩২৭ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

সম্পাদকীয়’র আরও খবর


ডলার বাজারে অব্যাহত অস্থিরতা
ইন্টারনেট প্যাকেজ নিয়ে প্রতারণা
রাজনৈতিক সংলাপের তাগিদ : সমঝোতার বিকল্প নেই
বাজারে কারসাজি
নৌ দুর্ঘটনা রোধে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করুন
চিকিৎসক ধর্মঘট: রোগীদের জিম্মি করে কর্মসূচি অনৈতিক
নৌযানে অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে পদক্ষেপ নিন
ফিটনেসহীন নৌযান: ভোলা নৌপথে দ্রুত ব্যবস্থা নিন
চরফ্যাশনের ঢালচর বনের ঢাল কারা?
বাজারে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস : সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্তিত্ব দৃশ্যমান হচ্ছে না



আর্কাইভ