খামারিদের উৎসাহ দিন: আমদানি নয়, মাংস রপ্তানির চিন্তা করতে হবে

প্রচ্ছদ » সম্পাদকীয় » খামারিদের উৎসাহ দিন: আমদানি নয়, মাংস রপ্তানির চিন্তা করতে হবে
বুধবার, ২৮ অক্টোবর ২০২০



বাংলাদেশে পশুর খামার এখন একটি লাভজনক ব্যবসা। কোরবানির শতভাগ চাহিদা পূরণ হচ্ছে নিজেদের উৎপাদিত পশু দিয়েই। অথচ কয়েক বছর আগেও ঈদুল আজহার সময় বাংলাদেশে কোরবানির পশুর একটা বড় অংশ আসত ভারত থেকে। বাংলাদেশে গরু চোরাচালান বন্ধ করতে ওই দেশের কর্তৃপক্ষ বেশ কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করার পর বাংলাদেশের ভোক্তারা শুরুতে খানিকটা সমস্যায় পড়লেও নতুন অনেক উদ্যোক্তা শুরু করেন গরুর খামার। এখন বাংলাদেশে দুধ ও মাংস উৎপাদনকারী খামারির সংখ্যা প্রায় আট লাখ। গত আট বছরে খামারির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। শিক্ষিত তরুণরা আসছেন এই ব্যবসায়। ঝুঁকছেন গরুর খামার করার দিকে। দেশের অভ্যন্তরের বাজারেও স্থানীয়ভাবে লালন-পালন করা পশুর বিপুল চাহিদা। এই পেশার সঙ্গে বর্তমানে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত প্রায় দুই কোটি মানুষ।
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে ২০১৯-২০ অর্থবছরে গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়ার মোট উৎপাদন হয়েছে ৫৫৯.২৬ লাখ। গত বছর দেশে মাংসের চাহিদা ধরা হয়েছিল ৭৪.৩৭ লাখ মেট্রিক টন। বিপরীতে উৎপাদন হয়েছে ৭৬.৭৪ লাখ মেট্রিক টন। মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে বাংলাদেশ এবং দুধ উৎপাদন বেড়েছে প্রায় তিন গুণ। রপ্তানি বাজারেও দেশের মাংসের বেশ কদর। তার পরও দেশে বৈধ ও অবৈধ পথে আসছে পশুর মাংস। এর মধ্যে বেশির ভাগই মহিষের। গত বছর প্রতি মাসে গড়ে পাঁচ লাখ ১৬ হাজার কেজি মাংস আমদানি হয়েছে দেশে। প্রতিবেশী চীন, মিয়ানমার ও নেপাল থেকে দেশে এসব মাংস এলেও প্রধান উৎস কিন্তু ভারত। আমদানি করা নিম্নমানের মহিষের মাংসকে গরুর মাংস হিসেবে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে দেশের বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁয়। অভিযোগ রয়েছে, চোরাপথে আনা রোগাক্রান্ত গরুর পচা মাংসও এখানে বিক্রি হচ্ছে।
এমতাবস্থায় হিমায়িত মাংস আমদানি বন্ধ ও টিসিবির মাধ্যমে গোখাদ্য আমদানি করে স্বল্পমূল্যে খামারিদের মধ্যে বিতরণ করাসহ দেশের দুগ্ধ ও মাংস শিল্পের উন্নয়নে ১০ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন। তাদের এই দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক। বাংলাদেশেই এখন মানসম্মত গরু উৎপাদন করা হচ্ছে। তাহলে বিদেশ থেকে হিমায়িত মাংস আমদানি করা কেন? এতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি খামারিরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। চাহিদার চেয়ে দেশে মাংস যখন উদ্বৃত্ত, তখন আমদানি বন্ধ করে রপ্তানির চিন্তা করা দরকার বলে আমরা মনে করি।

বাংলাদেশ সময়: ১২:৫৭:৫৩   ৩৩৭ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

সম্পাদকীয়’র আরও খবর


ডলার বাজারে অব্যাহত অস্থিরতা
ইন্টারনেট প্যাকেজ নিয়ে প্রতারণা
রাজনৈতিক সংলাপের তাগিদ : সমঝোতার বিকল্প নেই
বাজারে কারসাজি
নৌ দুর্ঘটনা রোধে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করুন
চিকিৎসক ধর্মঘট: রোগীদের জিম্মি করে কর্মসূচি অনৈতিক
নৌযানে অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে পদক্ষেপ নিন
ফিটনেসহীন নৌযান: ভোলা নৌপথে দ্রুত ব্যবস্থা নিন
চরফ্যাশনের ঢালচর বনের ঢাল কারা?
বাজারে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস : সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্তিত্ব দৃশ্যমান হচ্ছে না



আর্কাইভ