স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ খুলে দিন

প্রচ্ছদ » শিক্ষা » স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ খুলে দিন
বুধবার, ২৬ মে ২০২১



বাংলাদেশের সামগ্রিক চালচিত্র দেখলে মনে হয় অন্তত বাংলাদেশ ভূখ-ে করোনাভাইরাস শুধুমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বন্দি রয়েছে। অন্য কোথাও নেই। সবকিছুই প্রায় ঠিকঠাক মতো চলছে, শুধুমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রেখে কোটি কোটি শিক্ষার্থীদের জীবনকে অনিশ্চিত ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের কে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় যেতে দেয়া হচ্ছে না তারা করণায় আক্রান্ত হবে এই আশঙ্কায়। বাংলাদেশের কোন শিক্ষার্থী কি করোনাকালে ঘরের দরজা বন্ধ করে তার কক্ষের মধ্যে বসে রয়েছে? নিশ্চয়ই নয়, বরং তারা পড়াশুনা বাদ দিয়ে পড়াশোনার উল্টো যা আছে সব রকম দুষ্টামি বাদরামি খেলাধুলা ঘোরাফেরা আড্ডা ক¤িপউটার গেম থেকে শুরু করে ধ্বংস হওয়ার জন্য যা যা দরকার সব কিছু সমানে চালিয়ে যাচ্ছে। একটা মোবাইল নিয়ে পাঁচটা মাথা একটার উপরে একটা তাকিয়ে থাকছে। প্রত্যেকটার নিঃশ্বাস প্রত্যেকের নাকে যাচ্ছে, তাতে করোনার কোনো আশঙ্কা নেই!
করোনার আশংকা হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে! চমৎকার আমাদের দেশের নীতিনির্ধারকদের চিন্তা ও গবেষণা!!
এমনিতেই তো আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মীয় আদর্শের ছোঁয়া এবং নীতি-নৈতিকতার ছবক নেই বললেই চলে। তার উপরে এখন তাদেরকে স্বাধীনভাবে  ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ধ্বংস হওয়ার জন্য। আর প্রত্যেক শিক্ষার্থীরই এমনকি যারা প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করে তাদেরও হাতে থাকে সর্বনাশা একটি মোবাইল। যে মোবাইল তাকে অনৈতিকতার পথে চরিত্র বিধ্বংসী পথে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। এদ্দিন পড়াশুনার চাপে তারা যেসব আকাম-কুকামের সাথে জড়িত হতে পারত না, এখন তাদেরকে সুযোগ করে দেয়া হয়েছে যাচ্ছেতাই চলাফেরার জন্য। তাদের কাজ হচ্ছে খাওয়া দাওয়া, আড্ডা দেয়া, ঘুমানো এবং যত ধরনের ধ্বংস হওয়ার জন্য যা যা দরকার সকল রকম খেলাধুলা। এর পরিণতি চিন্তা করলে যেকোন সুস্থ নাগরিক শঙ্কিত না হয়ে পারছে না। এমনিতেই আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, ধর্মদ্রোহী, নীতি নৈতিকতা বিবর্জিত ও মানুষের সংখ্যাই বেশি বের হচ্ছে। আর এই ‘অটো পাস’ আর ‘করোনা স্বাধীনতা’র পরবর্তীতে এই দেশটির অবস্থা যে কি হবে, তা একবার চোখ বন্ধ করে ভেবে দেখুন।
সাম্প্রতিক বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেখা গেছে আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বে যে ১৩ টি দেশের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি সময় ধরে করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে দূরে রয়েছে, অর্থাৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বঞ্চিত মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যার ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী বাংলাদেশের। অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে শতকরা পাঁচ ভাগেরও কম করোনা সংক্রমনের আশংকা যেসব দেশে রয়েছে সেসব দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খুলে দেওয়ার জন্য নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু আমরা কি দেখছি? আমাদের সবকিছু খুলে দেয়া হয়েছে শুধুমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রেখে। এটাই যেন আমাদের দেশ পরিচালকদের ভূমিকা।
