পূর্ব ইলিশায় টাকা ছাড়া মিলছে না বয়স্ক- বিধবা ভাতা কার্ডের কোড

প্রচ্ছদ » অপরাধ » পূর্ব ইলিশায় টাকা ছাড়া মিলছে না বয়স্ক- বিধবা ভাতা কার্ডের কোড
মঙ্গলবার, ২৫ মে ২০২১



ইমতিয়াজুর রহমান ॥
ভোলা সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নে বয়স্ক, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্ত ও প্রতিবন্ধী ভাতা বইর কার্ড প্রদানে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অর্থের বিনিময়ে ভাতা বইর কার্ডে কোড (নাম্বার) প্রদানের অভিযোগ পাওয়া যায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতাধীন আউটসোর্সিং এ কর্মরত সদস্যদের বিরুদ্ধে। ভাতা বইর কার্ডপ্রতি ২ থেকে ৩ শত টাকা করে আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরজমিনে অভিযোগ অনুযায়ী রবিবার (২৩ মে) সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখা য়ায় ভোলা সদর উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতাধীন আউটসোর্সিং এ কর্মরত আবদুর রহিম ও মোঃ কামাল হোসেন ও মাসুম মাঝি নেতৃত্বে চলছে টাকার বিনিময়ে ভাতা কার্ড যাচাই-বাছাই ও নগদ মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট খোলার কাজ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমন একাধিক লোক বলেন, সদর উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের ফিল্ড সুপার ভাইজার শেখর দে (শেখর বাবু) নির্দেশে আবদুর রহিম, মোঃ কামাল হোসেন ও মাসুম মাঝি ভাতার কার্ডের নামে অবৈধ উপায়ে টাকা উত্তলন করছেন।

---

ইউনিয়ন পরিষদে বয়স্ক ভাতার কার্ড করতে আশা মালেক সরদার অভিযোগ করে বলেন, আমি তো জানিনা কার্ড করতে টাহা লাগে। আমি আমার ভোটার কার্ড স্যারেগো দারে দিছি। টাহা দেইনাই দেইখা আমার কার্ড হয় নাই।
মালেক সরদারের মতো বয়স্ক ও বিধবা ভাতার কার্ড করতে আশা ছালেহা বেগম ও জয়বুন নেছা বলেন, নগদের একাউন্ট খোলার লইগা আমাগো কাছ থেইকা একশো টাকা করে নিতেছে। না দিলে কার্ডে নাম্বার দেয়না।
কলেজ ছাত্র রাকিব বলেন, আমার দাদার বয়স্ক ভাতার কার্ড করতে আসছি। এখানে দায়িত্ব থাকা আবদুর রহিম যে টাকা দেয় তার ভোটার আইডি কার্ডে একটা সিরিয়াল নাম্বার দিয়ে দেয়। সিরিয়াল নাম্বার অনুযায়ী নগদে একাউন্ট খোলা হয় এবং কাগজ যাচাই বাছাই করা হয়। আমার টাকা দিতে দেরি হইছে বিদায় আমার কার্ডে কোড নাম্বার দেয়নি।
এরকম একাধিক লোকের অভিযোগ পাওয়া গেছে পূর্ব ইলিশা ইউনিয়ন পরিষদে ভাতা কার্ড যাচাই-বাছাই ও নগদ একাউন্ড খুলতে আশা লোকের কাছ থেকে।
অভিযুক্ত আবদুর রহিমের কাছে টাকা নেওয়ার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে অনেক মানুষ গরমে সবাই অতিষ্ট হয়ে পরেছে তাই আগে যাওয়ার জন্য কেউ কেউ আমাকে টাকা দেওয়ার চেষ্টা করছে আমি নেইনি।
আরেক অভিযুক্ত মোঃ কামালের কাছে জানতে চাইলে তিনি ক্যামেরার ভিডিও বন্ধ রাখতে বলে জানান, এই টাকা টা মূলত এমঅইসি কোর্ডের জন্য নেওয়া হয়েছে। এটা অফিসে লাগে তাই নেওয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত মাসুম মাঝির সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না। সমাজ সেবার স্যারেরা জানে।
এদিকে সদর উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের ফিল্ড সুপার ভাইজার শেখর দে (শেখর বাবু) সাথে ঘটনা স্থানেই এ বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কোন লোক টাকা নিয়ে কার্ড দিয়েছে এমন কোন অভিযোগ আমি এখনো পাইনি। তা ছাড়া কার্ড করতে কোন টাকার প্রয়োজন হয় না। আর যারা এই কাজ করছে তারা আমাদের লোক না তারা নগদের লোক। তাদের জন্য আমি কোন দায়ভার নিতে পারবো না। এর বাইরে আমি কিছুই বলতে পারবো না।
ভোলা জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, অবৈধভাবে টাকা নেওয়ার কোন সুযোগনেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার জিটুপির মাধ্যমে আমরা টাকা দিবো তারা মোবাইল একাউন্টে টাকা পাবে। সামাজিক দূরত্বের আওতায় সরকার টাকা দিচ্ছে এখানে অবৈধভাবে টাকা নেওয়ার উপায় নেই। আর যদি কেউ নিয়ে থাকে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০:২৯:৪৪   ১৭৫০ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

অপরাধ’র আরও খবর


ভাইয়ের প্রতারণার শিকার হয়ে প্রতিবন্ধী উজ্জলের মানবেতর জীবন
সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীরের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভোলায় সমাবেশ
ভোলায় পোস্ট অফিসে আইসক্রিমের ব্যবসা
লালমোহনে আবাসনের ঘর জবর দখলের অভিযোগ
ভোলায় যাত্রীবাহী লঞ্চ থেকে ৮৫ মণ মাছ জব্দ
ঘুষ ছাড়া কাজ হয়না ভোলার বিএমইটি অফিসে॥ প্রতিদিন ঘুষের আয় প্রায় অর্ধলক্ষ টাকা!!
ভোলায় ফিল্মি স্টাইলা অপহরণ ॥ কতিপর উদ্ধার
ফুঁক দিয়েই সব সমস্যার সমাধান করেন ফরিদ!
প্রেমিকের সঙ্গে ‘বিয়ে’ রফাদফায় এসে কিশোর গ্যাংয়ের হাতে ধরা তরুণী, অতঃপর…
ভোলায় যৌতুকের মামলা দেওয়ায় স্ত্রীকে তালাক দিলো স্বামী ॥ শিশু সন্তান নিয়ে দুশ্চিতায় হাফছা



আর্কাইভ