এই সবকিছু দেখে স্বাভাবিকভাবেই মনে হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দীর্ঘমেয়াদী বন্ধ রাখা, অটো পাসের মাধ্যমে গাধা গর্ধব সবাইকে পাস করিয়ে দেয়া, এটা কোন আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ নয়তো? কারণ একটি জাতিকে সমূলে ধ্বংস করতে হলে তার শিক্ষাব্যবস্থাকে প্রথমে ধ্বংস করতে হবে। ইতোমধ্যেই অনুপোযোগী সিলেবাস বাস্তবায়ন, নীতি নৈতিকতা এবং প্রয়োজনীয় কারিগরি শিক্ষা গুরুত্ব কম দিয়ে, কর্মমুখী সিলেবাস না দিয়ে জাতিকে অর্ধেকটা মেরে ফেলা হয়েছে। বাকিটুকু শেষ করার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এভাবে বছরের পর বছর ধরে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার বিষয়টির পেছনে কোনো আন্তর্জাতিক চক্রান্ত নেই তো? এসব প্রশ্নগুলো এখন মনের মধ্যে বারবার উকিঝুকি মারছে।
আমরা মনে করি, যথেষ্ট হয়েছে, এনাফ ইজ এনাফ! আর বিলম্ব নয়। এখনই- এই মুহূর্তেই সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হোক।
করোনা মহামারী এখন আমাদের জীবন প্রবাহের অংশ হিসেবে মনে করতে হবে। এর সাথে মানিয়ে গুছিয়ে আমাদের জীবন প্রবাহের সকল কিছু চালু রাখতে হবে। আর সেকারণেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কঠিনভাবে দূরত্বের  স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এজন্য সকল শিক্ষার্থীকে অবশ্যই ঠিকমত মাস্ক পড়ে প্রতিষ্ঠান ঢুকতে হবে, সাবান ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবেএবং তাদের সিটিং অ্যারেঞ্জমেন্ট এমনভাবে করতে হবে যাতে প্রতি বেঞ্চে দুজন সর্বোচ্চ তিন জনের বেশি না বসতে পারে। যেখানে শ্রেণিকক্ষের সমস্যা আছে সেখানে দুটি শিফটে ক্লাস নেয়া যেতে পারে। আরও যা যা প্রয়োজন রয়েছে এসব নির্দেশনা দিয়ে সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য প্রতিষ্ঠান শিক্ষকদেরকে নির্দেশ দিতে হবে। যারা তা পালনে ব্যর্থ হবে তাদের বিরুদ্ধে বেতন বন্ধ করে দেয়া সহ বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। আমাদের শিক্ষক মহোদয়গণ বহুদিন তো ঘরে বসে অলস সময় কাটিয়ে বেতন গ্রহণ করেছেন। এখন না হয় কিছুদিন একটু বেশি পরিশ্রম করুন, তথাপিও জাতিকে বাঁচান, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাঁচান। তাই আমরা সরকারের কাছে বিনীত নিবেদন জানাবো আর এদিক ওদিক চিন্তা না করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো প্রয়োজনীয় বিধি-নিষেধ মেনে খুলে দিন। আমাদের সেনাবাহিনী, বিজিবিসহ বিভিন্ন বাহিনীকে প্রয়োজনবোধে প্রত্যেকটি স্কুলের সামনে ডিউটি করার ব্যবস্থা করে দিন, যাতে বিধিবিধান বাস্তবায়নের বিষয়টি নিশ্চিত হয় এবং মনিটরিং ব্যবস্থা কার্যকর হয়। এসব বাহিনীকে জাতি বহু সুযোগ-সুবিধা দিয়ে লালন পালন করছে। যুদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা তো খুবই কম। তাই অন্তত করোনার যুদ্ধে তাদেরকে নিয়োজিত করুন। স্থানীয় প্রশাসন, জেলা প্রশাসন উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা সকলের সমন্বয়ে মনিটরিং সেল গঠন করে দিন। তথাপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে খুলে দিন।

বাংলাদেশ সময়: ০:৫৮:৪৯   ৩৭৮ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

শিক্ষা’র আরও খবর


ভোলায় ৬ দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর সরকারি চাকরিজীবী ফোরামের স্মারকলিপি
ভোলায় শিক্ষা বিষয়ক গ্লোবাল অ্যাকশন সপ্তাহ পালিত
ছয় শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদানে অনিশ্চয়তা
ভোলা ব্যাচ ‘৯৩ এর দোয়া মাহফিল ও ইফতার অনুষ্ঠিত
ভোলায় কিশোর গ্যাং এর হামলায় এইচএসসি পরীক্ষার্থী গুরুতর আহত
মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে নির্যাতন
গোপালগঞ্জের জেলা শিক্ষা অফিসার হলেন ভোলার আজাহারুল হক আজাদ
ভোলায় মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ
ভোলা সরকারি কলেজে নতুন উপাধ্যক্ষের যোগদান
বাঁধন স্কুলে এক প্রশ্নে ২০টিরও অধিক বানান ভুল



আর্কাইভ